ঢাকা, সোমবার, ২২ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

নাটকীয় জয় অস্ট্রেলিয়ার, সুপার এইটে ইংল্যান্ড
অনলাইন ডেস্ক
সংগৃহীত ছবি

ব্র্যাড হুইলের লেংথ ডেলিভারিউড়িয়ে মারলেন টিম ডেভিড। টাইমিং হলো না ঠিকঠাক, বল উঠে গেল আকাশে। কিন্তুডিপ মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ নিতে পারলেন না ক্রিস সোল। ম্যাচ জমিয়ে তোলার শেষ সুযোগটিও হারাল স্কটল্যান্ড। পরের বলেই আবার সজোরে হাঁকালেন ডেভিড। এবার ব্যাট-বলের সংযোগটা হলো দুর্দান্ত। বল উড়ে গেল গ্যালারিতে। নাটকীয় এক জয় পেল অস্ট্রেলিয়া আর সুপার এইটে উঠে গেল ইংল্যান্ড।

সেন্ট লুসিয়ায় স্কটল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারায় অস্ট্রেলিয়া। ১৮১ রানের লক্ষ্য ২ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলে তারা। লড়াই যদিও অস্ট্রেলিয়া ও স্কটল্যান্ডের, কিন্তু এই ম্যাচে ছিল ইংল্যান্ডও। শেষ পর্যন্ত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের জয় বড় স্বস্তি হয়ে এসেছে ইংলিশদের জন্য। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ নিয়ে টানা সাত ম্যাচ জিতল ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়নরা। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এটি টানা জয়ের রেকর্ড। ভারত ও ইংল্যান্ডের টানা সাত জয়ের কীর্তি স্পর্শ করল তারা।

চার ম্যাচের সবকটি জিতে 'বি' গ্রুপের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েই সুপার এইট খেলতে নামবে অস্ট্রেলিয়া। সমান ম্যাচে স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের ঝুলিতে সমান ৫ পয়েন্ট। তবে নেট রান রেটে স্কটিশদের চেয়ে (+১.২৫৫) এগিয়ে থাকায় পরের ধাপে পৌছে গেল ইংলিশরা (+৩.৬১১)।

যদিও একটা পর্যায়ে দারুণ এক জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল স্কটল্যান্ড। ব্যাটিংয়ে ১৮০ রান তোলার পর বোলিংয়ের শুরুতেও অস্ট্রেলিয়াকে প্রবল চাপে ফেলে তারা। কিন্তু সেই চাপ তারা ধরে রাখতে পারেনি।ট্রাভিস হেড ও মার্কাস স্টয়নিসের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় অস্ট্রেলিয়া।

চাপের মুখে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৯ বলে ৫৯ রান করেন স্টয়নিস। ৯ চার ও ২ ছক্কার ইনিংসে চলতি আসরে দ্বিতীয়বার তিনি জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। বাঁহাতি ওপেনার হেড খেলেন ৪৯ বলে ৬৮ রানের ইনিংস। ৫ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা মারেন তিনি।

রান তাড়ায় পাওয়ার প্লেতে ড্রেসিং রুমে ফেরেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। প্রথম ৬ ওভারে মোটে ৩৬ রান করতে অস্ট্রেলিয়া। তাদের বিপদ বাড়তে পারত আরও। পঞ্চম ওভারে ক্রিস সোলের বলে ১৫ রানে থাকা হেডের ক্যাচ ছেড়ে দেন মাইকেল জোন্স।

জীবন পেয়ে আর পেছনে তাকাননি হেড। কিছুক্ষণ পর মার্ক ওয়াটের দারুণ ডেলিভারিতে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বোল্ড হয়ে গেলে স্টয়নিসকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন বাঁহাতি ওপেনার। শুরুতে কিছুটা সময় নেন দুজনই। একপর্যায়ে সমীকরণ দাঁড়ায় ৩৯ বলে ৮৭ রান।

মাইকেল লিস্কের বলে রিভার্স সুইপ করে ছক্কা মারেন স্টয়নিস। পরের দুই বলে মারেন আরও একটি করে ছক্কা-চার। এরপর ঝড় তোলেন হেড। সোলের বলে জোড়া বাউন্ডারির পর সাফিয়ান শারিফকে মারেন টানা ৩টি ছক্কা।

চতুর্থ ছক্কার খোঁজে ক্যাচ আউট হন হেড। তার বিদায়ে ভাঙে ৪৪ বলে ৮০ রানের জুটি। এরপর স্টয়নিসও বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। পরে ম্যাথু ওয়েডকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন ডেভিড। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৪ বলে ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন ডেভিড।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা স্কটিশদের উড়ন্ত সূচনা এনে দেন জর্জ মানজি ও ব্র্যান্ডন ম্যাকমুলেন। প্রথম ওভারেই জোন্সের বিদায়ের পর তারা দুজন মিলে ৪৮ বলে গড়ে তোলেন ৮৯ রানের জুটি। ২ চার ও ৩ ছক্কায় ২৩ বলে ৩৫ রান করেন মানজি। ১১ ওভারে স্কটল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ২ উইকেটে ১১১ রান। পরের ওভারে ২ চার ও ৬ ছক্কায় ৩৪ বলে ৬০ রান করা ম্যাকমুলেনকে ফেরান অ্যাডাম জ্যাম্পা।

এরপর কাঙ্ক্ষিত গতি পায়নি স্কটল্যান্ডের ইনিংস। রিচি বেরিংটনের ৩১ বলে ৪২ রানের অপরাজিত ইনিংসে ১৮০ রান পর্যন্ত পৌছায় স্কটিশরা। পরে একটা সময় পর্যন্ত লড়াইয়ে থাকলেও অস্ট্রেলিয়াকে আটকে রাখতে পারেনি তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

স্কটল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৮০/৫ (মানজি ৩৫, জোন্স ২, ম্যাকমুলেন ৬০, বেরিংটন ৪২, ক্রস ১৮, লিস্ক ৫, গ্রিভস ৯*; অ্যাগার ৪-০-৩৯-১, স্টার্ক ৪-০-৩১-০, এলিস ৪-০-৩৪-১, ম্যাক্সওয়েল ৪-০-৪৪-২, জ্যাম্পা ৪-০-৩০-১)

অস্ট্রেলিয়া: ১৯.৪ ওভারে ১৮৬/৫ (হেড ৬৮, ওয়ার্নার ১, মার্শ ৮, ম্যাক্সওয়েল ১১, স্টয়নিস ৫৯, ডেভিড ২৪*, ওয়েড ৪*; লিস্ক ৪-০-৩৯-০, হুইল ৩.৪-১-৩২-১, ওয়াট ৪-০-৩৪-২, সোল ৩-০-৩৩-০, শারিফ ৪-০-৪২-২, গ্রিভস ১-০-৪-০)

ফল: অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মার্কাস স্টয়নিস

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর