ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সাকিবের ‘উড়ন্ত চুমু’তে এতো ক্লান্তি কেনো?
অনলাইন প্রতিবেদক

এই ছবিটাও যেমন অভিভাবকহীন, তেমন পাকিস্তানের বিপক্ষের ত্রিদেশীয় সিরিজের ম্যাচেও বাংলাদেশ ছিল অভিভাবকবিহীন। মানে ছবিতে থাকতে না পারা নিয়মিত টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান খেলার মাঠেও ছিলেন না আজ। অথচ এই মাসেই টাইগারদের সামনে বিশ্বকাপের মিশন। অগোছালো দলটাকে গুছিয়ে নেওয়ার এটাই শেষ সুযোগও বলা যায়।

কারণ, বিশ্বকাপের দুই শক্ত প্রতিপক্ষ পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে পারাটা সাকিবের দলের জন্য ভালো মওকা। বলতে গেলে সেই মওকা লুফে নেওয়ার বেলায় গোড়াতেই গলদ করেছেন সাকিব। প্রথমত, তিনি সিপিএল খেলে যথাসময়ে নিউজিল্যান্ডে পৌঁছাতে পারেননি, থাকতে পারেননি দলের সাথে অনুশীলনে। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও খেলতে পারেননি অথবা ইচ্ছা করেই খেলেননি সাকিব। অনেকেই বলতে পারেন, ভ্রমণক্লান্তি কিংবা নতুনদের বাজিয়ে দেখতেই সাকিব পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামেননি।

তবে সোজা কথায় বলাই ভালো যে, যুদ্ধের আগেই সেনাপতির এমন ক্লান্ত হতে নেই। তাতে যোদ্ধা দলের বিপদ বাড়ে। সেনাপতি যদি ময়দানে না থাকেন, তাতে কমে দলের মনোবল। হারার আগেই হেরে বসার শঙ্কা বাড়ে। সাথে শেষ মুহূর্তে আর বাজিয়ে দেখারও সুযোগ তেমন একটা নেই। এখন দল চূড়ান্ত করাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, যদি কোনো ক্রিকেটারকে এখনও জায়গা নিয়ে লড়াই করতে হয়, তবে তিনি বিশ্বকাপে ফোকাস করবেন কীভাবে?

এখানেও কেউ পাল্টা যুক্তি দিতে পারেন, সিপিএলের ধকল সাথে লম্বা জার্নি সাকিব তো ক্লান্ত হতেই পারেন। তাছাড়া তিনি তো মাঠের বাইরে বসে খেলাটা দেখেছেন, পরখ করে নিয়েছেন কে করেছে কেমন।

তবে সেই যুক্তিও এখন কার্যকর নয়। কারণ রণাঙ্গণে নেমে যুদ্ধের স্বাদ নেওয়া আর টিভিতে কিংবা ময়দানের বসে যুদ্ধ উপভোগ কিংবা বিশ্লেষণ করা এক বিষয় নয়। সাকিব অভিজ্ঞ ক্যাম্পেইনার মানতে দ্বিধা নেই কারোই। তারপরও অভিজ্ঞতাতেও তো শাণ দিতে হয়। ধারালো তলোয়ার কিংবা ছুরিতেও তো মরীচিকা পড়ে। আবার কেউ বলতেই পারেন, সাকিব তো সিপিএলেও খেলার মধ্যেই আছেন! আসলে ফাঞ্চাইজি লিগ ও জাতীয় দলের খেলায় এখনও ফারাক অনেক। সেকারণেই তো আইপিএলে কিছু করতে না পেরে সাইড বেঞ্চে বসে থাকতে বাধ্য হওয়া ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাটে ভর করেই তো অস্ট্রেলিয়া ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতে। বিপরীতে আইপিএলের বাঘাবাঘা পারফর্মার বিশ্বকাপে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে।

আর সাকিব ভ্রমণ ক্লান্ত, এই যুক্তিটাও এখন একটু দৃষ্টিকটুই বটে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের চেহারায় ক্লান্তির ভাব, বয়সের ভারে তিনি আড়ষ্ট! এমন নানা যুক্তিতেই তো অভিজ্ঞ ও দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন সাকিবের কাঁধে দায়িত্ব দিয়েছিল বিসিবি। সাকিবও সামনে বড় চ্যালেঞ্জ জেনেই তো দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বিসিবির সভাকক্ষ থেকে বেড়িয়ে দায়িত্ব পাওয়ার উন্মাদনায় ছুড়েছিলেন উড়ন্ত চুমু। সেই চুমুতেই তো স্বপ্ন দেখেছিল বাংলার ক্রিকেট ভক্তরা। সেই উদ্দীপ্ত চুমুর কী এতো সহজে ঘুমিয়ে গেলে চলে? ক্রিকেটপাড়ায় তো সাকিবের বুদ্ধিদীপ্ত কাজের বেশ তারিফও আছে। তাই সাকিবের তো অনেক সঙ্কটের কথা জানার কথা অনেক আগে থেকেই, সেই সঙ্কট কিংবা যাতে না আটকায় পথ ভিসা জটিলতায়; সে পদক্ষেপও তো নেওয়ার কথা আগে ভাগে। কিন্তু সাকিব...

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর