ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

শেরপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী অভিভাবকশূন্য
আমার মৃত্যু হলেও কোনো আফসোস নেই: ডা. সানসিলার মা
শেরপুর প্রতিনিধি:
ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা (ফাইল ছবি)

শেরপুর-১ সদর আসনের ধানের শীষ প্রতীকের দেশের সর্বকনিষ্ঠ বিএনপি প্রার্থী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছেন। নির্বাচনের শেষ দিকে সাথে থাকছেন শুধু মা নিলুফা খানম। স্বামী এড. রেহেমিন চৌধুরী প্রথম দিকে থাকলেও নিরাপত্তার কারণে তিনিও বাইরে বের হন না। তার এ অভিভাবকশূন্যের বিবরণ দিতে গিয়ে প্রিয়াংকা বৃহস্পতিবার রাতে শহরের মধ্যশেরির বাসায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ''এতদিন পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ভয়ে আতঙ্কে থাকতাম। আর আজ নির্বাচনের এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের আচরণ দেখে সত্যিই হাসি পাচ্ছি।'' বিএনপির এই প্রার্থী বলেন, আমি একজন ছোট মানুষ, আমার প্রচারণাতেই ওদের এত ভয় কেন? রাজনীতি তেমন বুঝি না, তবে বিএনপি নির্বাচনে আসাটাকে আওয়ামী লীগ আতঙ্ক মনে করছে। তিনি বলেন, ২৭ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিন থাকলেও সকালে গণসংযোগ থেকে তার ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার হয়। এরপর তিনি বাসা থেকে আর বের হননি।

ডা. সানসিলা জানান, নির্বাচনী স্টিয়ারিং কমিটির মধ্যে প্রধান সমন্বয়ক হাতম আলী সোমবার গ্রেফতার হয়ে এখন জেলখানায়। ১৩ সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটির মধ্যে ১১ জন মামলা খেয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বাকীরা ডাকলেও মামলা আতঙ্কে আসছেন না। ৪ দিনের ব্যবধানে বিএনপি সমর্থিত এই প্রার্থীর অন্তত ৪৫ জন নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে আছেন। বলেন, দলের এমন কোনো জ্যেষ্ঠ নেতা নেই যিনি মামলায় পড়েননি। সর্বশেষ ক’জন আইনজীবী এই প্রার্থীর সাথে দেখা গেলেও তারাও আসামি হয়ে গ্রেফতারের ভয়ে নিরাপদ দূরত্বে থাকছেন বলে জানান। বলেন, কেউ মোবাইলটা পর্যন্ত খোলতে সাহস পাচ্ছেন না। ইতোমধ্যে হামলায় আহত হয়েছেন প্রার্থীর খালা, খালাত ভাইসহ অন্তত ১০ জন। ভাংচুর হয়েছে গাড়ি। নির্বাচনী প্রচারণা কেন্দ্রগুলোতেও শুনসান নীরবতা। সব মিলিয়ে মামলা-হামলার ভয়ে কেউ প্রার্থীকে পরামর্শ বা সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসছে না। ফলে এক রকম অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছেন বলে জানান বয়সে তরুণ এই নারী প্রার্থী।

বিএনপির এই প্রার্থীর অভিযোগ, দল কিংবা আত্মীয়-স্বজন হামলা মামলার ভয়ে কেউ তার কাছেই আসতে পাচ্ছেন না। অনেক জায়গায় অভিযোগ করলেও কোনো ফল হয়নি। অভিযোগ করতে আসলে সাথে যারা থাকে, সেখান থেকেই তাদেরই গ্রেফতার করা হয়। সকল দায়িত্ব একা একা অভিভাবকশূন্য পালন করতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পালিয়ে থাকা স্থানীয় বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, একদিকে গ্রেফতার আতঙ্ক, অন্যদিকে নেতাকর্মীদের নানা প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই বলেই মোবাইল বন্ধ করে নীরবে আছি। তবে যাই হোক প্রিয়াংকা শেষ পর্যন্ত মাঠে একা হলেও থাকবেন, এমন কথা জানিয়েছেন। 

মা নিলুফা জানিয়েছেন, সন্তান যতই বিপদে পড়ুক মা হিসেবে তার সাথে থাকবো। এতে আমার মৃত্যু হলেও কোন আফসোস নেই।

বিডি-প্রতিদিন/২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮/মাহবুব

   



এই পাতার আরো খবর