ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

লিওনেল মেসি, আর মাত্র দুটি ম্যাচ বাকি!
অনলাইন ডেস্ক

কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শুরুটা ভাল ছিল না। অপেক্ষাকৃত দুর্বল সৌদি আরবের কাছে প্রথম ম্যাচেই ২-১ গোলের ব্যবধানে হেরে যায় বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম মহাতারকা লিওনেল মেসির দল। এই পরাজয়ে অনেকেই হয়তো আশঙ্কায় ছিলেন গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ যাবে আর্জেন্টিনা। মেসিকে আর হয়তো বিশ্বকাপ হাতে দেখা যাবে না- এমন আশঙ্কাও দেখা দিয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস বলে বিশ্বকাপ এ রকমই। চরম অনিশ্চয়তায় ভরা একটি প্রতিযোগিতা। খারাপ শুরু করেও অতীতে অনেক দলই কিন্তু বিশ্বকাপ জিতেছে- এমন নজির রয়েছে।

আর্জেন্টিনাও এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে। প্রথম ম্যাচের হারের পর জ্বলে ওঠে লিওনেল মেসির দল। এরপর আর কোনও ম্যাচে পরাজয় দেখতে হয়নি তাদের। নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। টিকে আছে শিরোপা লড়াইয়ের দৌড়ে।

বাজে শুরুর পর থেমে থাকেননি মেসি। দলকে দারুণভাবে এগিয়ে নিয়েছে। তার স্বপ্নপূরণের জন্য বাকি আর মাত্র দু’টি ম্যাচ। এই দু’টি ম্যাচ জিততে পারলেই ফুটবল ক্যারিয়ারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবেন মেসি।

সেই ১৯৮৬-তে দিয়াগো ম্যারাডোনা যেমন আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ দিয়েছিল, এবার তেমন সুযোগ থাকছে মেসির সামনে। দু’জনের তুলনা চলছে সব সময়। কে বড় ফুটবলার? 

তুলনায় যা পাওয়া যায়- তাতে দেখা যায় দু’জনেই অসামান্য প্রতিভাবান, অসাধারণ ফুটবলার। ম্যারাডোনা নিশ্চয়ই তার প্রজন্মের সেরা ফুটবলার। আর লিওনেল মেসি বর্তমান প্রজন্মের। দু’জনই নিজ নিজ সময়ে অন্যতম সেরা।

মেসির সামনে এসেছে সেই সুযোগ,ম্যারাডোনার মতোই তিনি এখন পারেন বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন পূরণ করতে। এজন্য বাকি আর মাত্র দু’টি ম্যাচ।

তবে এটাও সত্য সেমিফাইনালে মেসির প্রতিপক্ষ দুর্বল নয়। আজ রাতেই মুখোমুখি হতে যাচ্ছে শক্তিশালী দল ক্রোয়েশিয়ার, যারা কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের মতো শক্ত প্রতিপক্ষ হারিয়ে সেমিতে এসেছে। শুধু তা-ই নয়, গত আসরে ফাইনালও খেলেছে তারা। গতবার হয়তো ট্রফি জিততে পারেনি, ফ্রান্সের কাছে হেরে। এবার নিশ্চিয়ই সেই দুঃখ ঘোচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করবে তারা। ফলে মেসিদের সহজে ছেড়ে দেবে না এই লুকা মড্রিচরা।

তাছাড়া, ক্রোয়েশিয়া জেতার জন্য অপেক্ষা করতে জানে। ধৈর্য হারায় না তারা। খুব ঠাণ্ডা মাথায়, সুপরিকল্পিতভাবে গোছানো ফুটবল খেলে। আর বিশ্বকাপে আগের ম্যাচগুলোতে বারবার দেখা গেছে, একটা মুহূর্তই ম্যাচের রং সম্পূর্ণভাবে পাল্টে দিয়ে যেতে পারে এ দলটি। টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার সম্ভবত সেরা। দুর্দান্ত মিডফিল্ডও রয়েছে ওদের। আর একটা ব্যাপার। ক্রোয়েশিয়া চাপ নিতে জানে। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে সেটাও কিন্তু বড় ব্যাপার।

বিপরীতে আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজও কম যান না। তিনিও কোয়ার্টার ফাইনালে শক্তিশালী নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টাইব্রেকারে দুটি পেনাল্টি বাঁচিয়ে দলকে সেমিতে তুলেছেন।

সেই সাথে ক্রোয়েশিয়া আরও জানে, সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিয়ে যেতে পারে একটা লোক। লিওনেল মেসি। তিনি এত বড় ফুটবলার যে, সব সময় মার্কিংয়ে রাখলেও সামান্য সুযোগ পেল‌েই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়ে যেতে পারে। মেসির একটা মুভ, একটা পাস বা একটা শটই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। সারাক্ষণ তিনি ব্যস্ত থাকেন দলের জন্য অবদান রাখতে। কখনও নিজে গোল করছেন, আবার কখনও সতীর্থদের জন্য গোলের বল সাজিয়ে দিচ্ছেন। কোয়ার্টার ফাইনালে যেমন দিয়েছিলেন মোলিনার জন্য।

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খুব উত্তপ্ত ম্যাচ খেলে সেমিফাইনালে এসেছে আর্জেন্টিনা। ওই ম্যাচে তাদের দেখে মনে হচ্ছিল, স্নায়ুর চাপে আছে। এমন একটা ফাউল করল যে, লাল কার্ড হতে পারত। তারপর প্রতিপক্ষ বেঞ্চের দিকে বল মারল। তাতে দু’পক্ষে প্রায় হাতাহাতি লেগে গিয়েছিল। এই বিশ্বকাপে এ রকম উত্তপ্ত ম্যাচ আর দেখা যায়নি।

তবে আর্জেন্টিনাকে আবার ইতিহাসের অংশ করতে মেসির জন্য বাকি আর মাত্র দু’টি ম্যাচ। এই দু’টি ম্যাচেই ইতিহাসের অন্যন্য জায়গা উঠে যেতে পারেন সময়ে অন্যতম মহাতারকা মেসি।

বিডি প্রতিদিন/কালাম



এই পাতার আরো খবর