৩ জুন, ২০২৪ ১২:০৪

ভারি বর্ষণে ডুবছে সিলেট

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

ভারি বর্ষণে ডুবছে সিলেট

সুরমার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তীরবর্তী সিলেট নগরের অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছিল জলাবদ্ধতা। এর মধ্যে গত রবিবার মধ্যরাত থেকে ভারি বর্ষণ শুরু হওয়ায় নগরীর বৃহৎ এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। বৃষ্টির সাথে হু হু করে বাড়তে থাকে ছড়া-খালের পানি। বৃষ্টির পানিতে ডুবতে থাকে বাসা-বাড়ি, দোকানপাঠ ও রাস্তাঘাট। গেল তিনদিন বৃষ্টি না হওয়ায় সিলেটের মানুষের মনে যে স্বস্তি নেমেছিল, গত রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়ায় বৃষ্টিতে তা উড়ে গেছে। 

বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ২০২২ সালের মতো সিলেট নগরীর অর্ধেক এলাকাজুড়ে বন্যার আশঙ্কা করছেন নগরবাসী। বৃষ্টির পানি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও ঢুকেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী, তাদের স্বজন ও চিকিৎসকরা। ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। 

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিপাতে সিলেটের সবকটি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে শুক্রবার থেকে বৃষ্টিপাত বন্ধ হওয়ায় পানি কমতে থাকে। টানা বৃষ্টিতে সিলেট নগরের সুরমা নদীর তীরবর্তী উপশহর, তালতলা, মাছিমপুর, ছড়ারপাড়, শেখঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। গেল তিনদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কিছুটা নামতে শুরু করে। কিন্তু এর মধ্যে গত রবিবার মধ্যরাত থেকে ভারি বর্ষণ শুরু হওয়ায় নগরীর পানি নিষ্কাশনের সবকটি ছড়া-খাল পানিতে টইটম্বুর হয়ে পড়ে। বাড়তে থাকে সুরমা নদীর পানি। ফলে ছড়া-খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে নগরীতে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। 

রাত ১২টা থেকে নগরীর উপশহর, যতরপুর, সোবহানীঘাট, মাছিমপুর, ছড়ারপাড়, মেন্দিবাগ, তেররতন, সাদারপাড়া, কুশিঘাট, তালতলা, তেলিহাওর, জামতলা, জল্লারপাড়, মির্জাজাঙ্গাল, জামতলা, জিন্দাবাজার, দরগাহ মহল্লা, মুন্সিপাড়া, কেওয়াপাড়া, সাগরদিঘীরপাড়, হাওয়াপাড়া, জেলরোড, সওদাগরটুলা, দাঁড়িয়াপাড়া, সোনারপাড়া, শেখঘাট, কলাপাড়া, মজুমদারপাড়া, খাসদবীর, চৌকিদেখি, লালদিঘীরপাড়, আগপাড়া, মেজরটিলা, ইসলামপুরসহ নগরীর দক্ষিণ অংশের বেশিরভাগ এলাকায় পানি ওঠতে থাকে। ঘন্টাখানেকের মধ্যে এসব এলাকার বেশিরভাগ বাসা-বাড়ি ও দোকানপাঠে পানি ওঠে পড়ে। তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট। সকালের মধ্যে কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পানি জমে। ফলে রাতেই ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। 

সিলেট নগরীর তালতলার বাসিন্দা এনামুল কবীর জানান, রাত ১টার দিকে তার বাসায় পানি ওঠতে শুরু করে। ঘন্টাখানেকের মধ্যে বাসার ভেতর হাঁটু পানি জমে। বাধ্য হয়ে রাতেই এক আত্মীয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে ওঠছেন। পানিতে বাসার সকল আসবাবপত্র ভিজে গেছে। 

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানান, মধ্যরাত থেকে ভারি বর্ষণের কারণে নগরীর নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যে কারণে ছড়া-খাল দিয়ে পানি নদীতে যেতে পারছে না। কোন কোন স্থানে উল্টো নদীর পানি ছড়া-খাল দিয়ে নগরে ঢুকছে। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নগরবাসীর দুর্ভোগ বিবেচনায় যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নির্দেশে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর