২৫ জুন, ২০২৪ ১৬:৪০

কালুরঘাট সেতু দিয়ে এক মাস পর চলবে যানবাহন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:

কালুরঘাট সেতু দিয়ে এক মাস পর চলবে যানবাহন

কালুরঘাট সেতু দিয়ে আরও এক মাস পর যানবাহন চলাচল শুরু করবে। সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে কোরবানির ঈদের আগে থেকে পথচারী চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় সেতুটি। কিন্তু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে না দেওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষদের। 

জানা যায়, বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের পরামর্শে ৪৩ কোটি টাকায় সংস্কার করা হচ্ছে কালুরঘাট সেতুটি। সংস্কারের জন্য সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করা হয়। বর্তমানে সেতু সংস্কারের ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ। কার্পেটিংয়ের কাজ এখনও ২৫ শতাংশ বাকি। বাকি কাজ শেষ করতে সময় লাগবে এক মাস। তাছাড়া, সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচল বন্ধে দুইপ্রান্তে বসানো হবে উচ্চতা প্রতিবন্ধক। এ সব কাজ শেষ হলে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। কালুরঘাট সেতু দিয়ে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, পটিয়া ও রাঙ্গুনিয়ার একটি অংশের মানুষ চট্টগ্রাম নগরে আসা-যাওয়া করেন। সেতু দিয়ে অটোরিকশা, টেম্পো, ছোট পিকআপ, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস চলাচল করত। এখন ফেরি দিয়ে পারাপার হয় মানুষ। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ নদী পার হন। সেতু দিয়ে ট্রেনও চলাচল করে।

বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা মনে করেন, এবার বিদ্যমান পাটাতনের ওপর বিশেষ প্রযুক্তির কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে পানি নিস্কাশনের পথ রাখা হয়েছে। এরপর ওই কংক্রিট ঢালাইয়ের ওপর পিচ দিয়ে সড়কপথ নির্মাণ করা হয়। এতে সড়ক ও রেলপথ দুটিই আগের চেয়ে শক্ত অবয়ব পায়। তাই সংস্কারের পর বর্ষা মৌসুম কিংবা কুয়াশাজনিত পানি না জমে কংক্রিট ঢালাইয়ের অভ্যন্তরীণ ড্রেনেজ সিস্টেম দিয়ে নদীতে পড়লে রেল ট্র্যাক, ক্লিপ ও সেতুর ইস্পাতের পাটাতন ক্ষয় হবে না। বিশেষ প্রযুক্তি ও বুয়েটের পরামর্শে নতুন করে বিদ্যমান পাটাতনের ওপর বিশেষ প্রযুক্তির কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে সড়ক ও রেলপথ উভয়ই আগের চেয়ে শক্ত থাকবে। মেয়াদোত্তীর্ণ সেতুটি দীর্ঘ সময় ব্যবহারযোগ্য রাখা যাবে।

কালুরঘাট সেতুর ফোকাল পার্সন প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা বলেন, সেতুর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াকওয়ে। কার্পেটিংয়ের কাজও শেষ। এখন চলছে শেষ সময়ের কাজ। কাজ শেষ হলে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে। এরপরই চূড়ান্তরূপে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এটি চালু হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের যাতায়াত অনেক সহজ হবে।     

জানা যায়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ টিমের তত্ত্বাবধানে সেতুটির সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। গত বছরের ১ আগস্ট থেকে সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হয়। এরপর থেকে সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। প্রথম দফায় গত বছরের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সেতুর সংস্কার কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা শেষ করতে পারেনি। তবে সংস্কারের প্রথম ধাপ শেষ করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে পর্যটন নগর কক্সবাজার রুটে প্রথমবারের মত যাত্রীবাহী কক্সবাজার এক্সপ্রেস এবং পরে পর্যটক এক্সপ্রেস চলাচল শুরু করে। এর আগে গত বছরের ১১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  বর্তমানে কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন, একটি স্পেশাল ট্রেন এবং দোহাজারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেলবাহী ট্রেন চলাচল করছে।   

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর