২২ আগস্ট, ২০২৩ ২০:১৩

ইতালি পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে খুনের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

ইতালি পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে খুনের অভিযোগ

সৈয়দ মশাহিদ আলী

কথা ছিল বৈধ পথে ইতালি পাঠানোর। কিন্তু ইতালি পাঠানোর নাম করে লিবিয়ায় নিয়ে নির্মম নির্যাতন করে সৈয়দ মশাহিদ আলী নামে এক যুবককে খুন করেছে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা। 

এর আগে তাকে জিম্মি করে দফায় দফায় ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ওই চক্র। পরে দাবি করে আরও ১৬ লাখ টাকা। কিন্তু টাকা না পেয়ে নির্যাতন করে মশাহিদকে খুন করা হয়, অভিযোগ তার পরিবারের সদস্যদের।

মঙ্গলবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেছেন মশাহিদের স্ত্রী সানোয়ারা বেগম। 

লিবিয়ায় মারা যাওয়া সৈয়দ মশাহিদ আলী সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের সৈয়দ আশহাদ আলীর ছেলে। 

সানোয়ারা বেগম জানান, তার স্বামী একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। ২০২০ সালে পার্শ্ববর্তী উপজেলা জগন্নাথপুরের পড়ারগাঁও গ্রামের আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য শাহীন আহমদের স্ত্রী আমিনা বেগম তালুকদার আকলিমা তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। আকলিমা তাদেরকে জানান, তার স্বামী লিবিয়ায় থাকেন এবং জনশক্তি রফতানির কাজ করেন। তিনি মশাহিদকে বৈধভাবে লিবিয়া হয়ে ইতালিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন। এ সময় আকলিমার সাথে তার সহযোগী একই গ্রামের রোকন আহমদ, তোতা মিয়া, ছন্দন মিয়া, হারুন মিয়অ ও শাহজাহান আহমদও ছিলেন। পরে তাদের প্রস্তাবে মশাহিদকে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতালিতে পাঠানোর চুক্তি হয়। এরপর তারা মশাহিদের পাসপোর্ট ও প্রথম কিস্তিতে সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেন। 

সংবাদ সম্মেলনে সানোয়ারা বেগম আরও জানান, এরপর ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর তার স্বামীকে প্রথমে দুবাই পাঠানো হয়। দুবাই থেকে লিবিয়ায় পাঠানোর পর নেওয়া হয় আরও ৩ লাখ টাকা। এরপর শুরু হয় মশাহিদের উপর নির্যাতন। তাকে জিম্মি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে এবং খুন করে লাশ সমুদ্রে ফেলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত কয়েক দফায় পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া হয় মোট ২২ লাখ টাকা। এরপর দাবি করা হয় আরও ১৬ লাখ টাকা। গত ২১ জুন মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য শাহীন লিবিয়া থেকে ইমু অ্যাপসের মাধ্যমে ফোন করে জানায় মুক্তিপণ ১৬ লাখ টাকা না দেওয়ায় চক্রের সদস্যরা নির্যাতন করে মশাহিদকে মেরে ফেলেছে। 

সানোয়ারা অভিযোগ করেন, এরপর তিনি শাহীনের স্ত্রী আকলিমা ও সহযোগীদের কাছে তার স্বামীকে জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় হলেও ফেরত চান। কিন্তু তারা উল্টো এ নিয়ে কথা বললে সন্তানসহ তাকে অপহরণ, খুন ও গুমের হুমকি দেয়। এ অবস্থায় তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতা রয়েছেন। এ বিষয়ে দিরাই থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানা পুলিশও মামলা নেয়নি। 

সানোয়ারা বেগম সংবাদ সম্মেলনে তার স্বামীকে জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় ফেরত পেতে এবং মানবপাচারের সাথে জড়িত সকল সদস্যকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

সর্বশেষ খবর