২৭ মে, ২০২৪ ২৩:৪০

‘স্পর্শকাতর ঘটনায়’ জবির মসজিদের খতিবের বিরুদ্ধে তদন্ত

অনলাইন ডেস্ক

‘স্পর্শকাতর ঘটনায়’ জবির মসজিদের খতিবের বিরুদ্ধে তদন্ত

'স্পর্শকাতর ঘটনায়' জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব সালাহউদ্দীন আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ৫ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়। 

আদেশে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী রাত ১১ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত অবস্থান ও ঘুমানো এবং ইমামের দায়িত্ব অবহেলার তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে ৫ জনকে দায়িত্ব দেয়া হলো। এতে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম, মো. লুৎফর রহমানকে আহ্বায়ক ও সহকারী প্রক্টর খালিদ সাইফুল্লাহকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। সদস্য হিসেবে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. পারভীন আক্তার জেমী, আইসিটি সেলের পরিচালক ড. আমিনুল ইসলাম ও একাউন্টিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক  ড. এএনএম আসাদুজ্জামান ফকিরকে রাখা হয়েছে। 

বিস্তারিত ঘটনার বিষয়ে জানতে প্রশ্ন করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, মসজিদের খতিব সালাহউদ্দীনের বিরুদ্ধে মসজিদের 'স্পর্শকাতর' একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান থাকায় সহকারী ইমামকে নামাজ পড়ানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। 

মেয়েদের রাতে মসজিদে নামাজ না পড়ার কোনো নির্দেশনা আছে কিনা প্রশ্নে প্রক্টর আরো বলেন, ঘটনা সেন্সিটিভ বলে সাময়িক সময়ের জন্য এশার নামাজে নিষেধ ছিল। এখন আগের মতো রাতে এশার সময়ও মেয়েরা মসজিদে নামাজ পড়তে পারবে। কোনো বিধিনিষেধ নেই।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি মসজিদে এক ছাত্রীকে একা রাত ১১টার দিকে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রক্টরিয়াল বডি বিষয়টি জানার পর বলেন- তারা আসার পর ওই ছাত্রীকে মসজিদ ছাড়তে বলেন। তবে খতিব সালাহউদ্দীন অসুস্থ অবস্থায় থাকা ওই ছাত্রীকে তড়িঘড়ি করে বের করে দেন। এ বিষয়ে প্রক্টর পরেরদিন ঘটনা জানতে খতিবকে অফিসে তলব করলেও তিনি আসেননি। 

এর আগে, খতিব সালাহউদ্দীনের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ শোনা যায়। এর মধ্যে মসজিদের পাশে বহু বছরের পুরনো একটি বড় কাঠলিচু গাছ নিজ ইচ্ছায় প্রশাসনের কাউকে না জানিয়ে রাতের আধারে কাটেন তিনি। লিচু পাড়ার জন্য বাচ্চারা ঢিল দেয়ায় ও মসজিদের টিনে শব্দ হওয়ায় তিনি গাছ কাটেন বলে দাবি করেন। এ গাছ কাটা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা সমালোচনা করে। কিন্তু সাবেক ট্রেজারার ড. কামালউদ্দিন আহমদ ও তার পিএস আমিনুল ইসলামের জন্য বিচারের বদলে ওই যাত্রা বেঁচে যান তিনি। 

এছাড়া ২০১৩ সালে খতিব সালাহউদ্দিন আহমেদ তারাবি নামাজের ইমামতি করার সময় কোরআন তেলাওয়াতের ভুল ধরার জন্য অপবাদ দিয়ে সহকারি ইমাম আনোয়ার হোসেন ও মুয়াজ্জিন ইমদাদুল হককে অন্য দপ্তরে বদলি করিয়ে দেন। ওই সহকারী ইমাম ও মুয়াজ্জিন ১১ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরে রয়েছেন।

অন্যদিকে, সেই সময় থেকে মসজিদের সহকারী ইমাম হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার (পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে সহকারী লাইব্রেরিয়ান) শেখ মো. সালাহ উদ্দিনকে ও মুয়াজ্জিন হিসেবে বাসের হেলপার মো. হাসানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ভুক্তভোগী সহকারী ইমাম আনোয়ার মুয়াজ্জিন ইমদাদুল হক তাদের প্রতি খতিবের এমন আচরণের বিষয়টি জানান। 

তদন্ত কমিটির ঘটনার বিষয়ে মসজিদের খতিব সালাহউদ্দীন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমি কোনো বিষয়ে কথা বলতে চাই না। লিচু গাছ মসজিদের টিনে শব্দ হয় বলে কেটেছি।

বিডি-প্রতিদিন/শআ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর