ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

আগুন আসলে কী?
অনলাইন ডেস্ক
প্রতীকী ছবি

আগুন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। বিজ্ঞান নিয়ে যারা একটু খোঁজ খবর-রাখেন তাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে আগুন আসলে কী? পদার্থ নাকি শক্তি? মৌল নাকি যৌগ? 

মানুষ প্রথম নিজেরাই আগুন আবিষ্কার করে। পরবর্তীতে আবার আগুনকে দেবতা ভাবতেও শুরু করে। আজকের এই আধুনিক সমাজ গঠনে আগুনের ভূমিকা অপরিসীম। প্রাচীন গ্রিকদের ধারণা ছিল, আগুন চারটি মৌলিক উপাদানের একটি, যা দিয়ে জগতের সব কিছু গঠিত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, আগুন মৌলিক পদার্থ তো নয়ই বরং আগুনের বিজ্ঞান যথেষ্ট জটিল। আগুনের শিখায় শত শত জটিল বিক্রিয়া ঘটতে থাকে এবং জটিল যৌগ উৎপন্ন ও পরিবর্তিত হতে থাকে।

আগুন আসলে কী, বিজ্ঞান কী বলে?

কোনো জারকের সাথে কোনো কিছুর বিক্রিয়া হওয়াকে Combustion বা, দহন বলা হয়। আগুন কোনো পদার্থ নয়। আগুন হলো ‘দহন’ (Combustion) বিক্রিয়ার দৃশ্যমান রূপ। যখন কোনো জ্বালানি অক্সিজেনের উপস্থিতিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ তাপ পায় তখন রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে এবং শক্তি উৎপন্ন হয়। এই প্রক্রিয়াটি হলো Complete Combustion. আবার আমরা এটাও জানি যে, পরমাণুতে ইলেকট্রনগুলো নির্দিষ্ট দূরত্বের ও নির্দিষ্ট শক্তির কিছু কক্ষপথে অবস্থান করে।

দহন হয় শুধুমাত্র গ্যাসের সাথে গ্যাসের বিক্রিয়ায়। কিন্তু মাত্রই বলা হলো যে, দহন মানে হচ্ছে যখন অক্সিজেনের সাথে জ্বালানির বিক্রিয়া। আর জ্বালানি: কঠিন, তরল, বায়বীয় সবই হতে পারে। তাহলে?

আসলে দহনের ক্ষেত্রে কঠিন বা তরল জ্বালানিকে এত তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হয় যে পদার্থটা তার পৃষ্ঠ থেকে গ্যাস নিঃসরণ করতে শুরু করে।

তখন গ্যাসের অণুগুলো ভেঙে যায় আর ভাঙা অংশের একটা অংশ বাতাসের অক্সিজেনের সাথে যুক্ত হয়ে নতুন কোনো যৌগ তৈরি করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পানি আর কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়।

যেমন ধরুন, কাগজে আগুন ধরে কীভাবে? কাগজের কাছে আগুন আনলে, আগুনের প্রভাবে কাগজের অণুগুলো ছোটাছুটি শুরু করে আর পরস্পর থেকে দূরে সরে গিয়ে গ্যাসে পরিণত হয়। তখন গ্যাসের অণু অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া শুরু করে আর কাগজের দহন শুরু হয়।

আগুন দেখা যায় কেন?

দহনের সময় গ্যাসের অণু ভেঙে যায়। এই অণুগুলো যখন ভাঙে তখন তাপ শক্তি বিকিরণ বা শোষণ হয়। তাপশক্তি সীমিত পরিসরে এক ধরনের গতিশক্তি। রিচার্ড ফাইনম্যানের মতে, তাপ হচ্ছে ‘পরমাণুর ঝাঁকি’। তো এই ঝাঁকাঝাঁকির ফলে তৈরি হয় তড়িৎচৌম্বকীয় তরঙ্গ অর্থাৎ আলো। আর সে কারণেই আমরা আগুন দেখতে পাই। সূত্র: সায়েন্স ল্যাব, হাউ স্টাফ ওয়ার্কস

বিডি প্রতিদিন/আজাদ



এই পাতার আরো খবর