শিরোনাম
১৪ জুন, ২০২৩ ১৮:৪৮

‘বহিরাগত’ আখ্যা দিয়ে জাবিতে দুই শিক্ষার্থীকে মারধর

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

‘বহিরাগত’ আখ্যা দিয়ে জাবিতে দুই শিক্ষার্থীকে মারধর

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধ্যয়নরত দুই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের ভেতরে ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী অপূর্ব সরকার, ম্যানেজমেন্ট স্ট্যাডিস বিভাগের ৪৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাসিম খান ও কাজী হাসান আল বান্না। এদের মধ্যে নাসিম খান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক ছাত্র। এছাড়া, অপূর্ব সরকার শহীদ রফিক-জব্বার হলের এবং কাজী হাসান আল বান্না মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।

মারধরের ঘটনায় বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এর আগে, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে মারধরের ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী খান মোহাম্মাদ ইবতেহাল ও ফারাবী আকাশ। এদের মধ্যে ইবতেহাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ নম্বর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ফারাবী আকাশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র।

অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ইবতেহাল গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ নম্বর হলে ওঠেন। এর আগে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ইসলামনগর এলাকায় একটি মেসে থাকতেন। মেস ছেড়ে দেওয়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে ওইদিন কথা হচ্ছিল। এ সময়, হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে অভিযুক্ত তিনজনসহ আরও কয়েকজন ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে ইবতেহাল ও ফারাবী আকাশের ওপরে অতর্কিত হামলা করেন। মারধরে বাধা দিতে গেলে পাবলিক হেল্থ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৬ ব্যাচের ছাত্রী নদীকে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী ইবতেহাল বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। কিন্তু আমাকে বহিরাগত তকমা দিয়ে জনসম্মুখে এভাবে মারা হলো। আমি মারধরকারীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।

মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নাসিম খান বলেন, ‘মারধর করেছি আমি প্রক্টরের কাছে বক্তব্য দেব। আপনার কাছে কোনো বক্তব্য দেব না।’

আরেক অভিযুক্ত অপূর্ব সরকার বলেন, ‘ও একজন বহিরাগত হয়ে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার কীভাবে করে? এজন্য সবাই তাকে মারধর করেছে।’ তবে নিয়মিত শিক্ষার্থী হওয়ার পরেও তাকে বহিরাগত আখ্যা দিয়ে মারধর কেন করা হলো এ প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

মারধরের সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করে ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং এর প্রভাষক মো. মুনীর মাহমুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থীকে এভাবে বহিরাগত বলে মারধর করা মারাত্মক অন্যায়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত হতে পারে না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,  গতকাল (মঙ্গলবার) ভুক্তভোগীরা মোবাইলে আমাকে জানিয়েছে।  আজ (বুধবার) তারা সরাসরি লিখিত অভিযোগ পত্র দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে বহিরাগত বলে মারধর করা হবে এটাতো ঠিক না। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর