২২ মে, ২০২২ ১৭:২১

অধ্যাপক তোফাজ্জল এপিএস ফেলো নির্বাচিত

গাজীপুর প্রতিনিধি

অধ্যাপক তোফাজ্জল এপিএস ফেলো নির্বাচিত

ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (আইবিজিই) এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম আমেরিকান ফাইটোপ্যাথোলজিক্যাল সোসাইটি (এপিএস) এর ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন। বিশ্ব জ্ঞানভাণ্ডারে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রতিবছর ৫-১০ জন বিজ্ঞানীকে এপিএস নতুন ফেলো নির্বাচন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে আধুনিক বায়োটেকনোলজির প্রয়োগে কৃষিতে বিপ্লব সাধনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম। ২০১৬ সালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৮ জেলায় ১৫,০০০ হেক্টর জমিতে ঘটে যাওয়া গমের মহামারীর সংকটকালে তিনিই প্রথম ছত্রাকটির জীবন রহস্য বিশ্লষণের মাধ্যমে গমের শত্রু চিহ্নিত করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ওই যুগান্তকারী গবেষণায় তিনি চারটি মহাদেশের ৩১ জন বিজ্ঞানীকে সম্পৃক্ত করে একটি জাতীয় সমস্যার সমাধান করেন। তার এ আবিষ্কারের ফলে রোগটির মোকাবেলা করার জন্য কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ দেওয়ায় পরবর্তী বছর গম ফসলের ক্ষতি হ্রাস করা সম্ভব হয়।

বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য চরম হুমমি গমের ব্লাস্ট রোগটি মোকাবেলায় তিনি জিন এডিটিং, ন্যানো টেকনোলজি, প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়াসহ আধুনিক বায়োটেকনোলজি প্রয়োগে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছেন। সম্প্রতি, তিনি গমের ব্লাস্ট রোগ দ্রুত শনাক্তকরণের জন্য একটি সহজ জীব প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন, যা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের গম আমদানি-রফতানিতে (সঙ্গনিরোধে), গবেষণায় এবং কৃষকের মাঠে ব্যাপক ব্যবহার হবে। এ ছাড়াও তিনি ধান, গম এবং স্ট্রবেরি-তে রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে সাশ্রয়ী প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া প্রযুক্তি আবিষ্কার করে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ভেষজ উদ্ভিদ এবং অণুজীব থেকে এ পর্যন্ত তিনি ৫০টির অধিক রোগজীবাণু প্রতিরোধী নতুন প্রাকৃতিক যৌগ বা এন্টিবায়োটিক আবিষ্কার করেছেন। 

সম্প্রতি স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের প্লসবায়োলজিতে প্রকাশিত বিজ্ঞানীদের ডাটাবেস সম্পর্কিত এক প্রবন্ধে তিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুই শতাংশ বিজ্ঞানীদের একজন এবং বাংলাদেশে জীবপ্রযুক্তি, কৌলিতত্ত্ব এবং অণুপ্রাণবিজ্ঞানে দেশের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীর স্থান লাভ করেন।

অধ্যাপনা এবং গবেষণায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ইতিপূর্বে অধ্যাপক তোফাজ্জল ২০১৬ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি, ২০২২ সালে বিশ্ব বিজ্ঞান একাডেমি এবং বাংলাদেশ একাডেমি অব এগ্রিকালচার-এর ফেলো নির্বাচিত হন। মৌলিক গবেষণায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ দেশে-বিদেশে তিনি অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। এরমধ্যে জীববিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য জ্যেষ্ঠ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমী স্বর্ণপদক-২০১১, আইডিবি ইনোভেশন এওয়ার্ড-২০১৮, রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ভোকেশনাল এক্সিলেন্স এওয়ার্ড-২০১৭, কমনওয়েলথ ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড-২০১৯, কেআইবি বেস্ট প্রেজেন্টার পুরস্কার-২০১৬, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গবেষণা অ্যাওয়ার্ড এবং জাপানের জেএসবিবিএ শ্রেষ্ঠ তরুণ বিজ্ঞানী পদক-২০০৩ উল্লেখযোগ্য। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর