১৩ মে, ২০২৪ ১৯:৫৬

৮ বছর পর জাবিতে ডিন নির্বাচন ১৫ মে, অবৈধভাবে প্রার্থিতা বাতিলের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

৮ বছর পর জাবিতে ডিন নির্বাচন ১৫ মে, অবৈধভাবে প্রার্থিতা বাতিলের অভিযোগ

দীর্ঘ আট বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বিভিন্ন অনুষদের ডিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ১৫ মে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাবে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ২০১৬ সালের ১০ মে জাবিতে ডিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার (১৩ মে) রিটার্নিং অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

এ বছর জাবিতে ৬টি অনুষদের মধ্যে শুধু সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ, কলা ও মানবিকী অনুষদ এবং জীববিজ্ঞান অনুষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাকি ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, এবং আইন অনুষদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থিতা না থাকায় সেগুলোতে নির্বাচন হবে না। এর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক নিগার সুলতানা এবং আইন অনুষদে আইন ও বিচার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাপস কুমার দাসকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। 

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী পন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ এবং বিএনপি ও আওয়ামী পন্থি একাংশের শিক্ষকদের সংগঠন ‘শিক্ষক ঐক্য পরিষদ’ এককভাবে তাদের প্যানেল ঘোষণা করেছে। যেখানে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের পক্ষে সমাজবিজ্ঞান অনুষদে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক বশির আহমেদ, গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ, কলা ও মানবিকী অনুষদে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আরিফা সুলতানা এবং জীব বিজ্ঞান অনুষদে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. নুহু আলম নির্বাচন করবেন।

অন্যদিকে, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার মোহাম্মদ আশরাফুল মুনিম, গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদে গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রব, জীববিজ্ঞান অনুষদে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের হয়ে নির্বাচন করবেন।

এছাড়া নির্বাচনে কলা ও মানবিকী অনুষদে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক এবং গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তপন কুমার সাহা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন।

এদিকে, সম্প্রতি আসন্ন ডিন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রার্থিতা বাতিল ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক ঐক্য পরিষদের শিক্ষকরা। তাদের দাবি, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে প্রশাসনের আজ্ঞাবহ ব্যক্তির জয় নিশ্চিত করতে ৮ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র অবৈধভাবে বাতিল ঘোষণা করেছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জাবির রেজিস্ট্রার।

এ বিষয়ে শিক্ষক ঐক্য পরিষদের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মনোনয়ন ফরমে ভুল থাকলে প্রার্থীদের তা সংশোধনের সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এরকম কোনো সুযোগ না দিয়ে মনোনয়ন বাতিল করা ঠিক হয়নি।

ভুল সংশোধনের সুযোগ না দিয়ে একসাথে একটি অনুষদের ৮ জন শিক্ষকের প্রার্থিতা বাতিল হঠকারী ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার।

নিজের মনোনয়নপত্র বাতিলের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের বর্তমান ডিন অধ্যাপক নীলাঞ্জন কুমার সাহা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মনোনয়ন ফরমে একজন শিক্ষক সর্বাধিক একজন প্রার্থীর প্রস্তাবক বা সমর্থক হত পারবে এটার স্পষ্টতা নিয়ে কিছুটা ঝামেলা হয়েছিল। পরে এটা সংশোধনের কোনো সুযোগ না দিয়ে আমাদের ৮ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর বিরুদ্ধে আমরা কয়েকজন উপাচার্য বরাবর আপিলও করেছিলাম। কিন্তু উপাচার্য আমাদেরকে কোনো সুযোগ না দিয়ে আপিল খারিজ করে দিয়েছে। এখনতো আর কিছু করার নেই।

তবে এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও ডিন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু হাসান। তিনি এ বিষয়ে বলেন, সর্বমোট ৩০ জন শিক্ষক ডিন নির্বাচনে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাদের মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ৮ জন নির্বাচনের ‘বিধি ১.১২’ যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। বাকি ১১ জন ছাড়া সবাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এক্ষেত্রে আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বরং যদি নির্বাচন সংক্রান্ত অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন না হতো তাহলে আমার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতো। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর