১৩ নভেম্বর, ২০২৩ ২০:৪২

প্রতিদিন সকালে সরগরম হয় সিলেটের ‘বউ বাজার’

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

প্রতিদিন সকালে সরগরম হয় সিলেটের ‘বউ বাজার’

বাজারের নাম ‘বউ বাজার’। তবে এটি কোন বউ বেচা-কেনার হাট নয়। বউরা এখানে বেচা-কেনা করেন। অর্থাৎ নারীরাই এখানে ক্রেতা ও বিক্রেতা। 

সিলেট মহানগরীর মাছিমপুরে গড়ে উঠেছে এমনি একটি বাজরা। কে কখন বাজারটির এই নামকরণ করেছিলেন তা জানেন না এখানকার ব্যাবসায়ীরাও। কিংবা হতে পারে আদৌ কেউ নামকরণ করেননি, বাজারে গৃহবধূদের আনাগোনার কারণে লোকের মুখে মুখে বাজারটি বউ বাজার নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

নারীদের কেন্দ্র করে ও নারীদের নিয়ে এটিই সিলেটের একমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার। প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত চলে এই বাজার। শাক-সবজি, পিয়াজ-রসুন, তেল-ডাল-লবণ থেকে শুরু করে মাছ-মাংস, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্যই পাওয়া যায় এই বাজারে।

স্থানীয়রা জানা, প্রায় ত্রিশ বছর ধরে এই বাজার বসছে। এলাকার পুরুষেররা সকাল সকাল কাজের জন্য বের হয়ে যাওয়ায় সংসারের বাজার করতে বেগ পোহাতে হতো নারীদের। তাই নারীরা তারা বাধ্য হয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিতে বাহিরে বের হতেন। শুরুর দিকে এলাকারই দু’একজন নারী অল্প কিছু পণ্য নিয়ে বসতেন। বিক্রেতা নারী হওয়ায় তাদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করতে আসতেন এলাকার গৃহবধূরা। ক্রমেই বাড়তে থাকে বিক্রেতার সংখ্যা। আশপাশের এলাকার নারীরাও এখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসা শুরু করেন। বাড়তে থাকে ক্রেতার সংখ্যাও। পরে তা রূপ নেয় বউ বাজারে।

বউ বাজারের নারী বিক্রেতারা জানান, স্বামী-সন্তান নিয়ে সচ্ছল ভাবে বেচে থাকতে জীবনের একেকটা বাস্তবতা তাদের একেকজনকে গৃহবধূ থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীতে পরিণত করেছে। প্রতিদিন প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন নারী নিজেদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন এই বাজারে। ঘরের পাশেই সবধরনের পণ্য পেয়ে যাওয়ায় ও বাজারে আগত সকল নারী হওয়ায় ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে এ বাজারে।

বাজারে আসা নারী ক্রেতারা বলেন, এই বাজারে সবধরনের জিনিসপত্র পাওয়া যায়। তাছাড়া অন্যান্য বাজারের মতো পুরুষদের ভিড় না থাকায় স্বাচ্ছন্দে বাজার করা যায়। এছাড়া পণ্যের দাম ও কম এখানে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল নজরুল ইসলাম মুনিম বলেন, বাজারটি সিলেটের মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য রোল মডেল। বাজারটি সম্প্রসারণের চিন্তা রয়েছে। মহিলা উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করতে সিটি করপোরেশন এলাকায় এমন আরো কয়েকটি বাজর তৈরি করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

সর্বশেষ খবর