ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বরিশাল জেলায় ৩১ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত
রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল জেলার ৬টি সংসদীয় এলাকার ৩৯ প্রার্থীর মধ্যে ৩১ জন জামানত হারিয়েছেন। কোন প্রার্থী মোট জমা (কাস্ট) হওয়া ভোটের আট ভাগের এক ভাগও না পেলে রাষ্ট্রের অনুকূলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত করার বিধান রয়েছে। সে হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় সরকারের অনুকূলে জমা দেওয়া ২০ হাজার টাকা আর ফেরত পাচ্ছেন না বরিশালের ৩১জন পরাজিত প্রার্থী।

এরমধ্যে জেলার ৬ আসনের ৫টি’তে বিজয়ী ৫জন ছাড়া জামানত খুইয়েছেন ২৮ প্রার্থী। শুধুমাত্র বরিশাল-৩ আসনে বিজয়ী জাপার প্রার্থী ছাড়াও অপর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি’র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন এবং নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সলতান জামানত ফেরত পাচ্ছেন। তবে এই আসনের অপর ৩ প্রার্থীও হারিয়েছেন জামানত। 

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষিত ফল অনুযায়ী বরিশাল-১ আসনে মোট প্রদত্ত ভোট ২ লাখ ১১ হাজার ৫০৭ টি। এখানে আওয়ামী লীগের আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ পেয়েছেন ২ লাখ ৫ হাজার ৫০২ ভোট। এখানে জামানত হারানো অপর ৩ প্রার্থীর মধ্যে বিএনপি’র জহিরউদ্দিন স্বপন ১হাজার ৩০৫ ভোট, জাকের পার্টির মো. বাদশা মিয়া ৯৭৭ এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. রাসেল সরদার পেয়েছেন ৯৫৪ ভোট। 

বরিশাল-২ আসনে প্রদত্ত ২ লাখ ৩৭ হাজার ৪৯১ ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগের মো. শাহেআলম পেয়েছেন ২ লাখ ১২ হাজার ৩৪৪ ভোট। জামানত হারানো অপর ৬ প্রার্থীর মধ্যে বিএনপি’র সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু ১১ হাজার ১৩৭ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নেছার উদ্দিন ৮হাজার ১৪৫ ভোট, জাতীয় পার্টির মো. মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা ১ হাজার ৪৭১ ভোট, এনপিপি’র সাহেব আলী ১ হাজার ১৪০ ভোট, ওয়ার্কার্স পার্টির মো. জহুরুল ইসলাম ৯৬৯ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আনিচুজ্জামান পেয়েছেন ৮৪৪ ভোট। 

বরিশাল-৩ আসনে জামানত হারানো ৩ প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. সিরাজুল ইসলাম ১৩ হাজার ১৪৮ ভোট, স্বতন্ত্র মো. আতিকুর রহমান ১২ হাজার ৯৫৫ এবং বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মো. এনায়েত কবির পেয়েছেন ১৮৪ ভোট। 

বরিশাল-৪ আসনে প্রদত্ত ২ লাখ ৬৪ হাজার ৩৯ ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগের পংকজ নাথ পেয়েছেন জেলার ৬ প্রার্থীর মধ্যে সর্বাধিক ২ লাখ ৪১ হাজার ৩ ভোট। এই আসনে জামানত হারানো ৬ প্রার্থীর মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের জেএম নুরুর রহমান ৯ হাজার ২৮২ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সৈয়দ মো. নুরুল কারীম ৭ হাজার ৪৬১, ইসলামী ঐক্যজোটের সাইফুল্লাহ ১ হাজার ৩৭৮ ভোট, খেলাফত মজলিসের রুহুল আমীন ১ হাজার ৭৮ ভোট, বিএনএফ’র এনামুল হক ১ হাজার ১১১ ভোট এবং খেলাফত আন্দোলনের মাহাবুবুল আলম দুলাল পেয়েছেন ৪১১ ভোট। 

বরিশাল-৫ আসনে মোট প্রদত্ত ২ লাখ ৭৮ হাজার ৩২৩ ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগের জাহিদ ফারুক শামীম পেয়েছেন ২ লাখ ১৫ হাজার ৮০ ভোট। জামানত হারানো তার ৬ প্রতিদ্বন্দ্বির মধ্যে মো. মজিবর রহমান সারোয়ার ৩১ হাজার ৩৬২ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতী সৈয়দ মো. ফয়জুল করীম ২৭ হাজার ৬২ ভোট, বাম গণতান্ত্রিক জোটের অধ্যাপক আবদুস সাত্তার ৭২৭ ভোট, জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট একেএম মুরতজা আবেদীন ৭১২, এনপিপি’র শামীমা নাসরিন ৪১২ এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (মতিন) পেয়েছেন ৮৯ ভোট। 

বরিশাল-৬ আসনে প্রদত্ত ১ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৮ ভোটের মধ্যে মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির নাসরিন জাহান রত্না পেয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ৩৯৮ ভোট পান। জামানত হারানো ৭ প্রতিদ্বন্দ্বির মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের মো. নূরুল ইসলাম আল আমিন ১৪ হাজার ৮৪৫ ভোট, বিএনপি’র আবুল হোসেন খান ১৩ হাজার ৬৫৮ ভোট, জাসদের মো. মোহসীন ২ হাজার ৩৪ ভোট, স্বতন্ত্র ওসমান হোসাইন মনির ১ হাজার ১৭৮ ভোট, পাতীয় পার্টির-জেপি খন্দকার মাহতাব উদ্দিন ৩৫০ ভোট, স্বতন্ত্র মোহাম্মদ আলী তালুকদার ফারুক ৩৩৩ এবং জেএসডি’র এ কে এম নুরুল ইসলাম পেয়েছেন ২৮ ভোট। 

বরিশালের রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে জামানত গ্রহণ করা হয়েছিলো। যারা মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের একভাগ কিংবা তার বেশী পেয়েছেন তারা নিয়ম অনুযায়ী জামানত ফেরত পাবেন। আর যারা মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের একভাগেরও কম পেয়েছেন তাদের জামানত রাষ্ট্রের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে জানান তিনি। বরিশালে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলেও তার দাবী। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন



এই পাতার আরো খবর