ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বরিশালের ৬টি আসনে পোলিং এজেন্ট পাচ্ছে না বিএনপি!
রাহাত খান, বরিশাল:

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল জেলার ৬টি আসনে ভোটগ্রহন হবে ৮০৫টি কেন্দ্রের ৪ হাজার ৪৭টি কক্ষে। সে হিসেবে প্রতি কক্ষে একজন করে পোলিং এজেন্ট প্রয়োজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ অন্যান্য দল কিংবা জোটের প্রার্থীরা পোলিং এজেন্ট চূড়ান্ত করলেও জেলার ৬টি আসনের কোথাও পোলিং এজেন্ট পাচ্ছেন না বিশেষ করে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীরা। যদিও ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীদের দাবি তারা ৩ স্থরে পোলিং এজেন্ট তালিকা চূড়ান্ত করেছেন। এদের মধ্যে কেউ আত্মগোপনে, কেউ কারাগারে, কেউ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে সব কেন্দ্রে কিংবা কক্ষে পোলিং এজেন্ট দেওয়া সম্ভব হবে না বলে আশংকা করেছেন বরিশাল-১ আসনের বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী এম জহিরউদ্দিন স্বপন।

নির্বাচন কমিশনের সবশেষ গেজেট অনুযায়ী, বরিশাল জেলার ৬টি সংসদীয় আসনে ভোটগ্রহণ করা হবে ৮০৫টি কেন্দ্রে। এরমধ্যে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে ১১৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে ২৬৩ মহিলা এবং ৩১৫টি পুরুষ ভোটকক্ষে। ওই আসনে মোট ৫৭৮টি ভোট কক্ষে ভোট গ্রহণের আয়োজন করা হলেও পোলিং এজেন্ট পাচ্ছেনা বিএনপি প্রার্থী জহিরউদ্দিন স্বপন। বিশেষ করে ওই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র নিজ উপজেলা আগৈলঝাড়ায় পোলিং এজেন্ট থাকতে সাহস পাচ্ছেন না বিএনপি’র কোন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে সব কেন্দ্রের সবগুলো কক্ষে পোলিং এজেন্ট দেওয়া সম্ভব হবে না বলে আশংকা ওই আসনের বিএনপি প্রার্থী স্বপনের।

বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনের ১৩৬টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে ৬৮৫টি কক্ষে। এরমধ্যে মহিলা ভোট কক্ষ ৩১৫টি এবং পুরুষ ভোট কক্ষ ৩৭০টি। ওই আসনের মোট ৬৮৫টি কক্ষে ভোট গ্রহণের জন্য বিএনপি’র ৬৮৫জন পোলিং এজেন্ট প্রয়োজন হলেও পোলিং এজেন্ট হতে আগ্রহী কাউকে পাচ্ছেনা বিএনপি। উজিরপুর উপজেলা বিএনপি’র কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শফিউল আলম সফরুল বলেন, গত কয়েক দিনে দুই উপজেলা একাধিক গায়েবী মামলায় পুলিশি গ্রেফতার এবং আওয়ামী লীগের হামলার হাত থেকে বাঁচতে নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মী খুঁজছে। না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের গালাগাল করছে। ক্ষমতাসীনদের হামলা এবং পুলিশের গ্রেফতারের ভয়ের কারণে কোন কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট দেওয়ার সাহস পাচ্ছেন না তারা। তবে পরিস্থিতি অকুকূলে থাকলে সব কেন্দ্রের জন্য একাধিক পোলিং এজেন্টের তালিকা প্রস্তত রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।

একইভাবে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে ১২৩টি কেন্দ্রের ২৮০টি মহিলা ও ৩০৭টি পুরুষ কক্ষ সহ মোট ৫৮৭টি কক্ষে, বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে ১৪৮টি কেন্দ্রের ৩৪২টি মহিলা ও ৪০২টি পুরুষ কক্ষ সহ মোট ৭৪৪টি কক্ষে, বরিশাল-৫ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনে ১৭৪ কেন্দ্রের ৪১০ মহিলা ও ৪৮৫টি পুরুষ কক্ষসহ মোট ৮৯৫ কক্ষে এবং বরিশাল-৬ আসনের ১০৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ২৫৩টি পুরুষ ও ৩০৫টি মহিলা কক্ষসহ মোট ৫৫৮টি ভোট কক্ষে।

বরিশাল-৬ আসনের বিএনপি প্রার্থী আবুল হোসেন খান বলেন, পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হানা দিচ্ছে। পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে নেতাকর্মীরা বাগানে মশার কামড় খাচ্ছে। মনে হচ্ছে পুলিশের নির্বাচন করছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে থাকার কোন মানে হয় না। এই অবস্থায় বিএনপি যে কিসের জন্য এখনও নির্বাচনে আছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওই দলের প্রার্থী আবুল হোসেন খান।

আবুল হোসেন বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা পালিয়েও বাঁচতে পারছে না। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে সব কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট দেয়া সম্ভব হবে না বলে আশংকা করেন তিনি।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর