নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপের শেষ ম্যাচের ৮৬ মিনিটে মার্কাস রোজোর গোলে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যেতেই ফের 'বিতর্কিত' কারণে খবর হলেন দিয়াগো ম্যারাডোনা। নাইজেরিয়ান ফ্যানেদের উদ্দেশ্যে একটি অশ্লীল অঙ্গ-ভঙ্গির মাধ্যমে জয়ের উচ্ছ্বাস প্রকাশের একটি ভিডিও স্বভাবতই ভাইরাল হয়ে যায়।
অতি বিলাসবহুল জীবনযাপনের দরুণ আর্জেন্টাইন ফ্যানেরা দ্বিধাভিবক্ত। একদল আজও তিরিশ বছর আগের বিশ্বকাপের নায়ককে নিয়ে উচ্ছ্বাসিত আর অন্যদলের ধারণায় তিনি দাম্ভিক এক প্রাক্তন ফুটবলার ছাড়া কিছুই নন।
সংবাদ মাধ্যম এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আর্জেন্টিনার এক মাঝ বয়সী ব্যবসায়ী ব্রুনো সোলনার বলেন, উনি মনে করেন আর্জেন্টিনার সমস্ত ফুটবলপ্রেমী মানুষই আজও ওকে এতটাই অন্ধভাবে ভালোবাসে যে উনি খারাপ কিছু করলেও তা সবার ভালো লাগবে। আসলে উনি ভীষণ দাম্ভিক এবং এই কারণেই প্রায়ই খেই হারিয়ে ফেলেন।
তবে ম্যারাডোনা প্রীতির কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, তবে তিনি সব সময় শক্তিশালী বিপক্ষের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। আর্জেন্টিনা-অন্ত প্রাণ ম্যারাডোনার অনমনীয় এই ব্যবহারের জন্যই আজও আমরা ওকে ভালোবাসি।
নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে গত ম্যাচে ম্যারাডোনার অসুস্থ হওয়ার খবর ভক্তরা কিভাবে নিয়েছিল তা বোঝাতে তিনি বলেন, দেখুন ৩০ বছর আগে উনি আমাদের জন্য বিশ্বকাপ এনেছিলেন। তবু আজও তিনি একই ভাবে প্রাসঙ্গিক। উনি হাসলেও আমরা আঁতকে উঠি। কারণ উনি ম্যারাডোনা।
শিক্ষিকা পলা গার্সিয়া পাজ বলেন, ১৯৮৬ বিশ্বকাপে পশ্চিম জার্মানির বিরুদ্ধে ম্যারাডোনার বিজয়ী গোলটি আজও ভুলতে পারেননি তিনি। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর।
আর্জেন্টিনার বর্তমান মহাতারকা মেসির তুলনা টেনে তিনি বলেন, মেসি এখনও আমাদের দিয়াগোর মত আনন্দ দিতে পারেনি। ম্যারাডোনা নিজেকে ঈশ্বর মনে করেন, তাই উনি প্রচুর ভুলও করেন। কিন্তু উনি মারা গেলে আর্জেন্টিনা পঙ্গু হয়ে পড়বে এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত।
গিলমেরো ব্লাঙ্কো ম্যারাডোনা সম্পর্কে বললেন, 'দেখুন বস্তিতে বড় হওয়া দিয়াগো অন্যান্য সমস্ত মানুষের মত ভালো এবং মন্দের মিশেলে তৈরি। তবে ও সাধারণের মত ও ব্যালেন্স রাখায় বিশ্বাসী না। ও যখন যা করে তখন তার শেষ অবধি দেখে ছাড়ে।'
উল্লেখ্য, শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় নক-আউট পর্বের প্রথম ম্যাচে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। এবং আগের ম্যাচগুলোর মতই ম্যারাডোনাকে হয়ত আজও দেখা যাবে তার চেনা মেজাজে।
বিডি প্রতিদিন/৩০ জুন ২০১৮/আরাফাত