২৪ জুলাই, ২০২৪ ১৬:০১

১৩ মাসেও হয়নি চট্টগ্রাম যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম:

১৩ মাসেও হয়নি চট্টগ্রাম যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

দীর্ঘ নয় বছরের অচলায়তন ভেঙে ১৩ মাস আগে ‘স্বচ্ছ’ ইমেজের নেতৃত্বকে দিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা ছিলো নগর যুবলীগের রাজনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠবে। কিন্তু নতুন নেতৃত্ব যেনো সেই প্রত্যাশায় গুড়েবালি ঢেলে দিলো। ৪০ সদস্যের ওই কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ করতে বলা হলেও দীর্ঘ ১১ মাসেও হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। তৃণমূলেও নেই সাংগঠনিক তৎপরতা। ফলে হতাশ হয়ে পড়ছেন নেতাকর্মীরা।

জানা গেছে, আহবায়ক কমিটি দিয়ে দীর্ঘ নয় বছর কার্যক্রম চালানোর পর ২০২২ সালের ২৯ মে নগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের এক বছর পর ২০২৩ সালের ১৩ জুন মাহবুবুল হক সুমনকে সভাপতি ও মো. দিদারুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের ৪০ সদস্যের কমিটি ঘোষণা হয়। এরপর পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে ১৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশনা দেয় কেন্দ্র।

তিন বছর মেয়াদী এই কমিটি ইতিমধ্যে এক বছরের বেশি সময় পার করেছে। এই ১৩ মাসে পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রস্তাব কেন্দ্রে দিতে পারেনি কমিটি। এদিকে নগর যুবলীগের আওতাধীন ৪৪ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের মধ্যে কেবল তিনটি ওয়ার্ডের সম্মেলন করেছে বর্তমান কমিটি। ফলে নগর যুবলীগের পদ পেতে কেন্দ্রের কাছে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেয়া ১ হাজার ৪’শ নেতাকর্মীর মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।

পদপ্রত্যাশী ও নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সাংগঠনিক দক্ষতা ও জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকা অনেককে বাদ দিয়ে সুমন-দিদারকে সভাপতি সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়ার পর নেতাকর্মীরা আশার আলো দেখেছিলেন। সে সময় দুজনই ‘স্বচ্ছ’ ইমেজের নেতা হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু তারা দায়িত্ব পাওয়ার পর যেনো নগর যুবলীগ আগের চেয়ে বেশি ঝিমিয়ে গেছে। কিছু রুটিন অনুষ্ঠান আয়োজন ছাড়া সংগঠনের বলার মতো দৃশ্যমান কার্যক্রম নেই। নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারছেনা। তৃণমূলের সম্মেলন নিয়েও উনাদের যেনো অনীহা।

এ ব্যাপারে নগর যুবলীগের পদপ্রত্যাশী চট্টগ্রাম আইন কলেজের সাবেক ভিপি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে না পারা সংগঠনের জন্য নেতিবাচক। কমিটি পূর্ণাঙ্গ হওয়ার আশায় পদপ্রত্যাশীরা দিন গুনছেন। কমিটি পূর্ণাঙ্গ হলে আরো কিছু নেতা তৈরী হতো। সাংগঠনিক কার্যক্রম বিস্তৃত হতো।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক পদপ্রত্যাশী বলেন, ‘সুমন ভাই ও দিদার ভাইকে দায়িত্ব দেয়ার পর সবাই খুশি হয়েছিলো। উনারা অন্যদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছ ইমেজের। কিন্তু কেবল স্বচ্ছ ইমেজ হলে হয় না; নেতৃত্বের গুণাবলী, সংগঠনকে চালানোর সক্ষমতাও খুব দরকার। যেভাবে চলছে এভাবে হলে নগর যুবলীগের রাজনীতি আগের চেয়েও ভঙ্গুর হয়ে যাবে।’

যদিও সংসদ নির্বাচন, মূল দলের কার্যক্রমে সময় দিতে গিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা যায়নি দাবি করে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. দিদারুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর পরই চট্টগ্রাম-১০ আসনে উপনির্বাচন হলো। এরপর নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলোকে মোকাবেলায় আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা কিছুটা পিছিয়ে গেছি। তবে আমরা তো বসে নেই। তিনটি ওয়ার্ডের কমিটি শেষ করেছি। বাকীগুলোর কিছু কিছুতে সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়েও কেন্দ্রের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। শীঘ্রই কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়ে যাবে।’

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর