ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কলসিন্দুর: যেভাবে এক ফুটবল রাজপুরীর উত্থান
নেত্রকোনা প্রতিনিধি

দারিদ্র্য আর কুসংস্কার জয় করে কল সিন্দুরের এখন মাথা ঊঁচু করে দাঁড়ানো এক ফুটবল রাজপুরীর নাম। কোনো বাধা প্রতিবন্ধকতাই এই পুরির রাজকন্যাদের দমি রাখতে পারেনি। পায়ের জাদুতেই তারা সব বঞ্চনা পেছনে ফেলে করেছে হিমালয় জয়, প্রতিদানে গর্বিত হয়েছে দেশ, ওরা ভাসছে সংবর্ধনায়।

নেত্রকোনা জেলার পার্শ্ববর্তী সীমান্ত উপজেলা ধৌবাউড়া। পাশের ময়মনসিংহ জেলার একটি আদিবাসী অধ্যুষিত পাহাড়ী উপজেলা। সেখানকার একটি ইউনিয়ন ও গ্রামের নামই কলসিন্দুর।

এ গ্রামের ছোট ছোট কন্যাদের উত্থান ২০১১ সালে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট দিয়ে। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ওরা লিখেছে একের পর এক অজেয় উপাখ্যান। ওদের পায়ে বিশ্ব দরবারে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ওরা এখন কোটি কন্যার অনুপ্রেরণা, সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেতনার বাতিঘর। 

ওদের কারণেই কলসিন্দুর এক গর্বিত গ্রাম। সাফ জয়ের পর থেকেই গ্রাম জুড়ে চলছে আনন্দের জোয়ার। সারাদেশের মানুষের মুখে মুখে সেই পাহাড়ি গ্রাম কলসিন্দুর। দূর-দূরান্ত থেকে ওই গ্রাম দেখতে ভিড় করছেন অনেক মানুষ। 

কলসিন্দুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আট কন্যা সানজিদা, মারিয়া, শিউলি আজিম, মারজিয়া আক্তার, শামসুন্নাহার, তহুরা, সাজেদা ও শামসুন্নাহার জুনিয়র। তাদের সবাই কলসিন্দুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের এখন নেই তেমন অভাব। সবাই এখন পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার এক অনন্য মাধ্যম।   গত ১৯ সেপ্টেম্বরের পর থেকে এই আট তারকার জন্য পুরো দেশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগ যেনো ফুলে ফুলে সজ্জিত। গত দুদিন ধরে ময়মনসিংহ বাসীর সংবর্ধনায় সিক্ত হচ্ছে কলসিন্দুরের মেয়েরা।   শুক্রবার বাড়ি গেছে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে। সকাল থেকে পথে পথে গণসংবধর্নায় মাথা উঁচু করে বিজয়ের হাসিতে নিজ গ্রামের পথে। 

সকাল ছোঁয়া এই সংবর্ধনা পৌঁছে যাবে সন্ধ্যায়। রাতের আঁধার নামবে কলসিন্দুরের বুকে, তার মাঝেই নক্ষত্রের ঠিকরে পড়া আলোয় হবে জোনাকীদের নতুন জীবন অবগাহন শুরু। মারিয়া, সানজিদাদের নতুন ভোর নেবে কাছে ডেকে। সাফের পর আরও কোনো বড় আসরে কাটিয়ে সব ডর ভয়, জেগে উঠবেই বাংলার মেয়েরা ছিনিয়ে আনবে শিরোপা, ছিনিয়ে আনবে বাংলার বিজয়।

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর