৭ জুন, ২০২৪ ১০:৪৩

বিশ্বনাথে বৃদ্ধের মৃত্যু নিয়ে রহস্য

সাইফুল ইসলাম বেগ, (বিশ্বনাথ) সিলেট:

বিশ্বনাথে বৃদ্ধের মৃত্যু নিয়ে রহস্য

সিলেটের বিশ্বনাথে নিখোঁজের তিন দিন পর ঝোপঝাড় থেকে লাশ উদ্ধার হওয়া বৃদ্ধের মৃত্যুর কারণ নিয়ে রহস্যের ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা? ঘটনার সাত মাসেও এর সঠিক কারণ জানাতে পারেনি কেউ। এদিকে ময়নাতদন্তে বিষক্রিয়ায় মৃতুর বিষয়টি উঠে আসলেও মিলছে না ঘটনা সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রশ্নের জবাব।

ঘটনার পর প্রশ্ন ওঠে, নিজেই কি বিষ নিয়েছেন তিনি? নাকি পরিকল্পিত ভাবে খাইয়েছে কেউ? লাপাত্তা কোথায় অবস্থান ছিল তিনদিন। নিখোঁজের কারণই বা কি ছিলো? আগের দিন রাতে ফোনে বোনকে জানানো তার আশঙ্কাটাই বা কি? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।  

পরিবারের দাবী, গেল বছরের ৬ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন, উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা কোনাপাড়া গ্রামের মৃত আফরাজ উল্লার ছেলে সিরাজ মিয়া উরফে সিরন (৫৭)। তিনদিন পর ৯ নভেম্বর বেলা আড়াইটায় একই উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের ঝোপ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল তার। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় একটি বিষের বোতলও। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেয় থানা পুলিশ।  

বৃদ্ধের ছোট বোন রুশিয়া ও স্ত্রী পান্না বেগম দাবী করেন, তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে একটি চক্র। তারা দায়ী করেন দৌলতপুর ইউনিয়নের কাজির গাঁও গ্রামের ফারুক মিয়া গংদের। কারণ জানানো হয়, ফারুক মিয়ার অনুরোধে তার মাধ্যমে, একই গ্রামের একজন গৃহপরিচারিকা সিলেট শহরে একটি প্রবাসীর বাসায় কাজে দেয়া হয়েছিল। কিছুদিন পর ফরুক ফোনে জানান, মেয়েটি ওই বাসা থেকে টাকা নিয়ে পালিয়েছে। টাকাসহ মেয়েকে খুঁজে দিতে তাকে চাপ দেন তারা। এক পর্যায়ে তাকে জিম্মি করে রাখা হয়। ঘটনার আগের দিন রাতে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে, পুলিশ নিয়ে ওই এলাকায় গেলেও তাকে উদ্ধার করা যায়নি। এ দিকে ঘটনার কিছুদিন পর এলাকায় ফিরে আসেন ওই গৃহপরিচারিকা।

বাদী পক্ষের অভিযোগ, পুলিশ বিবাদীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যা মামলা না নিয়ে উদ্দেশ্যে প্রণোদিত ভাবে অপমৃত্যু মামলা নিয়েছে। পরে বৃদ্ধের স্ত্রী পান্না বেগম সিলেট আদালতে ফরুকসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে সিআর মামলা (নাম্বার-৪৫৪/২৩ইং) দেন। আদালত এটি আমলে নিয়ে থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন রির্পোট প্রদানের। পরে গেল ৫ জুন ফের সিলেট জিআইজি বরাবরে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে, আসামিদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে তাদের পক্ষাবলম্বনের বিষয় উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করেন বাদী।  

এ বিষয়ে কথা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের এসআই দিপংকর সরকার সকল অভিযোগ অস্বীকার করে ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, ‘ময়নাতদন্তে বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর বিষয়টি জানা গেছে। তবু আমরা একাধিক বিষয় মাথায় রেখে কাজ করছি। আমাদের তদন্ত অব্যাহত আছে। সঠিক তদন্ত শেষে দ্রুত বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতকে অবহিত করা হবে।’

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর