২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ২৩:০০

শাবিপ্রবিতে র‌্যাগিং: ছাত্রকে যৌনকর্মী সাজতে বাধ্য করা হয়

অনলাইন ডেস্ক

শাবিপ্রবিতে র‌্যাগিং: ছাত্রকে যৌনকর্মী সাজতে বাধ্য করা হয়

শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসের গেটের দৃশ্য

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে সদ্য ভর্তি হওয়া এক শিক্ষার্থীকে পরিচয়পর্বের নামে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা সবাই ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতার অনুসারী।

বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান বহিষ্কারের তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বহিষ্কার আদেশ বলবৎ থাকা অবস্থায় তারা ক্যাম্পাস ও হলে অবস্থান করতে পারবে না।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার রাতে সৈয়দ মুজতবা আলী হলের ১১১ নম্বর কক্ষে পরিচয়পর্বের নামে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ১৬ জন শিক্ষার্থীকে জড়ো করা হয়। ওই সময় নবীন শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়।

ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী  জানান, র‌্যাগিংয়ের সময় শাহপরান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে থাকা ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সবাইকে ডেকে নিয়ে আসেন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আশিক হোসেন। এ সময় পরিচয় হওয়ার কথা বলে নানাভাবে তাদেরকে হেনস্থা করেন সিনিয়ররা।

ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী র‌্যাগিংয়ের রাতকে ‘জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ রাত’ উল্লেখ করে বলেন, ওই রাত ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ রাত। র‌্যাগিংয়ের শিকার হওয়ার পর বাসায় চলে আসি। এখন ক্যাম্পাসে যেতেও ভয় করছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী এই শিক্ষার্থী বলেন,  ‘একজন অন্যজনকে ধর্ষণ করছে তারা ―এমন দৃশ্য দেখাতে বাধ্য করেন। এ ছাড়া যৌনকর্মী সেজে দেহ প্রদর্শন ও খরিদদার ধরার দৃশ্য প্রদর্শন করান, তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের ট্রেনে টাকা নেওয়ার দৃশ্য, কয়েকটি যৌন উত্তেজক গানের উত্তেজক দৃশ্য দেখানোসহ পরিচয় চেয়ে বিভিন্ন শব্দকে পরিবর্তন করে যৌনতা সম্পর্কিত শব্দ যোগ করে বলতে বলেন। বলতে অস্বীকার করলে শারীরিক নির্যাতনের হুমকি দেন, ধমক দিয়ে এসব কাজ করত বাধ্য করান। 

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচজনকে সাময়িক বহিষ্কার করে। বহিষ্কৃতরা হলো- শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. খলিলুর রহমানের অনুসারী আল আমিন, পাপন মিয়া, রিয়াজ হোসেন, ক্যাম্পাস ছাত্রলীগ নেতা সুমন মিয়ার অনুসারী আপন মিয়া ও রসায়ন বিভাগের সভাপতি মেহেদী হাসান স্বাধীনের অনুসারী আশিক হোসেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, সেখানে ছাত্রলীগের কর্মী ছাড়াও বাইরের বিভিন্ন মেসের শিক্ষার্থীরা ছিল। ছাত্রলীগ কখনো র‌্যাগিংয়ের পক্ষে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। একই কথা বলেন মো. ফারহান রুবেল ও মেহেদী হাসান স্বাধীন।

এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, আমরা চিঠি পেয়েছি। চিঠি পাওয়ার পর থেকে কাজ শুরু করে দিয়েছি। তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। অধিকতর তদন্তের পর পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর