ড্রোনের কারণে গবেষণা কাজে অনেক পরিবর্তন এসেছে। কম খরচে এমন অনেক গবেষণা করা যাচ্ছে যা আগে সম্ভব ছিল না। হাজার হাজার প্রাণীর জীবনও বাঁচাচ্ছে ড্রোন।
জার্মানির ব্রাউনশোয়াইগ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা প্রতিনিয়ত ড্রোনের নতুন ব্যবহার খুঁজে বের করছেন।
এয়ারোইন্সপেক্ট নামে একটি ড্রোনে ১০০ মেগাপিক্সেলের একটি ক্যামেরা আছে। এটি দিয়ে ভবন স্ক্যান করা যায়। এই ড্রোনের ব্যাটারি মাত্র ৪০ মিনিট কার্যকর থাকে। পুরনো ভবনের ৩৫ মিটার উঁচুতে উঠে তার ছবি তোলার জন্য এই সময় যথেষ্ট। ভবনের প্রতি ৯০ সেন্টিমিটারের স্পষ্ট ছবি তোলে এটি। পরে ছবিগুলো দিয়ে কম্পিউটারে থ্রিডি মডেল তৈরি করা হয়।
ক্যামেরা দিয়ে শুধু ভবনের উপরের ছবি তোলা হলেও গবেষকেরা টিনের ভেতর দিয়ে নিচ পর্যন্ত দেখতে পারেন।
ব্রাউনশোয়াইগ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ইয়ান বাকহাউস জানান, ‘‘এয়ারোইন্সপেক্ট ড্রোন দিয়ে সময়ের সঙ্গে কোনো ভবনে পরিবর্তন এসেছে কিনা, কোথাও ভেঙে গেছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণ করা যায়। বড় ক্রেন কিংবা ট্রেন চলে এমন পথ পরীক্ষা করার সময় অনেকদিন ব্যবহারের কারণে ওই পথে কোনো ত্রুটি দেখা দিয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হতে হয়। তাদের স্থান পরিবর্তন হয়েছে কিনা সেটাও খেয়াল করতে হয়। যদি হয়, তাহলে যেন ঠিক সময়ে জানা যায়, সেটা জরুরি।’’
ব্রাউনশোয়াইগ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক গবেষক আস্ট্রিড লামপার্ট বলেন, ‘‘এখন সব জায়গায় ড্রোন ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হচ্ছে। সহজে সেগুলো পাওয়াও যাচ্ছে। দামও কম। এসব প্রযুক্তি দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ সম্ভব হচ্ছে। সমতলে আর বিমান থেকে অনেক পরিমাপ পাওয়া যায়। কিন্তু এর মধ্যবর্তী স্থানে একটা শূন্যস্থান আছে। ড্রোন দিয়ে কম দামে সেই শূন্যস্থানটা পূরণ করা যায়। ড্রোন দিয়ে অন্য কাজও করা যায়। যেমন হরিণের বাচ্চা খোঁজা।’’
ইদানিং অনেক কৃষক খড় কাটার আগে ড্রোন দিয়ে ইনফ্রারেড ক্যামেরা ব্যবহার করে তাদের জমি স্ক্যান করে নিচ্ছেন। কারণ এভাবে জমিতে কোথাও কোনো প্রাণীর বাচ্চা আছে কিনা, তা দেখা যায়। ইনফ্রারেড ক্যামেরা প্রাণীর শরীরের তাপমাত্রা চিহ্নিত করতে পারে। ফলে ড্রোন পাইলট একজন উদ্ধারকারীকে ওই প্রাণীর সঠিক অবস্থান খুঁজে পেতে সহায়তা করতে পারেন।
হারভেস্টারের কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার প্রাণীর বাচ্চা প্রাণ হারায়। বেশি বেশি ড্রোন ব্যবহার করে এসব প্রাণী হত্যা বন্ধ করা সম্ভব।
আরেকটি ড্রোন আছে যেটা গুলি করতে পারে। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ এটা দিয়ে গাছে মনিটরিং যন্ত্র বসাতে চায়। তাহলে প্রত্যন্ত বনে গাছের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা যাবে।
সূত্র: ডয়চে ভেলে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন