দেশের পূর্বাঞ্চলের অব্যাহত থাকা বন্যার প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতির পাইপ লাইন খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরে। বন্যার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক কার্যত বন্ধ থাকার কারণে ব্যাঘাত হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনার ডেলিভারি। তবে কন্টেইনার ডেলিভারিতে বাঘ্যাত ঘটলেও স্বাভাবিক রয়েছে বন্দরের কার্যক্রম।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, বন্যার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক নয়। যার কারণে এ কয়েকদিন ধরে কন্টেইনার ডেলিভারি ব্যাহত হচ্ছে। তবে বন্দরের কন্টেইনার ওঠানামা স্বাভাবিক রয়েছে।’
ডিপো মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা)’র রুহুল আমিন সিকদার বলেন, বন্যার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ থাকায় অফডকগুলো থেকে আমদানী-রপ্তানী কন্টেইনার খুব একটা আনা নেয়া হয়নি। এসময় প্রতিদিন দেড় থেকে দুইশ গাড়িতে করে কন্টেইনার আনা-নেয়া হয়েছে। অথচ স্বাভাবিক সময়ে যা থাকে এক হাজার থেকে ১২০০।জানা যায়, দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দর নিয়েই দেশের সিংহভাগ আমদানী-রপ্তানী হয়। বন্দর দিয়ে আমদানী-রপ্তানীর ৯০ শতাংশের বেশি আনা নেয়া হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে। বাকি পণ্য পরিবহণ হয় রেলপথ ও নৌপথে। কিন্তু বন্যার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও রেল চলাচল কার্যত বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছে আমদানী-রপ্তানী। এ সময় বন্দর থেকে কন্টেইনার ভেলিভারি নেমে আসে এক থেকে দেড়শ টিইইউএস-এ। স্বাভাবিক সময়ে যা থাকে তিন থেকে সাড়ে চার হাজার টিইইউএস। সোমবার পর্যন্ত বন্দর ইয়ার্ডে কন্টেইনার জমা রয়েছে ৩৭ হাজার টিইইউএস। বিকডা’র দেয়া তথ্য অনুযায়ী- চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করে পরিচালিত ১৯টি বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোগুলোতে (অফডক) স্বাভাবিক সময়ে রপ্তানির কন্টেইনার থাকে সর্বোচ্চ ৮ হাজার টিইইউএস। আর আমদানি কন্টেইনার থাকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার টিইইউএস। স্বাভাবিক সময়ে কন্টেইনার নেয়ার জন্য গাড়ি প্রবেশ করে ১ হাজার থেকে ১২শ’। কিন্তু বন্যার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড় কার্যত বন্ধ থাকায় গত কয়েকদিনের গড়ে গাড়ি প্রবেশ করেছে একশ থেকে দুইশটি। সোমবার অফডকগুলোতে রপ্তানী পণ্যের কন্টেইনার ছিল সাড়ে ৮ হাজার টিইইউএস, আমদানী পণ্যের কন্টেইনার ছিল ৮ হাজার ৬০০ টিইইউএস। খালী কন্টেইনার ছিল ৪৯ হাজার টিইইউএস।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রপ্তানি হওয়া পণ্যের ৯০ শতাংশ ব্যবস্থাপনা করে চট্টগ্রামের বেসরকারি ডিপোগুলো। রপ্তানীকারকরা কাভার্ড ভ্যানে করে পণ্য এনে ডিপোতে রাখে। সেখানে কাস্টমসের শুল্কায়ন প্রক্রিয়া শেষে রপ্তানীকারকের প্রতিনিধিরা বিদেশী ক্রেতার প্রতিনিধি ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠানের হাতে পণ্য বুঝিয়ে দেয়। ফ্রেইট ফরোয়ার্ডররা রপ্তানী পণ্য কন্টেইনারে বোঝাই করে বন্দর দিয়ে জাহাজে তুলে দেয়। ডিপোগুলোতে রপ্তানী পণ্য ছাড়াও খালি কন্টেইনার সংরক্ষণ করে। আবার ৩৮ ধরণের আমদানী ণ্য বন্দর থেকে ডিপোতে এনে খালাস করে।
বিডি প্রতিদিন/এএম