ঢাকা, শনিবার, ২০ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

আজও গ্যালারিতে ক্রোট প্রেসিডেন্ট, তবে...
অনলাইন ডেস্ক

কখনও তিনি গ্যালারিতে নেচে উঠেছেন, কখনও ঢুকে পড়েছেন দেশের ফুটবলারদের ড্রেসিংরুমে। আবার জয়োল্লাসে ফুটবলারদের সঙ্গে উদ্দাম নাচে মেতে উঠতেও দেখা গেছে তাকে। তিনি ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ। 

তার দল বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলবে আর তিনি গ্যালারিতে থাকবেন না তা কি হয়? লুঝনিকির স্টেডিয়ামে বসেই তিনি খেলা দেখছেন। তবে তাকে ম্যাচের ৭০ মিনিট পর্যন্ত টিভি স্ক্রিনে না দেখে হতাশ ক্রোয়েট সমর্থকরা।

মাঠের মদ্রিচ, এমবাপ্পেরা যতটা জনপ্রিয়, গ্যালারির কলিন্দা গ্রাবারও তার চেয়ে কিছু কম যান না। কারণ তার ফুটবলপ্রীতি। কারণ ফুটবলারদের সুখ-দুঃখে একাত্ম হয়ে যাওয়া। কারণ প্রেসিডেন্টের 'বর্ম' ছেড়ে শিশুর মতো উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার প্রবণতা। রবিবারের মহারণেও যে গ্যালারিতে তার উজ্জ্বল উপস্থিতি।

আত্যন্ত ফুটবলপ্রেমী। ফুটবলের অন্ধ ভক্ত। আর তিনি যে বিশ্বকাপে বুঁদ, ন্যাটোর গুরুগম্ভীর সম্মেলনের ফাঁকেও বারবার তার প্রমাণ মিলেছে। কখনও বলেছেন, ফাইনালের শুরুর বাঁশি বাজার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছেন না। 

কখনও আবার সোজাসাপ্টা বলে দিয়েছেন, রবিবার আমরা জিতছিই। এমনকী, ন্যাটোর সমাপ্তি ডিনারেও ব্রাসেলস থেকে আলোচনার বল ঠেলে দিয়েছেন মস্কোর দিকে। 

লুঝনিকি স্টেডিয়ামই যেন উঠে এসেছে ডিনার টেবিলে। ফরাসি প্রেসিডেন্টকে মুখের উপরেই বলে দিয়েছেন, ন্যাটোর সম্মেলন সফল হচ্ছেই, কারণ আমরাই জিতবো। এক সময় আবার নিজেই জানিয়েছেন, তিনি নিজেও ছোটবেলায় ফুটবল খেলেছেন। সফল হতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু ফুটবলের প্রতি তার ভালোবাসা, তার অন্তরের টান, এখনও সেই ছোটবেলার মতোই। সেই টানেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিজের দেশের জার্সি বিলিয়েছেন ন্যাটোর ফাঁকেই।   

আর ফুটবলের মাঠে, (বলা ভাল গ্যালারিতে) ক্রোট প্রেসিডেন্ট বরাবরই স্বপ্রতিভ। তা সে সাজগোজে হোক, বা অভিব্যক্তিতে। অধিকাংশ সময়ই গায়ে থাকে দেশের জার্সি। দলের খেলোয়াড়রা বিপক্ষ বক্সে ঢুকলেই তিনি ছটফট করতে থাকেন। আবার গোল খাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলে তার চোখ-মুখই বলে দেয়, যেন পারলে নিজেই মাঠে নেমে পড়েন।

সেই আবেগ থেকেই দেশের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টা খেটে হলেও যারা রাশিয়ায় যেতে চান, তাদের ভিসার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের সর্বময় কর্ত্রীর এমন আবেগ উচ্ছ্বসিত কর্মকার্তারাও প্রাণপাত করেছেন। 

ভিসার জন্য রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বারবার তাগিদ দিয়েছেন। এমনকী, ফিফার কাছেও তিনি নিজে অতিরিক্ত টিকিটের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সব টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ায় সেই আবদার মেটেনি। কিন্তু তাতে উৎসাহে এতটুকুও ভাটা পড়েনি। আর আগেই বলে দিয়েছেন, ফাইনালে হার-জিত যাই হোক, দেশের বীর সন্তানেরা বীরের মর্যাদাই পাবেন। 

জাগ্রেব বিমানবন্দর থেকে সিটি সেন্টার পর্যন্ত বিশাল শোভাযাত্রা করে ফুটবলারদের সংবর্ধনার আয়োজন সারা হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই।

ইতিহাসের সামনে দুই দেশ। ২০ বছর পর দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের মুখে ফ্রান্স। আর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে জিতলে প্রথমবারের জন্য বিশ্বকাপ ছোঁয়ার হাতছানি ক্রোটদের সামনে। 

বিডি প্রতিদিন/১৫ জুলাই ২০১৮/আরাফাত



এই পাতার আরো খবর