ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন
বিপুল ভোটে জিতলেন এমপি রানার বাবা আতাউর রহমান খান
মো. নাসির উদ্দিন, টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগ ও মহাজোট প্রার্থী আতাউর রহমান খান (নৌকা) প্রতীকে ২ লাখ ৪২ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিবন্দ্বী বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী লুৎফর রহমান খান আজাদ ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৯ হাজার ১২২ ভোট। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী লুৎফর রহমান খান আজাদসহ বাকি ৬ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত (বাতিল) করা হয়েছে।

এ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অর্ধডজন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এ আসনের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা চাঞ্চল্যকর ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় কয়েক বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন। এমপি রানার কর্মকাণ্ড নিয়ে ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে এমপি বিরোধী একটি গ্রুপ তৈরি হয়। এতে করে উপজেলা আওয়ামী লীগ এমপি রানা বিরোধী ও রানা সমর্থিত দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে প্রায় অর্ধডজন প্রার্থী দলীয় মনোনয়নের জন্য লবিং করতে থাকেন। সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আমানুর রহমান খান রানার বাবা আতাউর রহমান খানকে ঘাটাইল আসনে মনোনয়ন দেন। আতাউর রহমান খান এ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার পর দ্বিধাবিভক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সকল বিভক্তি ভুলে গিয়ে ভোট যুদ্ধে মাঠে নামেন। ভিতরে ভিতরে রানা বিরোধী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক থাকলেও নৌকার জন্য একট্টা হয়ে কাজ করেন।

আতাউর রহমান খানের বড় ছেলে আমিনুর রহমান খান বাপ্পি সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন। আমানুর রহমান খান রানা ঘাটাইল উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বিশাল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় এমপি রানা ও তার অপর তিন ছেলে টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তি, টাঙ্গাইল জেলা বাস-কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব জাহিদুর রহমান কাকন ও ছাত্রলীগ নেতা সানিয়াত খান বাপ্পা আসামি হন। ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় এমপি রানা জেলে থাকলেও বাকী তিন ছেলে ফেরারি আসামি হয়ে পলাতক রয়েছেন।

আতাউর রহমান খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, আমার ছেলে আমানুর রহমান খান রানার বিশাল জনসমর্থন ও আমার সততা এবং নেতাকর্মীরা দলাদলি ভুলে গিয়ে নিরলসভাবে ভোটের মাঠে কাজ করায় জয়ী হয়েছি। এজয় আমার নেতাকর্মী ও ছেলেদের জয়। 

এমপি রানা বিরোধী আওয়ামী লীগ শিবিরে আতঙ্ক বিরাজ করছে এমন প্রশ্নের জবাবে আতাউর রহমান খান বলেন, আমি ছেলের পরির্বতে এ আসনে হাল ধরায় সকল প্রকার দলাদলি মিটে গেছে। আমি এই বয়সে আর নেতাকর্মীদের মাঝে কোন প্রকার কোন্দল দেখতে চাই না। আমার কাছে আমার দলীয় নেতাকর্মীরা সকলেই সমান।

ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক শহিদুল ইসলাম লেবু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আতাউর রহমান খানকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। আমরা দলের জন্য সকল কোন্দল ভুলে গিয়ে কাজ করে নৌকার বিজয় ছিনিয়ে এনেছি। আতাউর রহমান খান একজন মুরুব্বি মানুষ। আমরা উনার মাধ্যমে দলের সকল নেতাকর্মীরা নিরাপদে থাকতে চাই। উনি (আতাউর রহমান খান) আমাদের ঘাটাইলকে সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত আধুনিক ঘাটাইল হিসেবে গড়ে তুলবেন এটাই ঘাটাইলবাসী আশা করে।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা



এই পাতার আরো খবর