জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেছেন, "শিক্ষার্থীদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।" শনিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সিনেট হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলার কলেজসমূহের অধ্যক্ষ/উপাধ্যক্ষ ও শিক্ষকগণের জন্য আয়োজিত "কোর ট্রেইনার ট্রেনিং প্রোগ্রাম ফর কলেজ টিচার্স অন মেন্টাল হেলথ অ্যাওয়ারনেস" শীর্ষক ৪ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য এ কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, "মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যা দূর করে মানসিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরে সারাদেশে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ট্রমা কাজ করছে, তার থেকে পরিত্রাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হচ্ছে এ ধরনের প্রশিক্ষণ আয়োজন করা।"
তিনি আরও বলেন, "এবারের প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য একটু ভিন্ন। আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিটি কলেজে অন্তত একজন করে কো-ট্রেইনার তৈরি করতে চাই, যাতে তারা তাদের কলেজে গিয়ে অন্যান্য শিক্ষকদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে পারে। পর্যায়ক্রমে সেই শিক্ষকগণ তার ক্লাসের শিক্ষার্থীদের আমাদের নির্দেশনা মোতাবেক মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করতে পারে।"
প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ আরও যোগ করেন, "আমরা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শিক্ষকদের মানসিক স্বাস্থ্যকেও খুব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে কলেজসমূহে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির বিপ্লব ঘটানোর আশা রাখি।"
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহর সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, "শুধুমাত্র শিক্ষার্থী সংখ্যার দিক থেকে নয়, শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির মাধ্যমে আন্তর্জাতিকমানের মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্রেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে বৃহত্তর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এবং সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. ফকির রফিকুল আলম এবং উপাচার্যের দপ্তরের পরিচালক ও সচিব এবং রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ আমিনুল আক্তার। সমাপনী অনুষ্ঠান তত্ত্বাবধানে ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশিক্ষণ দপ্তরের পরিচালক সালমা পারভীন।
৪ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী কোর্স অ্যাডভাইজার এবং সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান কোর্স কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অন্যান্য রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের প্রভাষক লিজা আক্তার এবং মাল্টিডিসিপ্লিনারি ট্রেনিং সেন্টারের চাইল্ড সাইকোলজি বিভাগের সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ড. ফাইজা আহমেদ।
উল্লেখ্য, এই প্রশিক্ষণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলার কলেজসমূহের ৫৬ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গত ২৩ এপ্রিল থেকে শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলেছে। অনুষ্ঠান শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সার্টিফিকেট বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের।
বিডি প্রতিদিন/আশিক