ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বিএনপির কাউন্সিলে কমিটি হলে অনৈক্যের সৃষ্টি হতো
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে কমিটি ঘোষণা হলে দলে ‘অনৈক্য’ সৃষ্টির আশঙ্কা ছিল বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, ‘তারুণ্যের ভালো-মন্দ দুটো দিকই আছে। কাউন্সিলে কমিটি কিংবা কারও নাম ঘোষণা করা হলে বিরুদ্ধপক্ষ তরুণদের একাংশ এ নিয়ে সেখানে ক্ষোভ-বিক্ষোভ করতে পারত। সেখানে নতুন করে অনৈক্যের সৃষ্টি হতো। কাউন্সিল বাধাগ্রস্ত হতো। তা ছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দিনব্যাপী অনুষ্ঠান করে ছিলেন ক্লান্ত। তার বিশ্রামের প্রয়োজন ছিল। তাই হয়তো সেদিন কমিটি ঘোষণা হয়নি। এটা অশুভ নয়। আমি বলব শুভ।’ গত সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন বিশিষ্ট এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ এই অধ্যাপক বলেন, ‘বিএনপির নির্বাহী কমিটি ঘোষণায় একটু দেরি হচ্ছে। এ নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দেখে, শুনে, বুঝে যোগ্যদের কমিটিতে জায়গা করে দিতে হবে। হুটহাট করে কমিটি দিলে তাতে যোগ্যরা বাদ পড়ে যেতে পারেন। বিএনপি চেয়ারপারসন এ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কয়েক দিন বাসায়ও এ নিয়ে কাজ করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘আশা করছি, এক সপ্তাহের মধ্যেই মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটি ঘোষণা হবে। মহাসচিব নিয়ে ভাবার কোনো বিষয় নেই। মির্জা ফখরুলই দলের মহাসচিব হবেন। এটা নিয়ে কারও দ্বিমত নেই। তার কোনো বিকল্পও নেই। তবে স্থায়ী কমিটিসহ অন্যান্য পদে যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ আছে। অপেক্ষাকৃত অনেক তরুণ নেতাও আছেন, যারা স্থায়ী কমিটিতে আসতে পারেন। তা ছাড়া অতীতে দলে কাদের কী ভূমিকা, রাজনৈতিকভাবে কে কতটুক, সৎ-ক্লিন ইমেজের, তা খতিয়ে দেখছেন বেগম খালেদা জিয়া।’

অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমার বিশ্বাস বিএনপির সব কমিটিতেই তারুণ্যের ছোঁয়া থাকবে। স্থায়ী কমিটিতেও অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা ঠাঁই পাবেন বলে আমি মনে করি। ক্লিন ইমেজের, সৎ ও যোগ্যরা সব জায়গায় অধিষ্ঠিত হবেন। তবে তার মানে এই নয়, বয়োবৃদ্ধদের অসম্মান করা হবে। তাদের ত্যাগের বিনিময়েই আজ বিএনপি এ অবস্থানে। তাই বয়স্কদের যোগ্য মর্যাদা দিয়ে বিদায় করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অসুস্থ ও বার্ধক্যের কারণে কাউকে স্থায়ী কমিটি থেকে নিয়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদেও জায়গা করে দিলে অসুবিধার কিছু নেই। কিন্তু কাউকে বাদ দিয়ে নয়, সবাইকে নিয়েই কমিটি করা উচিত বলে আমি মনে করি।’ ভিশন ২০৩০-এর প্রশংসা করে এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘খালেদা জিয়া কাউন্সিলে যে ভিশন তুলে ধরেছেন, তা বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক রূপই পরিবর্তন হয়ে যাবে। গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে। প্রতিহিংসার রাজনীতি দূর হবে। রাজনীতিতে জবাবদিহিতা থাকবে। মনে রাখতে হবে, প্রতিপক্ষ শত্রু নয়। এটাকে রাজনীতি বলে না। ভারত, পাকিস্তানের মতো নয়, বাংলাদেশ রক্তের বিনিময়ে রাজনীতি করার সুযোগ ফিরে পেয়েছে। এজন্য আর ঝগড়াঝাঁটি নয়, সৌহার্দ্যের রাজনীতি করতে হবে। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা বাড়াতে হবে। কোনো অন্যায় করা যাবে না, প্রশ্রয়ও দেওয়া যাবে না।’

 

বিডি-প্রতিদিন/ ৩০ মার্চ, ২০১৬/ রশিদা



এই পাতার আরো খবর