১৮ এপ্রিল, ২০২২ ২০:৪৫
ফাঁড়িতে নির্যাতন

রায়হান হত্যা মামলায় পাঁচ পুলিশসহ ৬ জনের বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

রায়হান হত্যা মামলায় পাঁচ পুলিশসহ ৬ জনের বিচার শুরু

প্রতীকী ছবি

সিলেটে আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো আলোচিত রায়হান আহমদ হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম। সোমবার পাঁচ পুলিশসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মহানগর নগর দায়রা জজ মো. আবদুর রহিমের আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।

অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য সিলেট কোতোয়ালী থানাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। রায়হান হত্যার পর তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আদালত আগামী ১০ মে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন বলে জানিয়েছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নওশাদ আহমদ।

অভিযুক্তরা হলেন-বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই (বরখাস্ত) আকবর হোসেন ভূঁইয়া, এসআই হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস, হারুনুর রশিদ ও আকবরের বন্ধু কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার আবদুল্লাহ আল নোমান নামে এক যুবক। অভিযোগ গঠনকালে পাঁচ পুলিশ সদস্য আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামি নোমান এখনো পলাতক রয়েছে।

এর আগে গত ১২ এপ্রিল মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ ধার্য ছিল। তবে আসামিদের পক্ষে ডিসচার্জ পিটিশন দাখিল করায় ওইদিন চার্জ গঠন হয়নি। পরে আদালত ১৮ এপ্রিল ডিসচার্জ পিটিশনের শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন মহানগর দায়রা জজ মো. আব্দুর রহিম।

বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এমএ ফজল চৌধুরী জানান, সোমবার সকালে কড়া নিরাপত্তায় সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ এসআই (বরখাস্তকৃত) আকবর হোসেন ভুইয়াসহ ৫ পুলিশ সদস্যকে। দুপুর ১২টার দিকে বিচারক মো. আব্দুর রহিমের আদালতে আসামিদের হাজির করা হয়। এসময় আসামিদের পক্ষে ডিসচার্জ পিটিশনের (খারিজ আবেদন) শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিচারক এসময় পিটিশন নামঞ্জুর করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন এবং সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ১০ মে ধার্য করেন। ওই দিন রায়হানের স্ত্রী মামলার বাদী তাহমিনা বেগমসহ আরও দু-একজন সাক্ষ্য গ্রহণের কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর দিবাগত রাতে সিলেট নগরীর কাস্টঘর থেকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নগরীর আখালিয়া নেহারিপাড়ার যুবক রায়হান আহমদকে নির্যাতন করে পুলিশ। ১১ অক্টোবর সকালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূইয়াসহ পাঁচজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের রায়হান হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়।

২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযােগপত্র আদালতে জমা দেয় মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। অভিযোগপত্রে পাঁচ পুলিশ সদস্য ছাড়া এসআই আকবরের বন্ধু কোম্পানীগঞ্জের সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমানকেও আসামি করা হয়।

এদিকে, ছেলে খুন হওয়ার দীর্ঘ দেড় বছরে বিচারকার্য শুরু না হওয়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন রায়হানের মা সালমা আক্তার। তবে একটু দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত বিচারকার্য শুরু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেনে তিনি। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছেন রায়হানের মা।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর