রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

ম্যানেজার না ম্যানেজমেন্ট?

শামছুল হক রাসেল

ম্যানেজার না ম্যানেজমেন্ট?

ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পড়াশোনার চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এরকম কোর্স সম্পন্ন করে খুব সহজেই ভালো বেতনের চাকরিতে প্রবেশ করা যায়। ফলে আগ্রহটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই ম্যানেজমেন্ট নিয়ে অনেকের স্বচ্ছ ধারণা নেই। ফলে তারা আগ্রহ দেখায় কম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে কোনো ব্যবসার মূলমন্ত্র দক্ষ ম্যানেজমেন্ট। কেউ কেউ আবার মনে করেন যে, ম্যানেজার মানেই দক্ষ ম্যানেজমেন্ট। ম্যানেজার ও ম্যানেজমেন্টের যেমন সম্পর্ক রয়েছে তেমনি রয়েছে পার্থক্য। এ পার্থক্যটা বুঝতে পারলেই যে কোনো কোম্পানী হয় গতিশীল। বেগবান হয় তাদের অগ্রযাত্রা। মূলত ম্যানেমেন্টের ওপর নির্ভর করেই একজন ম্যানেজার তার কর্মপন্থা বিকশিত করেন।

মনে করুন একটি কোম্পানি প্রোডাক্ট (যেমন- সাবান, তেল, বডি লোশন ইত্যাদি) তৈরি করে। এরপর তা বিক্রি করে। তৈরি করার খরচ আর বিক্রি করার দাম, এ দুইয়ের পার্থক্যটাই হলো ব্যবসার লাভ। আর তাই ক্রেতাদের খুশি রেখে যতটা সম্ভব আয় বাড়ানো আর চিন্তাভাবনা করে সাধ্য মতো ব্যয় কমানো এটাই যে কোনো ব্যবসার লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টাকেই একটা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা বা ম্যানেজমেন্ট বলে।

এমনকি ব্যবসা পরিচালনার বিভিন্ন কার্যক্রম নির্ভর করে ম্যানেজমেন্টর উপর । যদি কেউ মেশিন তৈরি করে, তা হলে তার পরিচালনা করার ধরনটা এক রকম হবে; কেউ যদি হোটেল চালায়, তা হলে আর এক রকম হবে; আবার কেউ যদি দাঁতের মাজন বা কাপড় কাচার সাবান তৈরি করে, তা হলে সেটা বেশ অন্য রকম হবে। যে কোনো কোম্পানীর পণ্য উৎপাদন থেকে বিক্রি পর্যন্ত একটু নজর দিলে ম্যানেজমেন্টের বিভিন্ন দিক খুব সহজেই অনুভব করা যায়। কোম্পানীর উৎপাদনকে প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট বা উৎপাদনের ব্যবস্থাপনা বলা হয়। উৎপাদনের জন্য প্রথমেই ভাবতে হবে কাঁচামালের কথা, যা দিয়ে কোম্পানির প্রোডাক্ট তৈরি হবে। সেই মাল ঠিক গুণমানের কেনা এবং ঠিক দামে কেনাটা জরুরি। এসব সামলে জিনিসপত্র তো তৈরি হলো। এবার সেটা বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। ম্যানেজমেন্টের এ দিকটাকে বিপণন পরিচালন বা মার্কেটিং ম্যাজেমেন্ট বলা হয়। তাই সব কোম্পানিই প্রত্যেক শহরে কোনো এক সংস্থাকে তাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য মনোনীত করে। এদের বলা হয় ডিস্ট্রিবিউটর। ডিস্ট্রিবিউটররাও তাদের অঞ্চলের সব দোকানে মাল পৌঁছাতে পারেন না, তাই তারা সাহায্য নেন তাদের চেয়ে ছোট আরও কিছু সংস্থার। এদের বলা হয় হোলসেলার বা স্টকিস্ট। ম্যানেজমেন্টের আরও একটা দিক আছে, তার নাম ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট বা আর্থিক ব্যবস্থাপনা। এর কাজ কিন্তু খালি টাকা-পয়সার হিসাব রাখা নয়, টাকা-পয়সার সদ্ব্যবহার করা। তাই প্রোডাকশন আর মার্কেটিংয়ের মতো ফাইন্যান্সও ম্যানেজমেন্টের এক প্রধান স্তম্ভ।

সবমিলিয়ে যে কোনো ব্যবসার সফলতা নির্ভর করে ম্যানেজমেন্টের ওপর। ম্যানেজমেন্ট হল কোম্পানির শক্তিঘর। বিজ্ঞানের ভাষায় বলতে গেলে মাইটোকন্ড্রিয়া যেমন একটি কোষের শক্তিঘর ঠিক তেমনি দক্ষ ম্যানেজমেন্টের ভূমিকাও তদ্রুপ। এ কারণে নামিদামি কোম্পানিগুলো জোর দিচ্ছে ম্যানেজমেন্টের ওপর।

 

 

সর্বশেষ খবর