শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

জব স্যাটিসফ্যাকশন এবং ...

শামছুল হক রাসেল

জব স্যাটিসফ্যাকশন এবং ...

সোজা ভাষায় বলতে গেলে, আপনি যে কাজ করছেন এবং সেই কাজটি করে যে সন্তুষ্টি পাচ্ছেন, তাকেই বলা হয় জব স্যাটিসফ্যাকশন। সংসারের কাজ করেও তৃপ্তি এবং আনন্দ অবশ্যই পাওয়া যায় কিন্তু জব স্যাটিসফ্যাকশন শব্দবন্ধটা আমরা সাধারণত চাকরিক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু চাকরি মানেই তো ছকে বাঁধা রুটিন। এতে আর আনন্দ কোথায়? আর অফিস মানে তো শুধু কাজটুকু নয়, আরও কত ঝামেলা। সহকর্মীদের সঙ্গে মনোমালিন্য, বসের সঙ্গে ইগো প্রবলেম, ইনক্রিমেন্ট মিস করে যাওয়া— এরকম হাজারও সমস্যা আমাদের কাজের জগেক এতটাই আচ্ছন্ন করে রাখে। ফলে ভালো করে কাজ করার আনন্দটা আমরা সেভাবে উপভোগ করার সুযোগটাই পাই না। কিন্তু যে কাজটা আমাদের দিনের পর দিন করতে হয়, তা থেকে যদি কোনো তৃপ্তি না পাই তাহলে তো সেটা অসহ্য হয়ে উঠবেই। আনন্দসহকারে কাজ করতে ও অফিসের কাজের একঘেয়েমি কাটাতে রইল কিছু পরামর্শ—

সমস্যা খুঁজে বের করুন : প্রথম প্রশ্নটা আপনার নিজেকেই করতে হবে। আপনি কাজ করে আনন্দ পাচ্ছেন না কেন? অফিসের আবহাওয়া ঠিক স্যুট করছে না। বস সব সময় রেগেই আছেন। কাজের চাপ বড্ড বেশি। সহকর্মীরা একেবারে ফ্রেন্ডলি নন। কাজটাই আপনার ভালো লাগছে না। যদি এ ধরনের এক বা একাধিক সমস্যা ভালো কাজের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে একে একে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজুন। পজিটিভ এবং হেল্পফুল মুডে কয়েকদিন অফিস করে দেখুন তো, অন্যের ব্যবহারে কোনো পার্থক্য পান কি না। তাই যে কোনো কাজের চাপ ম্যানেজ করার জন্য একটু অর্গানাইজড হোন।

হতে হবে কৌশলী : অফিসে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের মানুষের সঙ্গে মানিয়ে-গুছিয়ে কাজ করতে হয়। প্রত্যেকেরই নিজস্ব কিছু দুর্বলতা আছে। কেউ নিজের কাজ সম্বন্ধে খুব গর্বিত, কেউ বা অন্যকে কৃতিত্ব দিতে চান না, কেউ হয়তো মহা ফাঁকিবাজ। শুধু দোষ নয়, আপনার সহকর্মীদের নিশ্চয় অনেক গুণও রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই হয়তো কাজের ব্যাপারে খুব অভিজ্ঞ, পরোপকারী বা স্বভাবগতভাবেই দিলদরিয়া এবং উদার মনের মানুষ। এই সুবিধা-অসুবিধাগুলো মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে। চেষ্টা

করুন সহকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে। সহকর্মীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কুৎসা, কাজের মান নিয়ে সমালোচনা, মুখের ওপর দু’কথা শুনিয়ে দেওয়ার প্রবণতা— এ ধরনের ব্যবহার অত্যন্ত ক্ষতিকর। বরং নিন্দা না করে, সহকর্মীদের মন খুলে প্রশংসা করুন।

সবার আগে লক্ষ্য : যে কাজটা দিনের পর দিন করে চলেছেন, তার লক্ষ্যটা আসলে কি? আপনার কাছে যদি কাজটা শুধুই একটা ‘চাকরি’ হয়, তাহলে ভালো বেতনই আপনার একমাত্র লক্ষ্য। যদি কাজকে ক্যারিয়ার হিসেবে ধরে নেন, তাহলে কাজটাকে ভালো করে শিখে, কাজের নতুন পদ্ধতি আয়ত্তে এনে নিজেকে প্রফেশনাল হিসেবে ডেভেলপ করাই আপনার লক্ষ্য। আর যে কাজটা করছেন, সেটা যদি আপনার ভালোবাসার জায়গা অর্থাৎ প্যাশন হয়, তাহলে শুধু কাজ করার আনন্দেই কাজ করে যাবেন। তবে আপনার মূল লক্ষ্য যাই হোক না কেন, সেটা অর্জন করার জন্য যতটা সম্ভব সিনসিয়ারলি কাজ করে যেতে হবে। ছোট ছোট লক্ষ্য পূরণের মাধ্যমে বড় লক্ষ্যে পৌঁছে যাবেন। দিনের শেষে সারাদিন যা যা করেছেন একবার মনে করে দেখুন। কোন কাজটা পারেননি, সেটা নিয়ে কষ্ট না পেয়ে যে কাজে সাফল্য পেয়েছেন সেটা নিয়ে ভাবুন।

কাজের ফাঁকে ছুটি : একটানা কাজ করে যাওয়া মানে শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনকেও ক্লান্ত করে তোলে। আর অবসন্ন শরীর-মন নিয়ে ভালো করে কাজ করা কখনো সম্ভব নয়। কাজের চাপ থাকবেই। তার ফাঁকে ফাঁকে ১-২ মাস অন্তর অন্তত ১ দিন নিজেকে ছুটি দিন।

প্রাধান্য দিন জীবনকে : আপনার শিক্ষা, দক্ষতা, প্রফেশনাল স্কিল ভালো করে যাচাই করে নেওয়ার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে আপনার কাজ। নিজের কাজকে অবশ্যই ভালোবাসবেন কিন্তু কাজকে সম্পূর্ণভাবে নিজের ধ্যানজ্ঞান করে তুললে একটা একঘেয়েমি এসেই যায়।  জীবনের আনন্দ উপভোগ করার জন্য ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্সটা ঠিক রাখা খুবই জরুরি। কাজের

জন্যই জীবন নয়, কাজ জীবনেরই একটি অংশ মাত্র— এটা ভুলে গেলে কাজের বেড়াজালে পড়ে জব স্যাটিসফ্যাকশন পুরোপুরি হারিয়ে ফেলবেন।

সুতরাং আনন্দ নিয়ে কাজে ডুবে থাকুন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর