নিত্যপণ্যের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে সকল মামলা থেকে মুক্তির দাবিতে ১৯ নভেম্বর (শনিবার) সিলেট মহানগরের চৌহাট্টা এলাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এ সমাবেশকে ঘিরে গত দুই সপ্তাহ ধরে পুরো বিভাগের বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
কয়েকদিন যাবৎ চলছে আলিয়া মাঠ প্রস্তুত ও মঞ্চ তৈরির কাজ। শুক্রবারের মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
এদিকে, দেশব্যাপী বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে অদৃশ্য নির্দেশনায় পরিবহন সংগঠনগুলো স্থানীয়ভাবে ধর্মঘটের ডাক দিতে দেখা গেছে। ব্যতিক্রম হয়নি সিলেটও। বুধ ও বৃহস্পতিবার এই দুই দিনে বিভাগের চার জেলায়ই বিভিন্ন সময় বেধে দিয়ে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে সমাবেশের একদিন আগে (বৃহস্পতিবার) থেকেই বিভাগের বিভিন্ন এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার রাত এবং শুক্রবার দিনসহ রাতের মধ্যে পুরো সিলেট বিভাগের লক্ষাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আলিয়া মাঠে এসে জড়ো হবেন বলে দলের নেতৃবৃন্দের প্রত্যাশা।বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বিএনপির সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের মঞ্চের দিক ছাড়া বাকি তিন দিকেই শামিয়ানা টানিয়ে জেলা-উপজেলা ও থানাভিত্তিক বড় বড় ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নেতাদের ব্যবস্থাপনায় তৈরি করা হয়েছে এসব ক্যাম্প। সংশ্লিষ্ট এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরা শনিবারের আগে এসে পড়লে নিজ এলকার নেতার ক্যাম্পে রাত্রিযাপন করবেন। ওই নেতার উদ্যোগেই তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন ক্যাম্পে রান্নার আয়োজন করা হয়েছে।
মঞ্চের ডান দিকে বড় একটি ক্যাম্প করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছ। তার জেলার যত নেতাকর্মী আগাম চলে আসবেন তাদের এই ক্যাম্পে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ওই ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়, বাহুবল উপজেলা বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসে পড়েছেন। তারা জি কে গউছের ক্যাম্পে থাকবেন এ দুদিন।
ক্যাম্পের এক পাশে দেখা যায় রান্নার কাজ চলছে। ক্যাম্পে থাকা হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির এক নেতা জানান- জি কে গউছের উদ্যোগে এই ক্যাম্প স্থাপন এবং এখানে সমবেত হওয়া হবিগঞ্জের সকল নেতাকর্মীকে এ দুদিন খাবার খাওয়ানো হবে। হবিগঞ্জের নেতাকর্মী ছাড়াও যারা খাবার খেতে চাইবেন তাদেরও খেতে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত প্রতি বেলা ৫ হাজার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করবেন জি কে গউছ।
হবিগঞ্জের ক্যাম্পে দেখা মিলে আবদুর রউফ নামের ৪০ বছর বয়েসি এক বিএনপি কর্মীর প্রতি। তিনি বাহুবল সদর এলাকার বাসিন্দা। তিনি বলেন, আজ দুপুরে হবিগঞ্জে ধর্মঘট ডাকার ঘোষণা শুনেই সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। প্রয়োজনে হেঁটেই সিলেট চলে আসতাম। এটাই এই স্বৈরশাসকের প্রতি আমাদের মতো সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ।
শুধু হবিগঞ্জের ক্যাম্পই নয়, আলিয়া মাঠ ঘুরে দেখা যায়- মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, সিলেট জেলার কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, বালাগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানের নামে ক্যাম্প করেছেন স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এসব ক্যাম্পে সংশ্লিষ্ট এলাকাসমূহের আগাম আসা বিএনপি নেতাকর্মীরা রাত যাপন করবেন।
গণসমাবেশের দিন সকালেই এসব ক্যাম্প অপসারণ করা হবে বলে জানিয়েছে সিলেট বিএনপি।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত