১৮ জুন, ২০২৩ ২১:০২

রুম দখল নিয়ে ঢাবির হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

রুম দখল নিয়ে ঢাবির হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা’ সূর্যসেন হলে কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। দেখা গেছে দেশীয় অস্ত্রের মহড়াও। সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। 

শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হলের ২০৪ নম্বর রুমকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে যাওয়া দুইজন হলেন জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের মো, সুজন (শয়ন গ্রুপ) ও যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের জাবের বিন আমিন। 

পরে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত সূর্যসেন হলে এসে বিষয়টির মীমাংসার জন্য বসেন। পরে রাত পৌনে ৩টার দিকে দুই পক্ষের সাথে কথা বলে নিজেদের নেতাকর্মীদের রুমে ফিরে যেতে বলেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাত ১১টা থেকে রুম দখল নিয়ে মহড়া দিচ্ছিলো হলের প্রেসিডেন্ট গ্রুপ (শয়নের অনুসারী)। পরে ১২টার পরে ২০৪ নং রুমে শয়নের অনুসারীরা এসে আবাসিক শিক্ষার্থী মোস্তফা ইকবার হৃদয় ও জাহিদ হাসানের (সৈকতের অনুসারী গ্রুপ) জিনিসপত্র রুম থেকে ফেলে দিয়ে বের হয়ে যেতে বলের। দীর্ঘক্ষণ উত্তেজনা চলে এ নিয়ে। রাত সোয়া ১টার দিকে সৈকতের অনুসারীরা দলবদ্ধ হয়ে গিয়ে তাদের রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এই সময় হলের অন্যদিক থেকে শয়নের গ্রুপের ৩০-৪০ জন নেতাকর্মীরা লাঠি, স্টাম্প ইত্যাদি দিয়ে আক্রমণ করে। এতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। আহতদের মধ্যে দুইজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

সূর্যসেন হলে শয়নের গ্রুপের নেতৃত্ব দেন মনির হোসেন, তুষার হোসেন, ওমর ফারুক। অন্যদিকে সৈকতের গ্রুপের নেতৃত্ব দেন আব্দুল্লাহ খান শৈশব ও যুবরাজ।  
মারামারির পর হল গেইটে অবস্থান নেয় দুই পক্ষই। এক পক্ষ অপর পক্ষকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান ও উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। পরে রাত পৌনে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত হলে এসে দুই পক্ষকে শান্ত করেন। 

সৈকত অনুসারী নেতাকর্মীরা বলেন, ওরা কিছুদিন ধরেই আমাদের নিজেদের বরাদ্দ পাওয়া রুমগুলো দখলে নিতে চাচ্ছে। আজকেও ২০৪ নম্বর রুম দখল করতে আসে। রুম থেকে জিনিসপত্র ফেলে দেয়। পরে আমরা গিয়ে বাধা দিলে এক পর্যায়ে আমাদের উপর হামলা শুরু করে। আমরা অনেকেই আহত হয়েছি।

অন্যদিকে শয়নের অনুসারীরা জানান, হলে ওরা বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। ওরা আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাদের কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, গতকালের (শনিবার রাত) ঘটনায় আমি সভাপতির (শয়ন) সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করার চেষ্টা করেছি। তবে এ ধরনের ঘটনায় যারা উস্কানি দেয় তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে। যেহেতু হলগুলোতে আসন সংকট রয়েছে। আমরা উপাচার্যের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা করব।

এদিকে, শহীদুল্লাহ হলে শয়নের অনুসারীর নামে বরাদ্দ রুম দখল করতে যায় সৈকতের অনুসারীরা। এতে দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

এ বিষয়ে শহীদুল্লাহ হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জাবেদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সংঘর্ষ নয়, একটু উত্তেজনা ছিল। সিট নিয়ে ঝামেলা ছিল। এটা রাতেই মীমাংসা হয়েছে। তবে, ঘটনার বিষয়ে জানতে সুর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভুইয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর