১৬ নভেম্বর, ২০২২ ২০:১১

সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশের দিন পরিবহন ধর্মঘট

বুকিং দিয়ে রাখা হয়েছে কমিউনিটি সেন্টার, সিট নেই হোটেলেও

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশের দিন পরিবহন ধর্মঘট

ফাইল ছবি

সকল জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আসলো পরিবহন ধর্মঘটের ডাক। আগামী ১৯ নভেম্বর শনিবার বিএনপির সিলেট বিভাগীয় গণসমাবেশের দিন ডাক দেয়া হয়েছে ধর্মঘটের। দুই দফা দাবিতে সিলেট জেলা পরিবহন মালিক সমিতি ওই দিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধর্মঘট আহ্বান করেছেন। 

ধর্মঘটের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও একই সংগঠনের সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জহিরুল কবীর পলাশ। তবে ধর্মঘটের শঙ্কাকে সামনে রেখেই গণসমাবেশের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। 

ইতিমধ্যে দেশের যেসব বিভাগে বিএনপির গণসমাবেশ হয়েছে সেসব স্থানে ডাকা হয়েছে পরিবহন ধর্মঘট। কিন্তু সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট হবে কি-না এ নিয়ে ছিল নানা আলোচনা। গণসমাবেশের আগের দুদিন সিলেটে ‘আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’র ইজতেমার আয়োজন করায় পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে ছিল সংশয়। ধর্মঘট ডাকা হলে ইজতেমায় আসা লোকজন পড়বেন বিপাকে এমনটা নিয়ে চলছিল আলোচনা। এর মধ্যে আজ বুধবার রাতে পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বিএনপির গণসমাবেশের দিন শনিবার পূর্ণদিবস ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। যদিও পরিবহন মালিকরা বলছেন, তাদের এই ধর্মঘট পূর্বনির্ধারিত ছিল। বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই। 

সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল কবীর পলাশ জানান, দুইদফা দাবিতে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে নতুন করে সিএনজি অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন না দেয়া এবং অটোরিকশায় ৩ জনের বেশি যাত্রী পরিবহন না করা ও চালকের আসনের পাশে গ্রিল লাগানো। 

বিএনপির গণসমাবেশের সাথে ধর্মঘটের কোন সম্পর্ক নেই দাবি করে পলাশ বলেন, দাবিগুলো নিয়ে গত ৫ নভেম্বর সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৭ নভেম্বর বিভাগীয় কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়। ওইদিন স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১২ দিন পর অর্থাৎ ১৯ নভেম্বর ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘট পালন করা হবে। তাই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১৯ নভেম্বর পূর্ণ দিবস ধর্মঘট পালন করবেন পরিবহন মালিকরা। 

পলাশ বলেন, বিএনপির সমাবেশের তারিখ ছিল ২০ নভেম্বর। পরবর্তীতে তারা তারিখ পরিবর্তন করেছে ১৯ নভেম্বর। কিন্তু পরিবহন মালিক সমিতি এর আগেই তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তাই বিএনপির সমাবেশের সাথে এই ধর্মঘটের কোন সম্পর্ক নেই।  

এদিকে, পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে খুব বেশি শঙ্কিত নন বিএনপি নেতারা। ধর্মঘট ডাকা হলে করণীয় ঠিক করে রেখেছেন তারা। নেতাকর্মীদের আগের দিন সিলেট শহরে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। শহরে থাকা ও খাওয়ারও ব্যবস্থা করেছেন তারা। 

এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী জানান, গণসমাবেশ ঘিরে সিলেট বিভাগজুড়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। পরিবহন ধর্মঘট এই উচ্ছ্বাসে ভাটা ফেলবে না। দেশের অন্যান্য বিভাগের মতো সিলেটের গণসমাবেশেও নেতাকর্মীরা বিকল্প পন্থায় অংশ নেবেন। আগের দিনই বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মী সিলেট আসবেন। তারা রাতে সমাবেশস্থল আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে থাকবেন। এজন্য বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার পক্ষ থেকে তাবু টানানো হয়েছে। সমাবেশের দিন ভোরে এসব টাবু সরিয়ে ফেলা হবে। 

কাইয়ূম চৌধুরী আরও জানান, সমাবেশের আগে নেতাকর্মীদের সাথে জেলা-মহানগরের নেতারা একসাথে মাঠে রাত্রিযাপন করবেন। তাদের খাওয়ার ব্যবস্থাও সমাবেশস্থলে করা হবে। 

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর