২২ জুন, ২০২৪ ১৫:৩৭

সিলেটে ৩ দিনে খুনসহ ১১ অস্বাভাবিক মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটে ৩ দিনে খুনসহ ১১ অস্বাভাবিক মৃত্যু

সিলেট বিভাগের চার জেলায় ৩ দিনে (বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার) খুনের ঘটনা, পানিতে ডুবে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুসহ ১১ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

সর্বশেষ শুক্রবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে  ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলের ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের সিচনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবকের নাম রুমন মিয়া (৪০)। তিনি সিচনি গ্রামের হুসমত আলীর ছেলে। 

এর আগে শুক্রবার দুপুরে সিলেট নগরীর শাহপরান এলাকায় বন্যার পানিতে গোসল করতে নেমে মৃত্যু হয়েছে এক স্কুল ছাত্রের। জানা যায়, শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে সিলেট মহানগরের শাহপরান থানাধীন ৩১ নং ওয়ার্ডের মুক্তিরচক এলাকায় অভি (১৭) নামের ৮ম শ্রেণির স্কুল ছাত্র বন্যার পানিতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস তার লাশ উদ্ধার করে।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি বগাইয়া হাওরপাড়ে গ্রামের ক্লাবঘরের সামনে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনে জড়িয়ে জুয়েল মিয়া (১৭) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়।

এছাড়া ওইদিন বিকেলে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ঘাস কাটতে গিয়ে রুহুল আমিন (৩৭) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি নৌকা থেকে ঘাস কাটা অবস্থায় পানিতে পড়ে গেলে প্রবল স্রোত তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কৃষককে মৃত ঘোষণা করেন।

একই দিন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের শ্যামেরকোনা গ্রামের পচন মিয়ার ছেলে ছাদি মিয়া (৮) এবং একই গ্রামের জমির মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (১৭) পানিতে খেলতে নেমে সাঁতার না জানার কারণে দু'জনই পানিতে ডুবে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক দু'জনকে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বন্যার পানিতে ডুবে আয়শা বেগম (১২) নামে এক স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত আয়শা ওই গ্রামের মো. সমছ উদ্দিনের মেয়ে। সে স্থানীয় গল্লাসাঙ্গন উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। আয়শা বাড়ির পাশে বন্যার পানি দেখতে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এক পর্যায়ে বন্যার পানিতে ডুবে সে মারা যায়। পরে স্বজনরা তার লাশ উদ্ধার করেন।

এছাড়া বুধবার রাতে গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের কাপনা নদীতে নৌকা ডুবে মারা যান সাখাওয়াত হোসেন (২৬) নামে এক যুবক। রাত ১২টার দিকে ফতেহপুরের বাংলাবাজার থেকে অন্যদের সঙ্গে নৌকায় বাড়ি ফিরছিলেন সাখাওয়াত। ফতেহপুরের লংপুর সড়ক এলাকায় পৌঁছালে নৌকাটি ডুবে যায়। এসময় অন্যরা সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও সাখাওয়াত তলিয়ে যান। প্রায় ৪ ঘণ্টা পর রাত ১২টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে উপজেলার বিছনাকান্দির হাদারপার বাজার সংলগ্ন উপরগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাজমিন আক্তার (১০) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়। অন্য শিশুদের সাথে লুকোচুরি খেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই নাজমিন মারা যায়। সে বিছনাকান্দি ইউনিয়নের উপরঘাম গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার দ্বিতীয় মেয়ে।

তাছাড়া বুধবার বিকাল ৫টার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ঝালোপাড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মিনতি রানী (৪০) নামের এক মহিলার মৃত্যু হয়। মিনতি ঝালোপাড়ার নৃসিংহ জিউর আখড়ার পার্শ্ববর্তী বাসার বাসিন্দা।

ওইদিন বিকালে জকিগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে বন্যার পানিতে মারা যান মৃত আব্দুল হালিম (৫৫) নামের এক পিকআপ চালক। তিনি বারহাল ইউনিয়নের মুহিদপুর গ্রামের রনই মিয়ার ছেলে। আব্দুল হালিম ভেলা নিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। সকাল থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে বেলা ২টার দিকে শাহবাগ মুহিদপুর এলাকায় তার লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর