শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৩ ০০:০০ টা

ডিউটি যখন নাইট শিফটে

ডিউটি যখন নাইট শিফটে

রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা। এটাই আসলাম সাহেবের অফিস টাইম। অবাক হওয়ার কিছু নেই, কারণ তিনি চাকরি করেন বিপিওতে। যেহেতু ইউএসএ'র ক্লায়েন্টদের হয়ে ওদের কাজ করতে হয়, সে জন্য ওখানে যে সময় দিন তখনই কাজ করতে হয় আসলামের অফিসের সবাইকে। অর্থাৎ যত কাজ সবই রাতে। প্রথম প্রথম বেশ মজাই লাগত, রাতভর হইচই করতে। রাত ২টার সময় ক্যাফেটেরিয়ায় গিয়ে সমুচা আর কফি খেতে। সকালে ঢুলুঢুলু চোখে বাড়ি ফিরেই ঘুমিয়ে পড়তে। এ ছাড়া অন্যান্য বন্ধু যেসব চাকরি করছে তার তুলনায় তার কাজটা আনকনভেনশনাল ভেবেই তিনি বেশ তৃপ্তি পেতেন। স্টার্টিং স্যালারিও অন্য চাকরির তুলনায় রীতিমতো ভালো। আসলাম তো তার কাজ নিয়ে খুশি কিন্তু অন্যদের কথাও তো ভাবতে হবে। যার সঙ্গেই দেখা হয় সেই বলে, রাত জেগে জেগে চোখের তলায় কালি পড়ে গেছে। মা-বাবা সব সময় শঙ্কিত থাকেন। এ ছাড়া দিনো একটু বেশি পরিশ্রম হলেই রাতে ঘুম পেয়ে যায়। কিছুতেই আর কাজে মন বসে না। ছেলে বা মেয়ে কেউই এখন আর নাইট শিফটে নিজেকে নিয়োজিত করতে চান না। তারপরও অফিসের চাহিদা পূরণে নাইট শিফট করতেই হয়। সঙ্গে থাকে ক্যারিয়ারের চাপ। শুধু বিপিও কেন মিডিয়া, ইনফরমেশন , ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের মতো প্রফেশনাল ফিল্ডে যারা কাজ করেন, রাত জেগে কাজ করাটা তাদের দৈনন্দিন রুটিনের অন্তর্গত। নাইট শিফটের কাজ সামলানোর জন্য পরামর্শ-

কী করবেন : পরপর ৪-৫ দিনের বেশি নাইট শিফটে কাজ করবেন না। এতে নর্মাল স্লিপ প্যাটার্ন বিঘি্নত হয়। ব্যাঘাত ঘটে স্বাস্থ্যের। টানা নাইট শিফটে ডিউটি করার পর অবশ্যই এক দিন পরিপূর্ণ বিশ্রাম নেবেন।

* নাইট শিফটে দীর্ঘক্ষণ কাজ করতে হলে খিদে তো পাবেই। সবচেয়ে ভালো হয় বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে যেতে পারলে। একান্তই যদি বাইরের খাবার খেতে হয়, তা হলে মাংস এবং ডিম অ্যাভয়েড করুন। কারণ রাতে আমাদের হজমের প্রক্রিয়ার গতি কমে আসে, ভারী খাবার সহজে হজম হয় না। প্রতিদিন একই সময়ে খেয়ে নিলে অবশ্য হজমের গোলমাল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

* নাইট শিফটে কাজ করেন বলে বন্ধু-বান্ধব, আত্দীয়-স্বজন থেকে পুরোপুরি কাট অফ হয়ে যাবেন, এ ধারণা ভুল। দিনের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট সময় ঘুমের জন্য বরাদ্দ করে, অন্য সময়ে সোশালাইজ করুন। সব সময় মিট করতে না পারলেও ফোন বা অনলাইন চ্যাট করে গল্প করতে পারেন।

* নাইট শিফটে কাজ করার ক্ষেত্রে সিকিউরিটি একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দেয়। সাধারণত অফিস থেকেই গাড়ির বন্দোবস্ত করা হয়। তবে চেষ্টা করুন সবার প্রথমে গাড়িতে না উঠতে এবং শেষে না নামতে। কোনো সময়ে যদি মনে হয় আপনাকে কেউ হেনস্থা করছে, বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে কর্তৃপক্ষকে জানান।

* নাইট শিফটের পরে বাড়ি ফিরে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমোতে যান। বেশি দেরি করলে ঘুম আসবে না, আর শোয়ার সময় আই ক্যাপ পরে নিন। সুতরাং নাইট শিফট ডিউটিকে ভয় না পেয়ে বরং উপভোগ্য করে তুলুন।

 

 

সর্বশেষ খবর