ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সাহসী এক ক্রিকেটারের সফল হওয়ার গল্প
অনলাইন ডেস্ক

সমাজের বিভিন্ন বাধাকে উপেক্ষা করে নিজের স্বপ্ন পূরণে অনন্য দৃষ্টান্ত রেখেছেন বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের তারকা বাংলাদেশি পেসার জাহানারা আলম। তিনি সমাজে নারী ক্রিকেটার হওয়ার সাহস দেখিয়েছেন, তাঁকে দেখে এখন অনেকেই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।  

জাহানারা আলম আগে ভলিবল খেলতেন, পরে একসময় হুট করেই ক্রিকেট খেলতে শুরু করলেন। এ সম্পর্কে তিনি জানান, “প্রথম ক্রিকেট খেলার প্রস্তাব পাওয়ার পর আমি ভলিবল ছেড়ে ক্রিকেট খেলার চিন্তা শুরু করি। আমার ক্রিকেটের যাত্রা খুব অল্প সময়ে হুট করে সহজে শুরু হয়ে গেলেও ধীরে ধীরে ক্রিকেটের প্রতি আমার আবেগ ও ভালো লাগা বাড়তে থাকে।” 

জাহানারা যখন প্রথম ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন, তিনি তখন বুঝতে পারেননি সামনে তাঁর জন্য কী বাধা অপেক্ষা করছে। সময়ের সাথে সাথে তিনি বুঝতে শুরু করলেন, তার মত নারীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য চিন্তার শেকলে বাধা সমাজ প্রস্তুত নয়। তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। হাল না ছাড়া এ অদম্য নারীর স্পৃহার মিল পাওয়া যায় তরুণ প্রজন্ম কেন্দ্রিক স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি’র সাথে। রিয়েলমি বিশ্বাস করে, প্রত্যেক তরুণের তার স্বপ্ন পূরণে যে কোনও বাধা অতিক্রম করার অধিকার রয়েছে, ঠিক যেমন জাহানারা শত সামাজিক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে একজন বিখ্যাত ক্রিকেটার হয়ে উঠেছেন।

প্রতিটি সাফল্যের পিছনে অনেক সংগ্রাম ও প্রতিবন্ধকতার গল্প রয়েছে। তিনি জানান, “আজ আমি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি, এটাকে আমি আমার সাফল্য বলে মনে করি। কিন্তু, সাফল্য অর্জন করতে আমাকে অনেক বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমি সেসব প্রতিবন্ধকতাগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে, বরং বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে যেতে কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং নিজের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে গেছি।” 

তিনি বলেন, “আমার ক্রিকেটার হওয়ার যাত্রায় সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল সামাজিক প্রতিবন্ধকতা। আমাদের সমাজে, সকল ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণকে এত সহজে মেনে নেওয়া হতো না, এখনও কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয় না। ১৪ বছর বয়সে যখন আমি প্রথম ক্রিকেট খেলা শুরু করি, তখন মানুষজন আমাকে দেখে শিস বাজাতো এবং আমার ক্রিকেটের পোশাক নিয়ে বাজে মন্তব্য করতো। তারা আমাকে নিয়ে সমালোচনা করতো; এমনকি এলাকার কিছু মানুষ আমাকে ছেলেদের সাথে ক্রিকেট অনুশীলনেও বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।”

তবে তিনি তাঁর নিজের স্বপ্নের দিকে ছুটেছেন। ‘ডেয়ার টু লিপ’- থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জাহানারা তাঁর স্বপ্নের পেছনে ছুটেছেন এবং এ কারণেই আজ তিনি ক্রিকেটের মাধ্যমে নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন। যদি তিনি স্বপ্নের পেছনে না ছুটতেন, তাহলে তিনি আজকের এই অবস্থানে কখনও আসতে এবং ক্রিকেটার হয়ে নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার মত গৌরব অর্জন করতে পারতেন না। 

ধীরে ধীরে মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে। ২০১৮ সালে মহিলা ক্রিকেট দল এশিয়া কাপ জেতার পর থেকে, পরিস্থিতি আরও পরিবর্তিত হয়েছে এবং হচ্ছে। জাহানারা মনে করেন যে, পরিবারগুলোর অবশ্যই তাদের মেয়েরা যা করতে চায়, তাতে সহায়তা ও অনুপ্রেরণা দেওয়া উচিৎ। যারা কিছু করার স্বপ্ন দেখেন, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “সাফল্যের পথে অনেক বাঁধা আসবে। কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেতে হলে আপনাকে দৃঢ় হতে হবে এবং কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। যারা স্বপ্ন পূরণের জন্য লড়াই করছে, তাদের অবশ্যই তাদের গন্তব্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পিছনে ফিরে তাকাবেন না, শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস করুন।” 

রিয়েলমি প্রতিবছর ফ্যান ফেস্ট আয়োজন করে, যেখানে ব্র্যান্ডটি তাদের ফ্যানদের জন্য নানা কার্যক্রম আয়োজন করে এবং প্রতিবছর এ অনুষ্ঠানে তারা এমন কিছু তরুণের গল্প সবার সামনে তুলে ধরে যারা তাদের স্বপ্নকে অনুসরণ করেছেন, সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটিয়েছেন এবং সকল প্রতিকূলতা পেরিয়ে সফল হয়েছেন। ক্যানালিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে রিয়েলমি।   

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ



এই পাতার আরো খবর