২২ জুন, ২০২৪ ১৭:৪৫

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি

সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। দুদিন ধরে সিলেটে ও উজানে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় কমছে নদ-নদী এবং প্লাবিত হওয়া এলাকাগুলোর পানি। 

শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মহানগরসহ সিলেট জেলায় প্রায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ বন্যা আক্রান্ত থাকলেও শনিবার দুপুরে এ সংখ্যা নেমেছে সাড়ে ৯ লাখে।

জেলা প্রশাসন সূত্র শনিবার দুপুরে বন্যার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানায়, বর্তমানে সিলেটে ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৫ জন বন্যা কবলিত। এর মধ্যে মহানগরে ৩০ হাজার। বর্তমানে মহানগরের ১৩টি ওয়ার্ড জেলার ১০৭টি ইউনিয়নে বন্যার পানি রয়েছে। তবে ধীরে ধীরে নামছে সে পানি। 

সিলেটে বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্রে আছে ২২ হাজার ৬২৩ জন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে। পৌঁছানো হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধপত্র।

টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে গত ২৭ মে  সিলেটে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে জেলার সব উপজেলার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন। সেই বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই ১৫ জুন ফের কবলিত হয় সিলেট।

ঈদুল আযহার দিন (১৭ জুন) ভোররাত থেকে সিলেটে শুরু হয় ভারি বর্ষণ। সঙ্গে নামে পাহাড়ি ঢল। সকাল হতে না হতেই তলিয়ে যায় মহানগরের অনেক এলাকা। পুরো জেলায় বিস্তৃতি ঘটে বন্যার। সোমবার বিকালে বৃষ্টি থামলে ধীরে ধীরে কিছুটা কমে পানি। কিন্তু মঙ্গলবার ভোররাত থেকে ফের শুরু হয় বৃষ্টি। উজানেও বৃষ্টিপাত হয় প্রচুর। ফলে হু হু করে বাড়তে  সিলেটের সব নদ-নদীর পানি। এ অবস্থা চলমান থাকে পরবর্তী ৩ দিন। একপর্যায়ে সিলেটজুড়ে পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ১০ লাখে। গত দুদিন ধরে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হচ্ছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট কার্যালয় সূত্র শনিবার বিকাল ৩টায় জানিয়েছে, এ সময় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। তবে এ নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে রয়েছে বিপৎসীমার নিচে। একই সময়ে কুশিয়ার নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১০২ ও শেরপুর পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
 
এদিকে, সিলেট আবহাওয়া অফিস বলছে- সিলেটে ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) মাত্র ২ মি.মি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময়ের পর আর কোনো বৃষ্টি হয়নি। তবে আগামী ৩ দিন  সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়গুলোতে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় ডেডিকেটেড অফিসার নিয়োগের পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। 

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর