শিরোনাম
১৮ আগস্ট, ২০২৪ ২০:৫১

ধূপখোলা মাঠ আবার ফিরে পেল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

জবি প্রতিবেদক

ধূপখোলা মাঠ আবার ফিরে পেল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দখলকৃত একমাত্র কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ধূপখোলা উদ্ধার করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় দখলকৃত মাঠটি আজ থেকে পুনরায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ হিসেবে বহাল থাকবে।

রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে মাঠটি বুঝিয়ে দেন ঢাকার জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থীসহ জেলা প্রশাসকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

মাঠ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ঢাকার জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, আমি প্রথমে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমাদের বিখ্যাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর উদ্যোগকে। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সরকারি খাসজমির এই মাঠ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবহার করতে পারছিল না। পুনর্দখলের মাধ্যমে আজকে ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হলো। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলবো, এখানে একটি স্থায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেওয়ার জন্য।

আনিসুর রহমান আরও বলেন, 'এখানে মোট ৫ দশমিক ৩২ একর জায়গা রয়েছে, তার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে ৪ দশমিক ৫০ একর জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হলো। বাকি যে জায়গাটা রয়েছে, সেটা মূল মাঠের সাইডে যা ইস্টার্ন ক্লাব দখল করে রেখেছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী বাকিটুকুর ব্যবস্থা নেবো।’ 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, এ মাঠটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতো, কিন্তু কী কারণে সেটা বেহাত হয়ে গিয়েছিল সে কারণ আমি আজও খুঁজে পাই না। শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসককে মাঠটির বিষয়ে জানালে প্রশাসন কিন্তু সে দাবি মেনে নিয়ে আজ মাঠটি বুঝিয়ে দিল। 

কোষাধ্যক্ষ আরও বলেন, আজকে থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মাঠটি ব্যবহারের সুযোগ পাওয়ায় ঢাকা জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি যেসব শিক্ষার্থী এই উদ্যোগ নিয়েছে, তাদেরও ধন্যবাদ জানাই। আমরা দ্রুত এখানে একটি টুর্নামেন্টের আয়োজন করবো।

উল্লেখ্য, গত ২০২১ সালের জুনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মার্কেট নির্মাণের শঙ্কায় ডিএসসিসিকে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে সিটি মেয়রের সঙ্গে দেখা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে কোনো স্থাপনা নির্মাণ না করার আশ্বাস দেওয়া হয়। সে সময় খেলার মাঠ থেকে খুঁটি সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু ২ অক্টোবর গভীর রাতে আবার পুরো মাঠ ঘিরে রাখা হয়। মাঠের গোলপোস্ট ও সীমানা প্রাচীরগুলো তুলে ফেলে সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীকালে ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর ধূপখোলা মাঠটিকে আধুনিকায়ন করে উদ্বোধন করেন ফজলে নূর তাপস। 

সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবি করেছিল, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আশ্বাস দিলেও তাদের না জানিয়েই মাঠে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কাজ বন্ধ করতে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

১৯৮৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার নিজস্ব কোনো মাঠ না থাকায় ধূপখোলা খেলার মাঠটি তিন ভাগ করেন। এর মধ্যে এক ভাগ তৎকালীন সরকারি জগন্নাথ কলেজকে ব্যবহারের জন্য মৌখিকভাবে অনুমতি দেন। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটির খেলার মাঠ হিসেবে ধূপখোলা মাঠটিকে ব্যবহার করছে। এই মাঠেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর