ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ম্যাক্সওয়েলের ইনিংসটি ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা: কামিন্স
অনলাইন ডেস্ক
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে গতকাল মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় আফগানিস্তান-অস্ট্রেলিয়া। দুই দলের লড়াইয়ে অসিরাই ছিল অনেক এগিয়ে। কিন্তু মাঠে নেমে আফগানরা দুর্দান্ত এক লড়াই উপহার দিল। ব্যাট হাতে তারা ২৯১ রান করার পর বল হাতেও ঝড় তুলল। অস্ট্রেলিয়া ৯১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ম্যাক্সওয়েল একাই দলকে জেতালেন। তিনি ১২৮ বলে ২০১ রান করে চলতি বিশ্বকাপে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেন। প্যাট কামিন্সকে সঙ্গী করে দলকে ৩ উইকেটে জয় উপহার দিয়ে তৃতীয় দল হিসাবে অস্ট্রেলিয়াকে সেমিফাইনালে নিয়ে গেলেন। 

অথচ ইনিংসের মাঝপথে পায়ে শিরটানের কারণে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে খেলতে হয়েছে ম্যাক্সওয়েলকে। মাঝে দুইবার লেগ বিফোরের আবেদন ব্যর্থ করে এবং একবার ক্যাচ মিসে জীবন পেয়ে দারুণভাবেই কাজে লাগিয়েছেন তিনি।  

অন্যপ্রান্তে কামিন্স শুধু স্ট্রাইক বদল আর উইকেট ধরে রাখার দিকেই পুরো মনোযোগ ধরে রাখেন। যে কারণে ৬৮ বলের মোকাবিলায় অপরাজিত ১২ রান করেন তিনি। অন্যদিকে ১২৮ বলের ইনিংসে ২১টি চার ও ১০টি ছক্কা হাঁকান ম্যাক্সওয়েল। দৌড়ে রান নিতে সমস্যা হওয়ায় শেষদিকে শুধু চার ও ছক্কাই ভরসা। এক পায়ে সমস্যা থাকায় তার পক্ষে 'ফুটওয়ার্ক করা ছিল অসম্ভব। নিজের চোখ আর হাতের ওপর পুরো ভরসা রাখতে হয়েছে তাকে।

ম্যাচের শেষদিকে কয়েকবার এমনও হয়েছে, চোট আর ক্লান্তি মিলিয়ে ম্যাক্সওয়েলের জোর করে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়ার সম্ভাবনাও দেখে দিয়েছিল। যে কারণে বাউন্ডারি লাইনের বাইরে অনেকটা সময় ব্যাট-প্যাড নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন লেগ স্পিনার ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটার অ্যাডাম জাম্পা। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল হাল ছাড়েননি। সব বাধা অতিক্রম করে লড়াকু মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানের এক ওভারে তিন ছক্কা ও ১ চারে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন ম্যাক্সওয়েল। সেই সঙ্গে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান ও সবমিলিয়ে নবম ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি।

ম্যাক্সওয়েলের ওই 'ওয়ান-ম্যান ফাইটব্যাক' প্রশংসিত হচ্ছে পুরো ক্রিকেটবিশ্বে। কিন্তু তার নিজের অনুভূতি কেমন? ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে তিনি বলেন, 'ভয়ানক! আমি এখনও বুঝতে পারছি না কী হয়েছে! ফিল্ডিংয়ের সময় এখানে অনেক গরম ছিল এবং খেলার আগে খুব বেশি অনুশীলনও করিনি। যতক্ষণ না আমি মুভমেন্ট কিছুটা ফিরে পাচ্ছি, ততক্ষণ আমাদের পরিকল্পনা ছিল এক প্রান্ত ধরে খেলতে এবং ভাগ্যক্রমে শেষ পর্যন্ত আমরা তা পেরেছি। কিছু সুযোগও পেয়েছি। যে কারণে নিজেকে ভাগ্যবান ভাবাই যায়। তবে যা হয়েছে তাতে আমি গর্বিত।'

তবে ম্যাক্সওয়েলের মতো অত রয়েসয়ে প্রতিক্রিয়া জানাননি কামিন্স। নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে দাঁড়িয়ে যা দেখলেন তা তার নিজের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। যে কারণ ম্যাচ শেষ তিনি বলেন, 'এককথায় অসম্ভব... আমি জানি না কীভাবে এর ব্যাখ্যা করা সম্ভব। ম্যাক্সি ছিল আউট অব দ্য ওয়ার্ল্ড। এটাই ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা ইনিংস হওয়া উচিত। আমরা সত্যিই ভাগ্যবান যে এখানে আছি। আমি স্ট্রাইকে যেতে পারছিলাম না (হাসি)।'

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ



এই পাতার আরো খবর