৮ মে, ২০২৪ ১৯:৩৩

চট্টগ্রামে তিন উপজেলায় বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রামে তিন উপজেলায় বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শেষ

চট্টগ্রামের মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ উপজেলায় বিচ্ছিন্ন নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। দিনভর নির্বাচন কমিশন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর ভূমিকা দেখা গেছে। তবে ভোটার উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ, ধাক্কাধাক্কিসহ বেশকিছু বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া গেছে। মিরসরাই উপজেলায় জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে ১ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও দুইজন পোলিং অফিসারকে আটক করা হযেছে।

প্রথম ধাপের এই নির্বাচনে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে মিরসরাই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। এই উপজেলায় মোট ভোটার তিন লাখ ৭২ হাজার ২৫৭ জন। পাশর্^বর্তী সীতাকুণ্ড উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন করে এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতা করেছেন। এই উপজেলায় মোট ভোটার তিন লাখ ২৪ হাজার ২৪০ ভোট। সন্দ্বীপ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৫ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে  ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতা করেছেন। এই উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধী না থাকায় ভোটগ্রহণ হয়নি। এই উপজেলায় মোট ভোটার দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৭৬ জন।

সরেজমিনে মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলায় বেশকিছু কেন্দ্র পরিদর্শন করে দেখা গেছে, সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভোট দেয়ার আগ্রহ একেবারেই কম। ভোটার উপস্থিতিও ছিলো খুবই কম। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। বিকেলে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার একটু আগে উত্তর আমবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার মুক্তি রাণী হাওলাদার, পোলিং অফিসার মুন্নী বড়–য়া ও সমীর চন্দ্র দাশকে আটক করা হয়। কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিকহাত আরা বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।

বুধবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর শুরুতে কিছুটা ভোটার উপস্থিতি দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে হালকা বৃষ্টি শুরু হলে ভোটার উপস্থিতি একেবারে কমে যায়। এ সময় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের অলস সময় পার করতে দেখা যায়। করেরহাট কামিনী মজুমদার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আবদুল্লাহ খান জানান, কেন্দ্রের সাড়ে ৩ হাজার ভোটের মধ্যে বেলা ১২টা পর্যন্ত ৪৫০ ভোট কাস্ট হয়।  সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে মঘাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার লিটন চন্দ্র নাথ জানান, সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩৬৫১ ভোটারের মধ্যে মোট ভোট কাস্ট হয় ২৫৫।

এদিকে ১১ নং মঘাদিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কাপপিরিচ প্রতীকের চীপ এজেন্টের উপর হামলার অভিযোগ উঠে। এই ঘটনায় আহত হয় এই কেন্দ্রের প্রধান সমন্বয়ক তোফায়েল উল্যাহ চৌধুরী নাজমুল ও হামিদ উল্যাহ চৌধুরীসহ ৪ জন আহত হয়। ২ টার দিকে সীতাকুণ্ডের পূর্ব সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ২ হাজার ৭৩৪ ভোটের মধ্যে ৪০৩ ভোট কাস্ট হয়। আড়াইটার দিকে সীতাকুণ্ড আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩ হাজার ৯২ ভোটের মধ্যে ৩৫৮ ভোট কাস্ট হয়। সন্দ্বীপ উপজেলায়ও ছিলো একই চিত্র। সকাল ১০ টার দিকে মুছাপুর দক্ষিণ পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৩ হাজার ৭’শ ভোটের মধ্যে ১’ শ  ভোট কাস্ট হয়। একই ইউনিয়নের মুছাপুর পুবপাড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৪ হাজার ৭৩০ ভোটের মধ্যে ১০১৩ ভোট কাস্ট হয়। এই দুই উপজেলায় উল্লেখযোগ্য বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ জানান, তিন উপজেলায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের কঠোর তৎপরতায় সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। সন্দ্বীপে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি কোস্টগার্ডও দায়িত্ব পালন করে।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বলেন, তিন উপজেলায় তিন জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি ৪৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেছেন। যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে সেগুলোর বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/এএম

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর