১ জুলাই, ২০২৪ ১৯:০৩

শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে অচল জাবি

জাবি প্রতিনিধি

শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে অচল জাবি

গত কয়েকদিন ধরে ধারাবাহিক আন্দোলনের পরও সর্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ বাতিল না করায় সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষকরা। এবার তাদের আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সব বিভাগের ও দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জাবির কলা ও মানবিক অনুষদের সামনে কর্মকর্তারা এবং নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মচারীরা অবস্থান নিয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন।

এদিকে, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ আন্দোলনের সাথে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোটা পুনর্বহাল বিরোধী আন্দোলন।

ওইদিন বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি জাবির প্রধান সড়ক হয়ে ডেইরি গেইট সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়।

পরে সেখানে ১০ মিনিট মহাসড়কের উভয় লেন বন্ধ করে প্রতীকী অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময়, সড়কটির ঢাকা ও আরিচাগামী উভয় লেনে সবধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন বিক্ষুব্ধরা।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ চতুর্থমুখী আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রায় সবধরনের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ যেন কেউ ঘোষণা দিয়ে অচল করে দিলো পুরো বিশ্ববিদ্যালয়।

সরেজমিন দেখা যায়, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকা বিভাগগুলোর ক্লাস রুমে ঝুলছে তালা। খোলার দিনেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনগুলোতে নেই সেই চিরচেনা ব্যস্ততা। বিভাগের অফিস কক্ষ, প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের কক্ষ সবই বন্ধ রয়েছে। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বর, টিএসসি, পরিবহন চত্বর, মুরাদ চত্বর, বটতলা সবজায়গায় সুনসান নীরবতা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা অচল হয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী সরকারি মহলের হঠকারী সিদ্ধান্ত। যতদিন সরকার প্রত্যয় স্কিম বাতিল করবে না ততদিন পর্যন্ত আমাদের এ সর্বাত্মক কর্মবিরতি কর্মসূচি চলবে।

প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন জাবি অফিসার সমিতির সভাপতি মো. আব্দুর রহমান বাবুল।

এদিকে, কোটা পুনর্বহাল বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। অতি দ্রুত কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিল না করা হলে আগামী ৪ তারিখ থেকে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো। প্রয়োজনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে ঢাকাকে অচল করে দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাবির সাময়িক প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবির বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা আন্দোলন করছে, তাদের প্রত্যেকের জায়গা থেকে তা যৌক্তিক। এখন পর্যন্ত আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর