ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

প্রযুক্তি খাত: পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞায় নাজুক পরিস্থিতিতে চীন-যুক্তরাষ্ট্র
অনলাইন ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি: রয়টার্স

চিপ তৈরির প্রযুক্তি রফতানিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পাল্টা হিসেবে খনিজ উপাদান সরবরাহ বন্ধের কথা জানিয়েছে চীন। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দুই দেশের এসব পদক্ষেপ মূলত এ খাতে দেশ দুটির বাণিজ্যকে আরো নাজুক অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে যা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। 

গত বছরের শেষ দিকে চীনের বিভিন্ন প্রযুক্তি, বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা সংস্থার কর্মকর্তারা আলোচনায় বসেন। চীনা কোম্পানির কাছে চিপ উৎপাদনের সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি বিক্রিতে বাইডেন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ওঠাই ছিল মূল বিষয়। এমনকি জুলাইয়ে দেশটি নতুন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে। সে সময় দেশটি বিশ্ববাজারে গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়াম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার কথা জানায়। চিপ, বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি, টেলিকম পণ্য ও অস্ত্র তৈরিতে এ দুটি উপাদান ব্যবহৃত হয়। শিল্প খাতসংশ্লিষ্টদের জন্য এ সিদ্ধান্ত অনেকটাই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আধুনিক প্রযুক্তি ও অবকাঠামো উন্নয়নে চীন বেশকিছু কাঁচামাল উৎপাদন করে। এ খাতে নেতৃস্থানীয় অবস্থানের বিষয়টি জানাতে বেইজিং এমন উদ্যোগ নিয়েছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু বাস্তবে এসব উপাদানের সরবরাহ বা রফতানি এখনো সেভাবে বাধাগ্রস্ত হয়নি। তবে এগুলো আমদানির জন্য নতুন করে ছাড়পত্র পাওয়ার বিষয় যুক্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে একটি বিষয় পরিষ্কার, চীন চাইলে প্রতিশোধ নিতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলোকে সতর্কবার্তা দিতে পারে। এসব বিবেচনা করেই কাঁচামাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

চীন সতর্কবার্তা দিলেও প্রযুক্তি বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বহাল। গত বছর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর চিপ রফতানিতে বাইডেন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা আরো বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যে কারণে ভবিষ্যৎ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চীনের প্রযুক্তি গ্রুপ ও কোম্পানিগুলোকে মজুদ থাকা পুরনো চিপ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি খাতের বাণিজ্যে দুটি দেশের নির্ভরতা ও দুর্বল দিকগুলো উন্মোচিত হচ্ছে বলে অভিমত বিশ্লেষকদের।

চীন যে পুনরায় নতুন কোনো পদক্ষেপ নেবে না সেটি বলা মুশকিল। তবে গ্রাফাইট সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত বিভিন্ন দেশের সরকার ও কোম্পানির জন্য উদ্বেগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিদ্ধান্তের কথা জানার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিউলের বাণিজ্যমন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যাটারি শিল্প সমিতি ও অন্যান্য উপাদান সরবরাহকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কূটনীতিকরা আরো তথ্য পাওয়ার জন্য বেইজিংয়ের ওপর নজর রেখেছেন। তবে রফতানি নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের ওপরই সবার নজর।

নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে অবগত চীনের এক কর্মকর্তা জানান, চিপ ও প্রযুক্তি রফতানি নিষেধাজ্ঞায় চীনের বড় ক্ষতি হয়েছে। সেটির প্রত্যুত্তর হিসেবে গ্রাফাইট রফতানি বন্ধের বিষয়টি আলোচনায়। এদিকে প্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্টদের দাবি নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আগে থেকে তাদের কোনো সতর্কবার্তা দেয়া হয়নি।

বিশ্লেষক ও খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, চিপ ও প্রযুক্তি রফতানিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং খনিজ উপাদান সরবরাহে চীন যে উদ্যোগ নিয়েছে বা নিতে যাচ্ছে, সেগুলো ব্যবসা খাতে তাদের বিরোধ বাড়াচ্ছে এবং দুর্বল জায়গাগুলো প্রকাশ্যে আনছে। বিরোধের কারণে বৈশ্বিক প্রযুক্তি বাজার আরো অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে যা সামগ্রিকভাবে প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায় বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। সূত্র: ফিন্যান্সিয়াল টাইমস

বিডি প্রতিদিন/আজাদ



এই পাতার আরো খবর