৩০ মার্চ, ২০২৪ ১৩:১৩

শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ সিএনজি

বিশেষ টোকেন দেখালেই পার

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ সিএনজি

‘আমাকে মালিক বলেছে শহরে যেতে পারবে, কোনো পুলিশ বা কেউ ধরলে সার্জেন্ট স্যারকে কল দিতে বলছে। গ্রাম সিএনজি হলেও পুলিশের গাড়ি বললে ট্রাফিকরা ছেড়ে দেয়। বিনিময়ে প্রতি মাসে সার্জেন্টের সঙ্গে একটা হিসাব আছে।’ এভাবে বলছিলেন শহরে দাপিয়ে বেড়ানো একটি গ্রাম সিএনজির চালক মফিজুর রহমান। চট্টগ্রাম নগরীতে এভাবে পুলিশ, কথিত সাংবাদিক, সার্জেন্ট, টিআই থেকে শুরু করে মানবাধিকার সংস্থার ‘বিশেষ টোকেন’ দেখিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা।

সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ আহম্মদ বলেন, ‘গ্রামের সিএনজি শহরে প্রবেশ অবৈধ। ঈদকে কেন্দ্র করে শহরে মানুষের আনাগোনা বেশি। এ কারণে ট্রাফিক সদস্যরাও ব্যস্ত। হয়তো এ সুযোগে একটি চক্র গ্রাম সিএনজি শহরে চালাচ্ছে। তবে গ্রাম সিএনজি যেন শহরে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে ট্রাফিক সদস্যদের কঠোরভাবে বলা আছে। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সরেজমিন দেখা গেছে, নগরের বাকলিয়া জানে আলম দোভাষ সড়ক ‘চট্টগ্রাম’ নম্বর প্লেটের একটি সিএনজি অটোরিকশা মেট্রো নম্বরের গাড়ির মতো গ্রিল লাগিয়েছে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে শহরে চলাচলের জন্য মূলত গ্রিল লাগানো হয়েছে। গাড়ির পাশে মালিকের নামে লেখা আছে ‘মো. জহির’ ও মোবাইল নম্বর।’ ওই গাড়ির চালকের দাবি, মো. জহির ট্রাফিকের বন্দর জোনের সার্জেন্ট। তবে জহিরুল ইসলাম নামে এ সার্জেন্ট দাবি করেছেন, তার নামে কোনো সিএনজি চলে না।
জানা যায়, নগরীর মুরাদপুর, ওয়াসা, জিইসি এবং নগরীর অন্যতম প্রবেশপথ কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু, অক্সিজেন ও কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় অবাধে চলাচল করছে গ্রামাঞ্চলের জন্য রেজিস্ট্রেশন করা সিএনজি ট্যাক্সি। ট্রাফিক পুলিশের কতিপয় সদস্য ও কথিত সাংবাদিকের টোকেনে নির্বিঘ্নে এসব সিএনজি অবৈধভাবে শহরে চলাচল করছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেশিরভাগই গ্রাম সিএনজিতে মালিকের নাম হিসেবে ট্রাফিক সার্জেন্ট আবদুর রহমান, সার্জেন্ট সাইফুল, সার্জেন্ট আরিফুল, সার্জেন্ট খন্দকার  আমিনুল, জসিম, উকিল আহমেদ, সুজন সাহা, সোহেল রানা, ফারুক, সঞ্জয়, টিআই মোশাররফ হোসেন, কথিত সাংবাদিক ও অখ্যাত পত্রিকার নাম লেখা হয়েছে। শুধু এ নাম ব্যবহারের জন্য সিএনজিচালক ও মালিকরা প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা করে খরচ করেন। চলাচলের স্থানভেদে টাকার অঙ্ক ওঠানামা করে।

চালকরা জানান, ট্রাফিক পুলিশের টিআই, সার্জেন্ট ও সাংবাদিকের নামে চলাচল করে এসব গ্রাম-ট্যাক্সি। বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের র‌্যাম্প পর্যন্ত চলাচল করার জন্য মাসে এক থেকে দেড় হাজার টাকার টোকেন নিতে হয়। আর শহরজুড়ে চলাচলের জন্য ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দিতে হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর