ঢাকা, শনিবার, ২০ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চ্যাটজিপিটির স্রষ্টা অল্টম্যানকে কেন ছাঁটাই করল ওপেনএআই?
অনলাইন ডেস্ক

ওপেনএআই সংস্থার সিইও পদ থেকে ছাঁটাই করা হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটজিপিটি-র ‘স্রষ্টা’ স্যাম অল্টম্যানকে। ওপেনএআই ‘স্যামের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতার ওপর আস্থা হারানোর’ কারণেই তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল বলে সংস্থার পক্ষ শুক্রবার জানানো হয়েছে।

সিইও পদ খোয়ানোর পর অল্টম্যান ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে গিয়ে লেখেন, ‘ওপেনএআই-এ আমি যে সময় কাটিয়েছি, তা ভাল ছিল। ব্যক্তিগত ভাবে আমার জীবনে এই সিদ্ধান্ত অনেক বদল আনবে। আশা করি বিশ্বেরও কিছুটা পরিবর্তন হবে। ওপেনএআই-এ আমার সব থেকে বেশি ভাল লেগেছে প্রতিভাবান মানুষদের সঙ্গে কাজ করতে। পরবর্তী কালে আমি কী করব, তা নিয়ে পরে বলব।’

চ্যাটজিপিটি আবিষ্কারের পর থেকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে নতুন করে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল বিশ্ববাসীর মনে। কৌতূহল তৈরি হয়েছিল স্রষ্টা স্যামকে নিয়েও।

চ্যাটজিপিটি বানিয়েই যে স্যাম সুখ্যাতির আলোকবৃত্তে এসেছেন, তেমনটা নয়। প্রায় দু’দশক ধরে তিনি সিলিকন ভ্যালির অন্যতম চর্চিত ব্যক্তি।২০০৫ সালে কলেজ ছাড়েন স্যাম। তা-ও আবার যে সে কলেজ থেকে নয়, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। স্ট্যানফোর্ডে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করতে করতে হঠাৎই এক দিন তিনি প্রথাগত শিক্ষা গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেন।

স্টিভ জবস এবং বিল গেটসদের পর্যায়ে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা থেকে কলেজ ছাড়ার পর মাত্র ২০ বছর বয়সে নিজের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা শুরু করেন স্যাম। স্যাম সেই সংস্থার নাম দেন ‘লুপ্ট’। ‘লুপ্ট’-এর মাধ্যমে যে কোনও ব্যবহারকারী তাদের লোকেশন অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারতেন। সেই সময়ে বাজারে বিশেষ সাড়া ফেলতে পারেনি ‘লুপ্ট’। ফলে সংস্থা বাঁচাতে ‘ওয়াই কম্বিনেটর’ নামে এক সংস্থার দ্বারস্থ হন স্যাম। ‘ওয়াই কম্বিনেটর’-এর হাত ধরেই সাফল্য পেয়েছে এয়ার বিএনবি, রেডিট, ড্রপবক্স, কয়েনবেস-এর মতো স্টার্ট আপ সংস্থাগুলি। সংস্থা চালানোর জন্য ‘ওয়াই কম্বিনেটর’-এর সাহায্যে বাজার থেকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার লগ্নি তোলেন স্যাম। অ্যাপল এবং ব্ল্যাকবেরি সংস্থার কাছ থেকে স্বীকৃতিও পায় তার সংস্থা।

স্যাম ২০১২ সালে ‘ওয়াই কম্বিনেটর’-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তার আগে এই সংস্থার প্রেসিডেন্ট ছিলেন আমেরিকার বিখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী পল গ্রাহাম। আরও তিন বছর পর অর্থাৎ, ২০১৫ সালে আমেরিকার ধনকুবের ইলন মাস্ক, লিঙ্কডইনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিড হফম্যান এবং আরও কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে ‘ওপেনএআই’ নামে একটি কৃত্রিম মেধা গবেষণা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন স্যাম। স্যাম সেই সময় দাবি করেন, এআই ব্যবহার করে মানব জাতির উপকার করা এই সংস্থা তৈরির মূল লক্ষ্য। ২০১৬ সালে স্যাম ঘোষণা করেন, ‘ওপেনএআই’ এমন একটি কৃত্রিম মেধা তৈরি করছে যার বুদ্ধি মানুষের বুদ্ধির সঙ্গে মেলে। সংস্থার তরফে এই কৃত্রিম মেধার নাম দেওয়া হয় জিপিটি-১। ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি ‘ওপেনএআই’ আরও একটি কৃত্রিম মেধা ‘দাল-ই’ তৈরির কথা ঘোষণা করে যা ব্যবহারকারীর বর্ণনার ভিত্তিতে ছবি আঁকতে সক্ষম। গত বছরের নভেম্বরে বিশ্ববাজারে সকলকে চমক দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে ওপেনএআই-এর কৃত্রিম মেধা ‘চ্যাটজিপিটি’। এটিই এখনও পর্যন্ত তৈরি হওয়া সবচেয়ে উন্নত মানের কৃত্রিম মেধা নির্ভর চ্যাটবট বলে মনে করা হচ্ছে। ছবি আঁকা, কথা বলা, গান শোনানোর মতো একাধিক কাজ করতে সক্ষম ‘চ্যাটজিপিটি’।

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর