টানা ছুটিতে ঈদ উৎসবে মেতে উঠেছে মানুষ। ঈদ ও পহেলা বৈশাখ প্রায় কাছাকাছি সময়ের কারণে এবার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল বাড়তি প্রস্তুতি। দুই উৎসব ঘিরে চট্টগ্রামের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ছিল দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত। ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে জমতে শুরু করেছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। বিশেষ করে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, ফয়েস লেক, নেভাল, চট্টগ্রাম চিডিয়াখানা এলাকা ছিল লোকে লোকারণ্য। পর্যটকদের পদচারণায় উচ্ছাসিত সংশ্লিষ্টরাও। ঈদ মৌসুম ঘিরে জমজমাট বেচাকেনাও করেছে পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে গড়ে উঠা ভাসমান দোকান, কটেজ, হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টানা ছুটিতে মানুষ যান্ত্রিক কোলাহর ছেড়ে বিনোদন উপভোগ করতে পেরেছে।
ফয়স লেক’র উপ-ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, দ্বিতীয় দিন সকাল নয়টা থেকে পার্ক খোলা থাকায় দর্শনার্থীর ঢল নামে। গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়ার কারনে ওয়াটার রাইড গুলোতে বেশী আগ্রহী ছিলো বেশী। সময় বাড়ার সাথে সাথে ফয়'স লেক এ্যমিউজমেন্ট ওর্য়াল্ডেও সময়ের সাথে আগত দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। অনেকেই নৌ-যোগে লেক ভ্রমনের জন্য পার্কে আসেন। ফয়'স লেক বেইস ক্যাম্পে আগত পর্যটকদের মধ্যে বেশীরভাগই ছিলেন বিদেশী। সর্বোপরি বলা যায় আবহাওয়া ভালো থাকা নির্মল বিনোদনের আয়োজন পর্যাপ্ত নিরাপত্তার কারণে প্রচুর দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে। পহেলা বৈশাখে ছিলো লোকসঙ্গীত ও বাউল গানের আসর, বাচ্চাদের জন্য বায়োস্কোপ শো ছিলো অন্যতম আর্কষনীয় বিষয়। আগত দর্শনার্থীরা মনের আনন্দ নিয়ে বাড়ী ফিরতে পেরেছেন কারন যথেষ্ট নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু বিনোদন উপভোগ করার সুযোগ ছিলো।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার চিকিৎসক ও ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, সকাল থেকে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। গত চারদিনে প্রায় ৬০ হাজারের মতো দর্শনার্থী টিকিট নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছে। শুক্রবার সকাল থেকে ভিড় জমে চিড়িয়াখানায়। দুর্লভ সাদা বাঘ, সিংহ, বানর, হনুমান, জেব্রা ও বিভিন্ন প্রজাতির হরিণসহ অসংখ্য পশুপাখি রয়েছে। এখানে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে আসেন বয়স্করাও। চিড়িয়াখানার পশুপাখির পাশাপাশি পাহাড়ের মাঝখানে থাকা সিঁড়ি এবং শিশুদের রাইডগুলো বেশ উপভোগ করেছে দর্শনার্থীরা।জানা যায়, ঈদের দিন দর্শনার্থী কম থাকলেও দ্বিতীয় শুক্রবার ছিল উপচেপড়া ভিড় ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় প্রায় অর্ধ লাখের বেশি পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত ছিল দ্বিতীয় দিন। নানা বয়সের ভ্রমনপিপাসুরা এসেছেন সাগরের তীরে। সাগরের পানিতে গা ভাসিয়ে কেউ গোসল করছে, আবার কেউ মেতে উঠেছেন স্পিড-বোটে। বন্ধু ও পরিবার নিয়ে সমুদ্র পারে বসে উপভোগ করছেন নিরিবিলি একটি সময়। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে দর্শনার্থীদের অন্যতম আকর্ষণ সূর্যাস্তের দৃশ্য। মনোমুগ্ধকর এ দৃশ্য দেখার জন্য সন্ধ্যাকালীন সময় ছিল মানুষের ভিড়। পাশাপাশি ঈদের দ্বিতীয় দিনে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ফয়স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও ওয়াটার পার্ক সি ওয়ার্ল্ড, কর্ণফুলীর নদীর তলদেশে নির্মিত টানেল, কর্ণফুলী নদীর অভয় মিত্র ঘাট, বহদ্দারহাট স্বাধীনতা পার্ক, আগ্রাবাদ কর্ণফুলী শিশু পার্ক, আগ্রাবাদ জাতি তাত্ত্বিক জাদুঘর, জিয়া স্মৃতি জাদুঘর ও হালিশহর সাগর পাড় ছিল লোকে লোকারণ্য। নগরের পাশাপাশি ভিড় ছিল সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী সাগরপাড়, চন্দ্রনাথ পাহাড়, মীরসরাইয়ে মহামায়া লেক, আনোয়ারায় পারকি সমুদ্র সৈকত, রাউজানে মহামুনি মন্দির, অণিরুদ্ধ বড়ুয়া অনি শিশু পার্ক, বেতাগি কর্ণফুলী নদীর পাড়, রাউজান রাবার বাগান, ফটিকছড়ি চা বাগান ও বাঁশখালীর বাহারচড়া সমুদ্র পাড়ে।
বিডি প্রতিদিন/এএম