মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আপনার সহকর্মী কি খিটখিটে

আপনার সহকর্মী কি খিটখিটে

সহকর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ থাকতে পারেন খিটখিটে মেজাজের। ছোটখাটো বিষয়ে জড়িয়ে পড়েন বাকবিতণ্ডায়। তা থেকে শুরু হয় মনোমালিন্য ও ভুল বোঝাবুঝি।  এরকম উদ্ধত সহকর্মির সঙ্গে কিভাবে মানিয়ে চলবেন তা নিয়ে লিখেছেন-শামছুল হক রাসেল

 

দীপা একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির পাবলিক রিলেশন অফিসার। তার সঙ্গে কাজ করে ফয়সাল। এ কোম্পানিতে দীপা থেকে কয়েক বছরের সিনিয়র ফয়সাল। যেদিন থেকে দীপা এ অফিসে জয়েন করেছে, সেদিন থেকেই লক্ষ্য করছে, অফিসের বেশিরভাগ সহকর্মিই ফয়সালকে এড়িয়ে চলে। যদিও কাজের দিক থেকে খুবই পারফেক্ট সে, তারপরও তার কাছে কোনো কাজের কথা বলতে গেলে ছোটখাটো বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সে সময়টাতে বেশিরভাগ সহকর্মী ফয়সালের পক্ষে কথা বলে। আসলে এখানে আসার পর থেকেই দীপা যখনই ফয়সালের কাছে গেছে, তখনই উদ্ধত ব্যবহার পেয়েছে। কোনো সমস্যার সমাধান দেওয়ার আগেই অর্ধেক কথা শুনেই অকারণেই রাগারাগি করেছে। এমনকি জুনিয়র সহকর্মী এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ব্যবহারে কোনো রকমের পরিবর্তন দেখা যায় না ওর মধ্যে। পাবলিক রিলেশনের মতো ডিপার্টমেন্টে চাকরি করেও সৌজন্যবোধের লেশমাত্র নেই ফয়সালের মধ্যে। উপরন্তু বারবার প্রতিটি কাজেই পাওয়া যায় তার উদ্ধত ব্যবহার। দীপার মতো আমাদেরও কর্মক্ষেত্রে প্রতিদিন এমন অনেকের সঙ্গেই কাজ করতে হয়, যাদের উদ্ধত ব্যবহারের জন্য অকারণে অন্যদের অপমানিত হতে হয়। কিভাবে ওয়ার্ক কোশেন্ট বজায় রেখে সহকর্মীর সঙ্গে কাজ করবেন তা নিয়ে রইল কিছু পরামর্শ-

কী করবেন :  এক জায়গায় যখন কাজ করতেই হবে তখন অকারণে পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট করে কোনো সুবিধা হবে না। যখন জানেনই আপনার সহকর্মী আর দশজনের মতো নয়, সে ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব মানিয়ে চলাই ভালো। 

♦ একসঙ্গে কাজ করলে সব সহকর্মীর মধ্যেই একটা সখ্য গড়ে ওঠে। তবে আপনার সহকর্মি যদি কারও সঙ্গেই মিশতে না চান, তা হলে নিজে থেকে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলার কোনো প্রয়োজনই নেই। কাজের প্রয়োজনে যতটুকু কথা বলা দরকার ততটুকুই বলুন। ♦ যদি মনে হয়, আপনি তার ঔদ্ধত্যের সঙ্গে কোনোভাবেই মানিয়ে নিতে পারছেন না এবং সাধারণ অফিসিয়াল কথা বলতে গেলেও আপনাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হচ্ছে, তাহলে কিছুদিন অন্য কারও মাধ্যমে আপনার প্রয়োজনের কথা ওই সহকর্মিকে জানান। আরও একটি ভালো উপায় আছে। অফিসিয়াল ই-মেইলেরও সাহায্য নিতে পারেন এ বিষয়ে। এমনকি এসএমএস বা ফেসবুকে চ্যাট করে জানাতে পারেন। এতে কাজও হবে আবার সহকর্মীর সঙ্গে সামনাসামনি ইন্টারঅ্যাক্টও করতে হবে না।

আপনার সহকর্মী যদি পদমর্যাদা এবং বয়সে আপনার চেয়ে ছোট হন, তাহলে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন, অফিসের সবার সঙ্গে এ রকম ব্যবহার করলে ক্ষতিটা আসলে তারই হবে। ধীরে ধীরে সবার কাছে সে অকারণে বিরক্তির পাত্র হয়ে উঠবে। তবে একটি কথা মাথায় রাখার চেষ্টা করবেন, এসব কথা কখনো কোনো তৃতীয় ব্যক্তির সামনে তাকে বলবেন না। এতে আপনার সহকর্মী অপমানবোধ করতে পারেন। বিশেষ করে অফিসের পিয়নের সামনে কখনো তার সঙ্গে রাগারাগি করবেন না। এতে ওর জেদ ও ঔদ্ধত্য আরও বেড়ে যেতে পারে এবং হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।  ♦ কিন্তু আপনার সহকর্মী যদি পদমর্যাদা এবং বয়স দুটোতেই আপনার চেয়ে বড় হন, তাহলে তার সঙ্গে সরাসরি এ বিষয়ে কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই। এতে কমপ্লিকেশন আরও বেড়ে যাবে। যদি তার উদ্ধত ব্যবহার একেবারেই সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তাহলে এ বিষয়ে আপনার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করুন। কিন্তু দৃষ্টি আকর্ষণের আগে অবশ্যই তাকে এ বিষয়ে বোঝানোর চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে তার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন।  ♦ অনেক সময় কোনো কোনো মানুষ নানা কারণে নিজের অজান্তেই এমন উদ্ধত ব্যবহার করেন। তাই আগে জানার চেষ্টা করুন আপনার সহকর্মীর এমন কোনো সমস্যা আছে কিনা। অনেক সময় পারিবারিক কারণেও তার মেজাজ খিটখিটে হতে পারে। প্রয়োজনে তার সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিন। যদি এমন কোনো সমস্যা থাকে তাহলে অকারণে তাকে উপেক্ষা না করে  এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করুন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর