সোমবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

বেকারত্ব নতুন এক অভিশাপ!

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় সেশনজট অভিশাপের মতো। স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার পর জীবনের নতুন পর্যায় হলো বেকারত্ব। এই বেকারত্বের সময়সীমা অনেকটা দীর্ঘ। দিনের পর দিন গেলেও উচ্চশিক্ষিত অনেকেই বেকার থেকে যাচ্ছে। সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, কাজের বাজারের চাহিদার সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থা সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রতি বছর উচ্চশিক্ষা নিয়ে শ্রমবাজারে আসা শিক্ষার্থীদের প্রায় অর্ধেক বেকার থাকছেন অথবা যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছেন না। কেন এমন হচ্ছে? 'লক্ষ্যহীন উচ্চশিক্ষা, কর্মহীন স্নাতকেরা' শিরোনামে প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টে বলা হয়, স্নাতকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা আর কাজের বাজারের মধ্যে বিশাল ফারাক থাকায় শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। একই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শ্রমবাজার ও শিক্ষা-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সমন্বয় নেই। তাহলে সমন্বয় কীভাবে সম্ভব? মহান জাতীয় সংসদে সর্বশেষ অধিবেশনে যুব প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে দেশে বেকারের সংখ্যা ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার। এর মধ্যে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ১৯ লাখ ৫১ হাজার। এর দায় কার? শিক্ষার্থীদের কী দোষ? শিক্ষার্থী তো সিলেবাস, শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত ফসল। শিক্ষার্থীকে বার বার বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে হয়। আর স্নাতক, স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা একজন শিক্ষার্থীকে কীভাবে কর্মবাজারের অযোগ্য বলা হয়?

রাষ্ট্রের কাঠামোই এমন যে, এখানে কিছু নির্দিষ্টসংখ্যক মানুষই কাজ পাবে। এর বাইরে কারও কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সে সুযোগও দেশে নেই। একদিকে যেমন প্রয়োজনীয় কারিগরি জ্ঞানের অভাব রয়েছে, আরেক দিকে অনেকের কাজের ক্ষেত্রও নেই। এই বেকারের সংখ্যা ১০ থেকে ২০ জন নয়। এত বিশাল বেকারের পাহাড় নিয়ে দেশ কখনো সফলভাবে সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। দিনের পর দিন এত মানুষ বেকার যে, শুধু দুঃখের জাল বুনে দায়িত্ব পালন করা যায় না। যে অমূল্য সম্পদ মেধা অপচয় হচ্ছে, মানুষের জন্য যে সীমাহীন যন্ত্রণার সৃষ্টি হচ্ছে, তা নিয়ে কারও দুশ্চিন্তা আছে বলে মনে হয় না। যার ব্যথা সেই শুধু ভোগে। আমরা খুবই আশাবাদী, বর্তমান সরকার বেকার সমস্যা নিরসনে সুষ্ঠু পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

অমিত বণিক উন্নয়ন কর্মী কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ।

 

 

সর্বশেষ খবর