১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৯:২৪
তাইওয়ানের দ্বিতীয় ইউনূস ক্যাম্প

তিন শূন্যের পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে ২৬ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ

অনলাইন ডেস্ক

তিন শূন্যের পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে ২৬ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ

তাইওয়ানের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত ৬০ জন শিক্ষার্থী ২য় ইউনূস ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করে

ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস ফাউন্ডেশন, তাইওয়ানের আয়োজনে জানুয়ারির শেষের দিকে ডং শিহ ফরেস্ট গার্ডেনে দ্বিতীয় ইউনূস ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

তাইওয়ানের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‌‌‘থি-জিরো অ্যাকশন’ থিম— শূন্য কার্বন নির্গমন, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীভূতকরণ, এবং শূন্য বেকারত্বকে কেন্দ্র করে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ইউনূস ক্যাম্পের উদ্দেশ্য ছিল এই লক্ষ্যগুলোর দিকে অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে অংশগ্রহণকারীদের ক্ষমতায়ন করা।

তাইওয়ানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ৬০ জন শিক্ষার্থী ছোটো ছোটো দল গঠন করে সামাজিক সমস্যা নিয়ে আলোচনায় নিযুক্ত হন। নোবেল  বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসসহ ছয়জন বিশেষজ্ঞ বক্তা তাদের এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন, যারা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি দিকনির্দেশনামূলক বক্তৃতা করেন। 

প্রফেসর ইউনূস তার তরুণ বয়সে বিশ্ব জাম্বুরী, কানাডায় অংশগ্রহণসহ নিজের অন্যান্য অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন, যা তাকে মানুষের জন্য কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি তরুণদের এই ক্যাম্প উপভোগ করার সাথে সাথে থ্রি জিরো ভিশনের ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখা করেন।

বক্তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন ডিজাইন প্রস্তুত, সামাজিক উদ্ভাবন, যোগাযোগ দক্ষতা, তহবিল সংগ্রহ এবং উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করা, ইত্যাদির বিষয়ে কথা বলেন, যা অংশগ্রহণকারীদের ‘তিন শূন্য’ গোলের সাথে সামঞ্জসপূর্ণ বাস্তব সমাধান খুঁজে বের করতে অনুপ্রাণিত করে।

এই ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী দলগুলো বিভিন্ন সৃজনশীল প্রোজেক্ট উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। বিজয়ী দলটি পাড়ার দোকানগুলোকে পরিবেশগতভাবে বা সামাজিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ ‘হাব’ করার বিষয়ে একটি সৃজনশীল প্রস্তাব উপস্থাপন করে। অন্য প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে ছিল পুনঃব্যবহারযোগ্য পাত্র ব্যবহার জনপ্রিয় করার জন্য প্রচার এবং গৃহহীনদের জন্য অব্যবহৃত সম্পদ ব্যবহার করার ওপর দৃষ্টি আকর্ষণ করা।

ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস তাইওয়ান ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ফিলিপা সাই অংশগ্রহণকারীদের তাদের নিজ নিজ সামাজিক গণ্ডিতে আলোকিত মানুষ হতে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশের কবি রবি ঠাকুরের কবিতা উদ্ধৃত করে সকলকে শুনান। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী প্রফেসর ইউনূসের চেতনাকে মূর্ত করে সম্মিলিতভাবে তিন শূন্যের পৃথিবীর লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালাবেন বলে ফিলিপা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস তাইওয়ান ফাউন্ডেশনের সিইও জুনো ওয়াং ইউনূস ক্যাম্পের পরিকল্পনার ও পরিচালনার নেতৃত্ব দেন। ক্যাম্পের লক্ষ্য ছিল  সৃষ্টিশীল চিন্তাভাবনা, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ইউনূসের তিন শূন্যের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করা।

ক্যাম্পের প্রাক্তন অংশগ্রহণকারীরা, এখন যারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগদান করেছেন, তারা সামাজিক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, টেকসই পৃথিবী গড়ার জ্ঞান অর্জন এবং বিশেষজ্ঞদের সাথে আলাপচারিতার মাধ্যমে ক্যাম্পের মূল্য তুলে ধরেন। অনেকে পরের বছরের ক্যাম্পের জন্য স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার আগ্রহ জানানোসহ ক্রমাগতভাবে এর সঙ্গে জড়িত থাকার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর