মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিএনপি-জামায়াতের আগের ঘটনার বিচার হলে এমন হতো না

আহমেদ আকবর সোবহান, চেয়ারম্যান, বসুন্ধরা গ্রুপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি-জামায়াতের আগের ঘটনার বিচার হলে এমন হতো না

দেশের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তা পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান সাম্প্রতিক নাশকতা প্রসঙ্গে বলেছেন, এর আগেও বিএনপি-জামায়াত অনেক করেছে, বিচার কত দূর হয়েছে জানি না। সেগুলোর বিচার হলে আজকে তারা এসব করার সাহসই পেত না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, আমাদের সবারই সমস্যা আছে। এসব সমস্যার সমাধান পেতে হলে আমাদের সবাইকে এক হতে হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আগুনসন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। না হলে প্রতিদিন নাশকতা হবে, মনে করবে এ দেশে তো কোনো বিচার হয় না। সবাইকে বিচারের আওতায় আনুন। ব্যবসায়ীরা অনেক বড় শক্তি, এ শক্তি আজীবন আপনার পাশে থাকবে ইনশাল্লাহ।

বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীরা সবাই শ্রদ্ধেয়। এ দেশের উন্নয়নে সবার ভূমিকাই অনস্বীকার্য। আপনারা সবাই ধৈর্য ধারণ করুন। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। তিনি বলেন, আমাদের মিডিয়া গ্রুপের অফিসে দু-তিনবার হামলা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান আমাকে বলেছেন, আপনি যে কোনোভাবে মিডিয়াটা রক্ষা করেন। তিনি পুলিশ পাঠিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় সবই করা হয়েছে।

আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, এর আগেও বিএনপি-জামায়াত অনেক কিছু করেছে, জানি না কতদূর বিচার হয়েছে। আমি মনে করি তাদের বিচার হলে আজকে এসব করার সাহসই পেত না। নাশকতার সঙ্গে কারা কারা জড়িত গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবাই জানে।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরকারি সেক্টরের চেয়ে অনেক বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করেছেন, আজকে যারা এখানে বসে আছেন, আমাদের এই বেসরকারি খাতের ব্যবসায়য়ীরা। বেসরকারি সেক্টরের অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আমি নিজে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরে যাই। দ্বারে দ্বারে ঘুরি। আমাদের বাঁচান। ব্যবসায়ীরা ৮০ টাকার ডলার এখন ১২০ টাকায় কিনছেন। এখানে সবারই রক্তক্ষরণ হচ্ছে। কিন্তু আমরা সবাই ধৈর্যশীল। আমরা জানি আমাদের সামনে উন্নয়ন আর উন্নয়ন। আমাদের যে ক্ষতি করেছে হয়তো পাঁচ, সাত, দশ দিন পর কাটিয়ে উঠতে পারব।

আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, আমাদের থেকে বেশি চিন্তা তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) যিনি এসব গড়েছেন, যিনি বাংলাদেশকে এ পর্যায়ে এনেছেন, আমি নিশ্চিত তাঁর ঘুম হয় না। কারফিউ আরও আগে দেওয়া উচিত ছিল। কারফিউটা আরও আগে দেওয়া হলে ভালো হতো। কিন্তু আমি জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোনো দিন চান না, চাইতে পারেন না যে এত এক্সট্রিম লেভেলে চলে যান। তবু এবার বাধ্য হয়েছেন। আমরা ব্যবসায়ীরা অধৈর্য না হয়ে সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। আপনারা এখানে সবাই বড় ব্যবসায়ী। সবাই চিন্তা করেন ১৪ বছর আগে কোথায় ছিলাম, আজকে আমরা কোথায় এসেছি। সাত দিন, ১৫ দিন, এক মাস ব্যবসা বন্ধ থাকলে ইনশাল্লাহ আমাদের কিছু হবে না। কিন্তু এ সন্ত্রাসী-জঙ্গি বাহিনীকে ধ্বংস করতে হবে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যথায় আমরা কেউই আর ব্যবসায়ী হিসেবে টিকে থাকতে পারব না। আমি আবারও বলি, আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। এখানে আমার সামনে যারা আছেন, আপনারা শ্রমিকসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। কোনো শক্তি বাংলাদেশের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না আমি নিশ্চিত। আমরা যত সস্তায় এক্সপোর্ট করি, দুনিয়ার কোনো দেশ এত সস্তায় এক্সপোর্ট করে না। সেজন্য আমাদের ভয়ের কোনো কারণ নাই।

তিনি বলেন, ওদের টার্গেট বড় বড় ব্যবসায়ীদের ধ্বংস করা, দেশের বড় বড় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করা। মেট্রোরেল ধ্বংস করা, পদ্মা সেতু বিনষ্ট করা। এ ১৫ বছরে যত অর্জন সব অর্জন ধ্বংস করে দাও। কিন্তু কোনো লাভ হবে না। আজকে শুধু শেখ হাসিনা একা নন, শেখ হাসিনার সঙ্গে ২০ কোটি মানুষ আমরা সম্পৃক্ত। আমাদের ৪০ কোটি হাত আছে। যা কিছু ক্ষয়ক্ষতি করুক এ ৪০ কোটি হাত নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। প্রধানমন্ত্রী আমাদের নেতৃত্ব দেবেন ইনশাল্লাহ। কোনো শক্তিই আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, আমি একজন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে অনুরোধ জানাই-আমরা কেউ যেন ধৈর্য না হারাই। আমি বিশ্বাস করি ইন্টারনেটের জন্য আপনাদের সমস্যা হচ্ছে, আমারও হচ্ছে। ইন্টারনেটের ব্যবহারে আমি মোটামুটিভাবে ১৪ বছর আগের তুলনায় ১৪ গুণ ওপরে চলে এসেছি। সুতরাং সবারই অসুবিধা। আপনারা এটা সবাই খুব সহজভাবে নেন। এটা যদি আমরা কঠিনভাবে নিই, আমাদের যারা শত্রু তারা মনে করবে আমরা দেশটাকে স্টপ (থামিয়ে) করে দিয়েছি। কোনো অপশক্তি আমাদের স্টপ করতে পারবে না ইনশাল্লাহ। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, আপনার নেতৃত্বের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আপনার প্রতি এ আস্থা-বিশ্বাস থাকবে ইনশাল্লাহ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমার একটাই অনুরোধ-আগুনসন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। না হলে প্রতিদিন নাশকতা হবে, ওরা মনে করবে এ দেশে তো কোনো বিচার হয় না। সবাইকে বিচারের আওতায় আনুন।

সর্বশেষ খবর