ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

অলরাউন্ডারদের দিকে তাকিয়ে ভারত-পাকিস্তান
অনলাইন ডেস্ক

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্ব আজ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছে। আগামীকাল রবিবার মুখোমুখি হবে বিশ্ব ক্রিকেটের পরাশক্তি ভারত ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান।

বলা হচ্ছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় ম্যাচ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার আগামীকালের ম্যাচটি।

মেলবোর্নে বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটায় মুখোমুখি হবে দক্ষিণ এশিয়ার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ক্রিকেট দল, যারা মাঠে নামলে মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরের বিষয়ই বেশি উঠে আসে। এটি হতে যাচ্ছে একটি বিশেষ ক্রিকেট ম্যাচ, যা নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই ছিল উন্মাদনা।

মাসখানেক আগে যখন এই ম্যাচের টিকিট ছাড়া হয়েছিল, অনলাইনে ১০ মিনিটের মধ্যে সব টিকিট শেষ হয়ে যায় বলে জানান বিবিসি হিন্দি থেকে বিশ্বকাপ কভার করতেমেলবোর্নে থাকা নিতিন শ্রীভাস্তাভা।

এই বছর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ফর্মুলা ওয়ান গ্রাঁ প্রি এবং রাগবির গ্র্যান্ড ফাইনালও আছে। বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয় এই দুটি স্পোর্টও এবারে ক্রিকেটের সাথে প্রতিযোগিতা করে পারছে না।

মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে যারা কাজ করেন তারাও অবাক হয়ে গিয়েছিলেন যে তড়িৎগতিতে, 'এতো টিকিট কীভাবে বিক্রি হলো'। মেলবোর্নের এই স্টেডিয়ামটিতে ৯০ হাজার মানুষ বসে খেলা দেখতে পারেন।

এই ম্যাচটি দেখতে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা পাকিস্তান ও ভারতের ক্রিকেট সমর্থকরা তো আসবেনই, এছাড়া বলিউড তারকা, নামকরা সব ব্যবসায়ীরা এবং সাবেক ক্রিকেটাররা মেলবোর্নের গ্যালারিতে বসবেন এই ম্যাচ দেখতে। আসলে গোটা মেলবোর্নে নাকি এখন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আমেজ, অনেকে বলছেন মনেই হচ্ছে না এটা অস্ট্রেলিয়া। দেয়ালে দেয়ালে ক্রিকেটারদের ছবিও আঁকা হয়েছে।

দুই দলই অলরাউন্ডারদের দিকে তাকিয়ে

এশিয়া কাপে ভারত ও পাকিস্তান এই বছর দুই ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে, এখন পর্যন্ত ১-১ সমতায় আছে। প্রথম ম্যাচে ব্যাটে বলে পারফর্ম করে জিতিয়েছিলেন ভারতের হার্দিক পান্ডিয়া। দ্বিতীয় ম্যাচে জিতিয়েছেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ নাওয়াজ। বলা যায় এই দুজন ক্রিকেটার এখন এই দুই দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন।

মেলবোর্নের বড় মাঠে বড় ছক্কা হাঁকাতে পারদর্শী হার্দিক পান্ডিয়া। পাকিস্তানের আরেক অলরাউন্ডার শাদাব খানও পাকিস্তানের জন্য বড় সম্পদ।

শাদাবের রিস্ট স্পিন মেলবোর্নে ভালো কাজে দিতে পারে। বড় মাঠে ফাস্ট বোলারদের বল মারার তুলনায় স্পিনারদের বল পেটানো কঠিন হয়ে যায়। অনেক সময়ই ব্যাটসম্যানরা ছয় পেটাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইন অতিক্রম করতে পারেন না এবং জায়গামতো ফিল্ডার থাকলে সেটা ক্যাচে পরিণত হয়।

দুই দলেরই টপ অর্ডার নিয়ে চিন্তা

ভারতের টপ অর্ডারে খেলবেন রোহিত-রাহুল এবং তিন নম্বরে বিরাট কোহলি। নিজেদের দিনে যেকোনও ম্যাচের হালচাল বদলে দিতে সক্ষম এই তিন ব্যাটসম্যান।

গত এক বছরে ভারতের টপ অর্ডারের স্ট্রাইক রেট। রোহিত শর্মা-১৪৭ স্ট্রাইক, লোকেশ রাহুল-১৩৮। বিরাট কোহলি-১৩৯। এই তিনজন ভারতের ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু এনে দেয়ার চেষ্টায় থাকবেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এসব পরিসংখ্যান কাগুজে মনে হয়, যেমন ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছিল।

২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে হারের পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ভারত। এরপর ২০২২ সালের এশিয়া কাপে ভারতের ক্রিকেট শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের কাছে হেরে ফাইনালেই উঠতে পারেনি।

পাকিস্তানের ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদ মাজহার আরশাদ প্রশ্ন তুলেছেন, পাকিস্তান ম্যাচ জিতছে ঠিক কিন্তু টপ অর্ডার যেভাবে ব্যাট করছে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য এটা যথেষ্ট কি না সেটা ভেবে দেখা দরকার।

মাজহার আরশাদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তান প্রথম চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২৭৯ বলে কোনও ছক্কা মারেনি।

এই সময় তাদের স্ট্রাইক রেট ছিল ১১৬। শুরুর দিকে আরও রান প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। কখনো কখনো এই টপ অর্ডার যদি ফ্লপ করে, তবে দুশ্চিন্তার জায়গাটা মিডল অর্ডারও। কারণ পাকিস্তানের মিডল অর্ডারে যেসব ব্যাটসম্যানের ওপর রানের গতি বাড়ানোর দায়িত্ব, তারা সময়মতো জ্বলে উঠতে পারছেন না।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন



এই পাতার আরো খবর