রবীন্দ্রোত্তর কালের শ্রেষ্ঠ নাট্যকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ৭৪ তম জয়ন্তী উৎসব নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার সকাল ১১টায় একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে জাবির নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সেলিম আল দীনের সমাধিতে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তারা।

এতে চলচ্চিত্র অভিনেতা ও পরিচালক শহীদুজ্জামান সেলিম, জাবির কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ইস্রাফিল আহমেদসহ দেশের বিভিন্ন খ্যাতিমান নাট্যকর্মী অংশ নেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, স্বপ্নদল, আরশিনগর, ঢাকা থিয়েটার, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, অন্বিতা সেলিম আল দীন বিদ্যাপীঠ, শহীদ টিটু থিয়েটার, বাংলাদেশ পুতুলনাট্য গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র, তালুকনগর থিয়েটারসহ বিভিন্ন নাট্য সংগঠন সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় আয়োজকরা।

জাবির নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সভাপতি ইস্রাফিল আহমেদ বলেন, সেলিম আল দীনের ৭৪তম জন্মজয়ন্তীতে আমরা তাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি। দিনব্যাপী আয়োজনের মাধ্যমে সেলিম আল দীনের নাট্যদর্শন আরও অধিক মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে পারব বলে আমাদের বিশ্বাস।

দিনের শুরুতে সকাল ৯টায় পুরাতন কলা ভবনে ‘ওরে ভোলা মন’ নাটকের গান ও নৃত্য পরিবেশন করা হয়। সকাল সাড়ে ১১টায় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে জাবি থেকে অংশগ্রহণকারীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়৷

দুপুর ১২টায় ‘বারীণ ঘোষের ক্যামেরায় সেলিম আল দীন’ শীর্ষক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এরপর অধ্যাপক ইউসুফ হাসান অর্কের সভাপতিত্বে ‘সেলিম আল দীনের কথানাট্য চাকা: মঞ্চে ও চলচ্চিত্রে’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ফাহমিদা আক্তার। এ সময় বক্তব্য রাখেন জাবির অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামালউদ্দিন কবির। বিকাল ৩টায় পুরাতন কলা ভবনের সেট ল্যাবে চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। 

প্রসঙ্গত, সেলিম আল দীন ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। নাট্যচর্চার জন্য ঢাকা থিয়েটার প্রতিষ্ঠাতেও তার ভূমিকা ছিল। সারাদেশে নাট্য আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিতে ১৯৮১-৮২ সালে আরেক নাট্যযোদ্ধা নাসিরউদ্দীন ইউসুফের সঙ্গে গড়ে তোলেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার। ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি তিনি পরলোকগমন করেন।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল